| |
               

মূল পাতা জাতীয় হাসিনার পতনের পর বন্ধ হয়েছে অবৈধ বালু ঘাট, খুশি স্থানীয়রা


হাসিনার পতনের পর বন্ধ হয়েছে অবৈধ বালু ঘাট, খুশি স্থানীয়রা


রহমত নিউজ     21 August, 2024     07:36 AM    


বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যায় শেখ হাসিনা। সেই সময় থেকেই বন্ধ রয়েছে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরের বালু ঘাট। এতোদিন বালু ঘাটগুলো আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের দখলে থাকলেও ক্ষমতা হারানোর পর হামলা-মামলার ভয়ে অনেকই গাঁ ঢাকা দিয়েছেন। ফলে বন্ধ রয়েছে ঘাটগুলোর কার্যক্রম। সিরাজগঞ্জ মহাল থেকে নামেমাত্র বালু ক্রয় করে নিয়ে আসলেও প্রভাব আর ক্ষমতার দাপটে বেশির ভাগ বালু অবৈধভাবে যমুনা নদী থেকে উত্তোলন করা হতো৷

এদিকে বিগত বছরগুলোতে বালু ঘাটের দখল নিয়ে প্রায়ই ঘটতো ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, সংঘর্ষে প্রাণহানির ঘটনা। যমুনা নদী থেকে ড্রেজার দিয়ে অবৈধ বালু উত্তোলণের ফলে ভাঙনে বিলীন হতো ঘরবাড়ি ও ফসলি জমি। চোখের সামনে স্থাপনা বিলীন হলেও প্রতিবাদ করার সাহস ছিলোনা ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর। দেড় যুগে সহায় সম্বল হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছে ১০ হাজারেরও বেশি পরিবার। বেশির ভাগ পরিবারের ঠাঁই হয়েছে গোবিন্দাসী-যমুনাসেতু কন্ট্রাক্ট-৭ বাঁধের পাশে। এছাড়া বালুবাহী লাইসেন্সবিহীন ১০ চাকার হাইড্রোলিক ট্রাকে প্রাণ হারিয়েছে অনেকেই। ধুলাবালিতে দুষিত হতো পরিবেশ।নষ্ট হতো গ্রামীণ, আঞ্চলিক ও মহাসড়কগুলো। এতোকিছুর পরও এসব অবৈধ বালুর ঘাট চলছিলো ক্ষমতার দাপটে।

সরজমিনে জানা গেছে, উপজেলার নিকরাইল, গোবিন্দাসী, অর্জুনা ও ফলদা ইউনিয়নে যমুনা নদী ঘিরে ৩০টির মতো অবৈধ বালুর ঘাট গড়ে উঠেছে। সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে এসব ঘাট থেকে শত শত ট্রাকযোগে বালু দেশের বিভিন্ন প্রান্তে যায়। ঘাটগুলোতে যেতে যাতায়াতের রাস্তা তৈরি হয়েছে সেতু কর্তৃপক্ষের পুকুর ভরাট করে।

যদিও এর জন্য মোটা অঙ্কের টাকা দিতে হয়েছে সেতু কর্তৃপক্ষকে। বালুর ট্রাক যমুনা সেতু-ভূঞাপুর সড়কে চলাচল করায় সবসময় যানজট লেগে থাকতো। এতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হতো যাত্রী ও চালকদের। ধুলায় গাছপালা নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি স্থানীয়রা ঠান্ডাজনিত রোগসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হতো। এছাড়া বালুবাহী ট্রাক চলাচল করায় সড়ক, মহাসড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি নম্বরবিহীন হাইড্রোলিক ট্রাকের চালকরা বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানোয় প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে অনেক।

এ দিকে অবৈধ এসব বালুর ঘাট দখলে নিতে প্রভাবশালী ও জনপ্রতিনিধিরা প্রায়ই সংঘর্ষে লিপ্ত হতো। ২০১২ সালের বালু মহালের আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে যমুনা নদীতে প্রতিপক্ষের হামলায় সিরাজগঞ্জ জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন ও তার শ্যালক শাকিল আহমেদ টিক্কা নিহত হন। এরপর বিভিন্ন সময়ে বালুর ঘাট এলাকা থেকে দুজনের লাশ উদ্ধার করা হয়। এছাড়া বালু ঘাটকে কেন্দ্র করে এলাকায় অবৈধ অস্ত্রের মহড়া ও মাদকের বিস্তার ঘটে।

একটি সূত্র জানায়, ২০০১ সাল থেকে কোনো বালুর ঘাট ইজারা দেওয়া হয়নি। সরকারি কোটি কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে এতোদিন অবৈধভাবে ঘাট স্থাপন করে বালু বিক্রি আসছিলো ক্ষমতাসীনরা।

স্থানীয়রা জানান, যমুনা নদী থেকে অবৈধ বালু উত্তোলনের ফলে ব্যাপক ভাঙন দেখা দেয়। প্রতিবাদ করতে গেলেই নানা ধরনের হুমকি ধামকি দেয়া হতো। রাস্তা দিয়ে চলাচল করা দুঃসাধ্য হয়ে উঠেছিল। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে অবৈধ বালু উত্তোলন ও বিক্রি বন্ধ রয়েছে। নতুন সরকারের কাছে তাদের দাবি যাতে করে অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ থাকে।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মামুনুর রশীদ বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সকল বিষয় মনিটরিং করা হচ্ছে।’

- আরটিভি অনলাইন