রহমত নিউজ 13 May, 2025 10:36 AM
বাংলাদেশের ৩ পার্বত্য অঞ্চল, ভারতের মিজোরাম ও মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যকে নিয়ে স্বাধীন জুমল্যান্ড নামে একটি খৃষ্টান রাষ্ট্র বানানোর গভীর ষড়যন্ত্র চলছে বলে মন্তব্য করেছে বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন।
মঙ্গলবার (১৩ মে) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের আমীর মাওলানা হাবিবুল্লাহ মিয়াজী ও মহাসচিব মাওলানা ইউসুফ সাদেক হক্কানী এ মন্তব্য করেন।
এই ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়ে নেতৃদ্বয় বলেন, ইতোমধ্যেই পার্বত্য অঞ্চলের আদিবাসী উপজাতিদেরকে ব্যাপকভাবে খৃষ্টান বানাচ্ছে খৃষ্টান মিশনারি ও বিদেশী এনজিওরা। জাতিসংঘের ২০০৭ ইং এর সনদ অনুযায়ী আদিবাসীরা শায়ত্ত শাসন দাবি করতে পারবে। সরকার তাদের উপর রাষ্ট্রীয় হস্তক্ষেপ করতে পারবে না। পার্বত্য অঞ্চলে যখন খৃষ্টানদের সংখ্যা বেড়ে যাবে তখন গণভোটের মাধ্যমে জাতিসংঘ সে অঞ্চলকে খৃষ্টান রাষ্ট্র ঘোষণা দিবে। এদিকে পাহাড়ী সন্ত্রাসী সংগঠন ইউপিডিএফ এর নেতা মাইকেল চাকমা সংগঠনটিকে রাজনৈতিক দল হিসেবে স্বীকৃতির জন্য সরকারের নিকট আবেদন করেছে। এবং সন্তু লারমার নাতনী পার্বত্য অঞ্চল থেকে সেনা প্রত্যাহার করে শায়ত্তশাসন ঘোষণা দেয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। অপরদিকে ভারতের মিজোরামের মূখ্য মন্ত্রী আমেরিকায় বসে সে অঞ্চলকে খৃষ্টান রাষ্ট্র বানানোর ঘোষণা দিয়েছে। এসব ষড়যন্ত্র একই সূত্রে গাথা। এদিকে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদেরকেও তাদের দেশে প্রত্যার্পনের আশ্বাস দিয়ে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার প্রলোভন দেখিয়ে খৃষ্টান বানানোর পাঁয়তারা করছে মার্কিন সমর্থিত খ্রিস্টান এনজিওগুলো। পশ্চিমাদের পরিকল্পনা ও নীল নকশা বাস্তবায়ন হলে বাংলাদেশ পূর্ব তিমুর ও দক্ষিন সুদানের মত খৃষ্টান রাষ্ট্রে পরিণত করার সময়ের ব্যাপার মাত্র।
মানবিক করিডোরের নামে আমেরিকার পরিকল্পনার ফাঁদে পা দিলে বাংলাদেশ ইউরোপের ইউক্রেন ও লিবিয়ায় পরিণত হবে বলে দাবি করে নেতৃদ্বয় বলেন, জাতিসংঘের সহযোগিতায় মার্কিন ইউরোপিয়ানদের পাতা ফাঁদ বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে ইসলামবিদ্বেষী আরাকান আর্মিদের দিয়ে স্বাধীন আরাকান রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা এবং তাদের প্রতি বাংলাদেশের সমর্থন আদায়ে জোর প্রচেষ্টা চলছে। আরাকানে অস্ত্র সরবরাহ ও আরাকান আর্মিদেরকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মাধ্যমে ট্রেনিং দেয়ার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। হিন্দুত্ববাদী সংগঠন ইসকনের সন্ত্রাসীরা বাংলাদেশকে অখন্ড ভারত বানানোর চক্রান্ত করছে।এই চলমান প্রক্রিয়া বাংলাদেশের সাথে মিয়ানমারের যুদ্ধ বাধানোর এক গভীর ষড়যন্ত্র।
নেতৃদ্বয় আরও বলেন, বাংলাদেশের সেন্টমার্টিনে মার্কিন নৌঘাটি এবং টেকনাফে বিমান ঘাঁটি বানানোর জন্য সেন্ট মার্টিনকে পর্যটক মুক্ত করে জনশূন্য করা হচ্ছে। এবং চট্টগ্রাম বন্দরকে দুবাই ভিত্তিক বন্দর পরিচালনা সংস্থা ডিপি ওয়ার্ল্ড তথা (জিম ইন্ট্রি গ্ৰেডেট শিপিং সার্ভিসেস) এর নিয়ন্ত্রণে দিয়ে দেয়া হয়েছে। ডিপি ওয়ার্ল্ড কোম্পানি ইসরাইলের নিরাপত্তায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বাংলাদেশ আক্রান্ত হলে সমুদ্র বন্দর ও বিমানবন্দর ব্যবহার করে এদেশে মার্কিনী সৈন্য নামানো হবে। চট্টগ্রামের নৌ ঘাঁটিতে মার্কিন যুদ্ধজাহাজ নোঙর করবে, বাংলাদেশকে অস্ত্র কিনতে বাধ্য করা হবে। এভাবেই জাতিসংঘের সহযোগিতায় বাংলাদেশকে ধ্বংস করার পায়তারা করছে আমেরিকা। আর বাংলাদেশের নিজস্ব শক্তিশালী স্যাটেলাইট থাকা সত্ত্বেও এই অঞ্চলকে নিয়ন্ত্রণ ও নজরদারি করার জন্য আরাকান সীমান্তে কক্সবাজারের শীলখালী এলাকায় স্টার লিঙ্ক স্যাটেলাইট স্থাপন করার কাজ করছে আমেরিকা।
অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ্য করে নেতৃদ্বয় বলেন, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা ড. ইউনুস এসকল ষড়যন্ত্র সম্পর্কে কতটুকু জানেন তা জনগণের কাছে পরিষ্কার করতে হবে।
দেশের সার্বভৌমত্ব ও ইসলাম রক্ষায় দেশবিরোধী সকল ষড়যন্ত্র রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়ে নেতৃদ্বয় বলেন, দেশীয় দালালদের সহযোগিতায় বিদেশি যেকোন ষড়যন্ত্রের নীল নকশা কঠোর হস্তে মোকাবেলা করা হবে। আমরা জিহাদ করব, প্রয়োজনে শাহাদাত বরণ করব; তবুও দেশ বিক্রির ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন হতে দিব না।