রহমত নিউজ 15 December, 2024 09:20 PM
২০২৫ সালের হজ্বের জন্য নিবন্ধনের সময় শেষ হয়েছে রোববার (১৫ ডিসেম্বর)। গত বছরের চেয়ে এবার হজ্বের খরচ এক লাখ টাকার বেশি কমিয়ে এবং দফায় দফায় সময় বৃদ্ধি করেও হজ্বযাত্রীদের সাড়া মেলেনি। এখনও অর্ধেকের বেশি কোটা খালি রয়েছে। সাড়ে তিন মাস সময় পেয়েও সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ্বের প্রাথমিক নিবন্ধন করেছেন মাত্র ৫৫ হাজার ৯২৫ জন হজ্বযাত্রী, যা প্রায় ৪৪ শতাংশ।
রোববার রাত ৮টা পর্যন্ত হজ্ব পোর্টালের তথ্য অনুযায়ী, ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জনের কোটার মধ্যে ৬২ হাজার ২১২ জন হজ্বযাত্রী চূড়ান্ত নিবন্ধন করেছেন। আর হজ্বের যাওয়ার জন্য ব্যাংকে ভাউচার জমা দিয়েছেন প্রায় ৮ হাজার হজ্বযাত্রী। সবমিলিয়ে ৭০ হাজার হজ্বযাত্রী আগামী বছর হজ্ব করার জন্য নিবন্ধন করেছেন। অন্যদিকে সৌদি সরকার বাংলাদেশিদের আগামী বছরের হজ্বের জন্য কোটা দিয়েছে ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮টি। সে হিসেবে এখনও ফাঁকা রয়েছে প্রায় ৫৭ হাজার হজ্ব কোটা।
মোট ৬২ হাজার ২১২ জন হজ্বযাত্রী নিবন্ধিত করেছেন। এর মধ্যে সরকারিভাবে ৪ হাজার ৭৫৯ এবং বেসরকারিভাবে ৫৭ হাজার ৪৫৩ জন নিবন্ধিত হয়েছেন। ব্যাংকে টাকা জমা দিয়েছে প্রায় ৮ হাজার হজযাত্রী। সাধারণ ব্যাংকে টাকা জমা দিলে এক কর্মদিবস প্রয়োজন হয় জমা হতে। সে হিসাবে রোববার যারা টাকা জমা দিয়েছেন তাদের টাকা মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) জমা হবে। কারণ, সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) মহান বিজয় দিবসের জন্য সরকারি ছুটি।
সময় বাড়োনো হবে কি না, জানতে চাইলে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব (হজ্ব অনুবিভাগ) ড. মো. মঞ্জুরুল হক বলেন, চলতি বছর তিন দফায় সময় বাড়ানো হয়েছে। সৌদি সরকারের আল্টিমেটামের কারণে আর সময় বাড়ানো সম্ভব হচ্ছে না।
তিনি বলেন, আগামী ২২ ডিসেম্বরের মধ্যে হজ্বযাত্রীদের টাকা সৌদি সরকারকে না পাঠালে বাংলাদেশিদের জন্য নির্ধারিত ৫নং তাঁবু পাওয়া যাবে না। অন্যান্য দেশ তাঁবু বুকিং দেওয়া শুরু করেছে। এ জন্য যারা নিবন্ধন করেছেন তাদের টাকা সৌদি সরকারকে পাঠানো জরুরি হয়ে গেছে।
খরচ কমানোর পরও হজ্ব নিবন্ধনে কাঙ্ক্ষিত সাড়া না মেলায় উদ্বিগ্ন ধর্ম মন্ত্রণালয়। এমন পরিস্থিতিতে হজ্ব কোটা পূরণ করতে বিমান ভাড়া কমাতে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।
সম্প্রতি ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন আরও ২৭ হাজার ৮২০ টাকা কমিয়ে ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা বিমান ভাড়া নির্ধারণ করতে আধা-সরকারি পত্র (ডিও) দিয়েছেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফকে।
ডিওতে খালিদ হোসেন বলেন, বিমান ভাড়া কমানো হলে বাংলাদেশের হজ্ব কোটা পূরণ সহজ হবে। সৌদি সরকারের কাছে দেশের সম্মান বৃদ্ধি পাবে। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসও বাণিজ্যিকভাবে লাভবান হবে।
গত ৩০ অক্টোবর ২০২৫ সালে হজ্বে যেতে সরকারিভাবে দুটি প্যাকেজ ঘোষণা করে সরকার। ঘোষিত সাশ্রয়ী প্যাকেজ অনুযায়ী খরচ ধরা হয়েছে ৪ লাখ ৭৯ হাজার ২৪২ টাকা। অন্য প্যাকেজে খরচ ধরা হয়েছে ৫ লাখ ৭৫ হাজার ৬৮০ টাকা। এসব প্যাকেজে ২০২৪ সালের চেয়ে বিমান ভাড়া অন্তত ২৭ হাজার টাকা কমানো হয়েছে। তবে সরকারি প্যাকেজে খাবারের টাকা ৪০ হাজার ও কোরবানির জন্য ৭৫০ সৌদি রিয়াল আলাদাভাবে নিতে বলা হয়েছে হজ্বযাত্রীদের। গত বছর খাবারের টাকা প্যাকেজে যুক্ত ছিল। সরকারি প্যাকেজের সঙ্গে সমন্বয় করে বেসরকারি এজেন্সি মালিকরাও একাধিক প্যাকেজ ঘোষণা করেন। পাশাপাশি তারা বিমান ভাড়া কমানোর দাবি জানিয়ে আসছিলেন।
চাঁদ দেখাসাপেক্ষে আগামী বছরের ৫ জুন পবিত্র হজ্ব অনুষ্ঠিত হবে।