| |
               

মূল পাতা রাজনীতি খেলাফত আন্দোলন নিজস্ব কর্মসূচি নিয়ে রাজনীতির মাঠে সক্রিয় আছে : মাওলানা হাবিবুল্লাহ মিয়াজী


খেলাফত আন্দোলন নিজস্ব কর্মসূচি নিয়ে রাজনীতির মাঠে সক্রিয় আছে : মাওলানা হাবিবুল্লাহ মিয়াজী


রহমত নিউজ     10 March, 2025     09:17 PM    


বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের মহাসচিব মাওলানা হাবিবুল্লাহ মিয়াজী বলেছেন, খেলাফত আন্দোলন রাজনীতির মাঠে কোণঠাসা হয়ে  আছে এমন বক্তব্য সত্যের অপলাপ বৈ আর কিছুই নয়। বরং নিজস্ব কর্মসূচি নিয়ে রাজনীতির মাঠে যথারীতি সক্রিয় আছে, সবসময় সক্রিয় ছিল এবং ভবিষ্যতেও দেশ, জাতি ও ইসলামের স্বার্থে সবসময় সক্রিয় থাকবে ইনশাআল্লাহ।

সোমবার (১০ মার্চ) গণমাধ্যমে পাঠানো এক এক  বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন। বিবৃতিতে তিনি বলেন, সম্প্রতি একটি জাতীয় দৈনিকে ‘আত্মগোপনে আওয়ামী সুবিধাভোগী আলেমরা’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন ছাপানো হয়েছে যাতে বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন সম্পর্কে বেশকিছু ভুল ও অসত্য তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে। এর মাধ্যমে হাফেজ্জী হুজুর রহ. প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশের অন্যতম প্রাচীন ও প্রভাবশালী রাজনৈতিক দল খেলাফত আন্দোলন সম্পর্কে জনমনে ভুল ধারণা সৃষ্টি হওয়ার সমূহ আশংকা রয়েছে।  

মাওলানা হাবিবুল্লাহ মিয়াজী বলেন, প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন সকল বাতিলের বিরুদ্ধে অগ্রণী ভুমিকা পালন করেছে। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর নতুন করে মাথা চাড়া দিয়ে উঠা  নাস্তিক্যবাদ, কথিত ব্লগারদের ইসলামবিরোধী লেখালেখি, শাহবাগীদের ইসলামবিরোধী তৎপরতার বিরুদ্ধে সর্বপ্রথম মাঠে নেমেছিল খেলাফত আন্দোলন। বিগত স্বৈরশাসনের আমলে তৎকালীন খেলাফত আন্দোলনের আমীরে শরীয়ত ও মহাসচিবকে কারাবরণও করতে হয়েছিল।  দলীয় সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু হয়না এই আওয়াজ খেলাফত আন্দোলন বার বার উঠিয়েছে এবং এ প্রেক্ষিতেই ২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত একতরফা নির্বাচনও আমরা বর্জন করেছি এবং এভাবে অবৈধভাবে ক্ষমতা ধরে রাখার প্রতিবাদ জানিয়েছি। যদিও এখন আপোসহীন বলে নিজেদের পরিচয় দেওয়া দু-একটি দল ঐ নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল। বাংলাদেশকে নিয়ে আন্তর্জাতিক পরাশক্তিগুলোর নোংরা খেলা ও তাদের ষড়যন্ত্রের বাস্তবতাকে সামনে রেখে দলের মজলিশে শূরার পরামর্শক্রমে ২০২৪ এর নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে খেলাফত আন্দোলন।

মাওলানা হাবিবুল্লাহ মিয়াজী বলেন, নির্বাচন পরবর্তী সময়েও সরকারের ট্রান্সজেন্ডার, শিক্ষা সিলেবাসসহ বিভিন্ন বিষয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের গৃহীত দেশ ও ইসলামবিরোধী বিভিন্ন সিদ্ধান্ত ও কার্যক্রমের প্রতিবাদ জানিয়েছে খেলাফত আন্দোলন। সর্বশেষ গত জুলাই মাসে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্রদের দাবি মেনে নেওয়া এবং সংবাদ সম্মেলন করে ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগই একমাত্র সমাধান’ উল্লেখ করে শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করার জোরালো দাবি জানিয়েছিলাম আমরা। এবং এই দাবির পক্ষে রাজপথে মিছিল-মিটিংও হয়েছে খেলাফত আন্দোলন ও এর সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতৃত্বে।

খেলাফত আন্দোলনের মহাসচিব বলেন, আমাদের আমীরে শরীয়ত মাওলানা আতাউল্লাহ হাফেজ্জী শারীরিকভাবে অসুস্থ। দলের নায়েবে আমীর মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী, সাংগঠনিক সম্পাদক সুলতান মহিউদ্দীনসহ দলের কোন নেতাই কোণঠাসা অবস্থায় নেই। বরং কেন্দ্রীয়ভাবে এবং জেলা ও থানাসমূহে প্রায় প্রতিদিনই আয়োজিত কোন না কোন কর্মসূচিতে তারা সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করছেন। অধিকন্তু, ১৩ সালে হেফাজতে ইসলাম মাঠে আসারে পূর্বে ও পরবর্তী সময়ে এবং ২০২১ সালে মোদিবিরোধী আন্দোলন পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন ইস্যূতে সক্রিয় ভূমিকা ও বলিষ্ট বক্তব্য রাখার কারণে মাওলানা হামিদী, সুলতান মহিউদ্দীনসহ খেলাফত নেতৃবৃন্দকে মারাত্মক প্রশাসনিক হয়রানির শিকার হতে হয়েছে। শেখ হাসিনার আজ্ঞাবহ তৎকালীন ডিবি, র‌্যাব তাদেরকে গ্রেফতারের জন্য একাধিকবার তাদের বাসাবাড়ি, গ্রামের বাড়ি ও কর্মস্থলে অভিযান চালিয়েছে। পবিত্র রমজান মাসেও তাদের উপর এসব হয়রানি চলত।

মাওলানা হাবিবুল্লাহ মিয়াজী বলেন, ইসলামবিরোধী তৎপরতার প্রতিবাদে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের গড়ে উঠা আন্দোলনে খেলাফত আন্দোলনের গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে। যেকোন সংগঠন থেকে কাউকে বহিস্কারের বিষয়ে সাধারণত সংগঠনের গঠনতন্ত্র মোতাবেক সুনির্দিষ্ট প্রক্রিয়ায় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হয়। কিন্তু হেফাজতে ইসলাম থেকে খেলাফত আন্দোলনের নেতৃবৃন্দকে বহিস্কারের যে দাবি করা হয়েছে তা একটি আজগুবি দাবি বলেই প্রতীয়মান হচ্ছে। খোদ হেফাজতের আমীর, মহাসচিব, সাংগঠনিক সম্পাদকই যে বহিস্কারের ব্যাপারে কোনকিছু জানেন না সে বিষয়ে প্রশ্ন উঠা স্বাভাবিক যে, হেফাজত কি কোন সিন্ডিকেটের হাতে বন্দী কি না। কবে, কোন বৈঠকে, কে এই বহিস্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে, কোন পত্রিকায় এই বহিস্কারের নোটিশ প্রকাশিত হয়েছে তা প্রকাশের দাবি জানাচ্ছি আমরা। হেফাজতে ইসলামে থাকাবস্থায় নির্বাচন করা যাবে না এরকম কোন ধারা-উপধারা হেফাজতের গঠনতন্ত্রে আছে বলে আমাদের জানা নেই। হেফাজত আমীর, মহাসচিব ও সাংগঠনিক সম্পাদকের সাথে আমি ও আমার দলের নেতৃবৃন্দের কথা হয়েছে। তারা তিনজনই জানিয়েছেন যে, হেফাজতে ইসলাম থেকে আমাদেরকে বহিস্কার করার কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। আমাদের স্পষ্ট বক্তব্য, যতদিন হেফাজতে ইসলাম ইসলামবিরোধী তৎপরতার প্রতিবাদ করে যাবে ততদিন খেলাফত আন্দোলন হেফাজতের সাথে থাকবে। অতীতেও ছিল, বর্তমানেও আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে ইনশাআল্লাহ। কারো শক্তি নেই বিশুদ্ধ আকীদার  অধিকারী ইসলামের পক্ষের শক্তিগুলোকে পরস্পর বিচ্ছিন্ন করার।