মূল পাতা আন্তর্জাতিক বাংলাদেশ নিয়ে সর্বদলীয় বৈঠকে বসল ভারত সরকার
আন্তর্জাতিক ডেস্ক 06 August, 2024 12:19 PM
ছাত্র-জনতার ব্যাপক আন্দোলনের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়িয়ে শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পর বাংলাদেশে পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার জন্য সর্বদলীয় বৈঠকে বসেছিল ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার।
মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) সকালে ভারতীয় পার্লামেন্টে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে নেতৃত্ব দেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। এসময় বাংলাদেশের পরিস্থিতি এবং ভারত সরকারের নেওয়া পদক্ষেপগুলোর বিষয়ে উপস্থিত নেতাদের ব্রিফ করেন তিনি।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদন অনুযায়ী, জয়শঙ্কর ছাড়াও সর্বদলীয় এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং এবং সংসদীয় বিষয়ক মন্ত্রী কিরেন রিজিজু।
প্রসঙ্গত, ছাত্র-জনতার চূড়ান্ত আন্দোলনের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে দেশত্যাগ করেন শেখ হাসিনা। সোমবার দুপুর আড়াইটায় বঙ্গভবন থেকে একটি সামরিক হেলিকপ্টার শেখ হাসিনাকে নিয়ে ভারতের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। এ সময় তার সঙ্গে তার ছোট বোন শেখ রেহানা ছিলেন।
সূত্রমতে, ভারতের পশ্চিমবঙ্গ হয়ে রাজধানী নয়াদিল্লিতে অবতরণ করেন শেখ হাসিনা। ইন্ডিয়া টুডে জানায়, নয়াদিল্লির গাজিয়াবাদে সেনাবাহিনীর হিন্ডন এয়ারবাসে স্থানীয় সময় বিকেল ৫টা ৩৬ মিনিটে অবতরণ করেন তিনি। পরবর্তীতে সন্ধ্যায় ভারতের মুখ্য নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল গিয়ে সাক্ষাৎ করেন শেখ হাসিনার সঙ্গে।
তবে তিনি ভারতের ঠিক কোন জায়গায় অবস্থান করছেন অথবা তিনি সেখানে থাকবেন না তৃতীয় কোনো দেশে যাবেন, তা এখনো স্পষ্ট নয়।
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে রয়েছে ৪ হাজার ৯৬ কিলোমিটার সীমান্ত। সোমবার সীমান্তে সতর্কতা জারি করেছে ভারত। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ট্রেন চলাচলও বন্ধ রয়েছে।
আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা টানা চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন এ বছরের ১১ জানুয়ারি। এর আগে ১৯৯৬ সালে সপ্তম জাতীয় সংসদে নির্বাচনের মাধ্যমে তিনি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এর আগে ২০০১ সালের নির্বাচনে ভোটে বিএনপি জয়ী হলে আওয়ামী লীগ বিরোধী দলে যায়। তখন সংসদে বিরোধীদলীয় নেত্রী হন শেখ হাসিনা।
এরপর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে জয়ী হয়ে প্রধানমন্ত্রী হন শেখ হাসিনা। পাঁচ বছর পর ২০১৪ সালে একতরফা নির্বাচন করেন। তাতে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বীতায় ১৫৩ জন সংসদ সদস্য হন। ওই নির্বাচনে (দশম সংসদ) বিরোধী দলগুলো অংশ নেয়নি; শেখ হাসিনা ও তাঁর জোটসঙ্গীরা মিলে সরকার গঠন করেন। ২০১৮ সালে বিতর্কিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে তিনি আবার প্রধানমন্ত্রী হন। আগের রাতে ব্যালটে সিল মারার ব্যাপক অভিযোগের কারণে ওই নির্বাচন ‘রাতের ভোট’ নামে পরিচিতি পায়। আর চলতি বছরের জানুয়ারিতে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিরোধী দলগুলো অংশ নেয়নি। নিজ দলীয় নেতাদের স্বতন্ত্র প্রার্থী করে ‘ডামি’ প্রতিদ্বন্দ্বিতার মধ্য দিয়ে তিনি আবার প্রধানমন্ত্রী হন। এ নির্বাচনকে বিরোধীরা ‘ডামি নির্বাচন’ আখ্যা দেন। এর সাত মাসের মধ্যে ছাত্র আন্দোলন ও গণবিক্ষোভের মুখে পদত্যাগ করে হেলিকপ্টারযোগে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা।