মফস্বল ডেস্ক 02 August, 2024 08:14 AM
বিয়ের পিঁড়িতে বসতে যাচ্ছেন পুলিশ সদস্য রাসেল মাহমুদ (২৫)। ইতোমধ্যে বিয়ের সকল আয়োজন শেষ। এ খবর পেয়ে বরযাত্রার আগ মুহূর্তে রাসেলের বাড়িতে হাজির হন তার প্রেমিকা। এ সময় বাড়ির পেছন দিয়ে পালিয়ে যান রাসেল, পণ্ড হয়ে যায় বিয়ের আয়োজন।
বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) বেলা ১০টার দিকে জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার ঝাউগড়া ইউনিয়নের মানকি নয়াপাড়া এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটে। প্রেমিকা সুইটি আক্তার এখনও ওই বাড়িতেই অবস্থান করছেন।
প্রেমিক পুলিশ সদস্য রাসেল ওই এলাকার আমির হামজার ছেলে। তিনি বর্তমানে নেত্রকোনা জেলার পুলিশ লাইন্সে রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। প্রেমিকা সুইটি আক্তারের বাড়ি একই জেলার মাদারগঞ্জ উপজেলার গুনারীতলা ইউনিয়নের জাঙ্গালিয়া এলাকায়।
স্থানীয়রা জানান, মেলান্দহ উপজেলার মাহমুর এলাকায় বিয়ে ঠিক হয় পুলিশ সদস্য রাসেলের। গতকাল গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছে। এ খবর পেয়ে আজ সকালে প্রেমিক রাসলের বাড়িতে প্রেমিকা সুইটি আক্তার চলে আসেন। বাড়ির সামনের রাস্তায় প্রেমিকা সুইটি আক্তার ও প্রেমিক পুলিশ সদস্যের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। প্রেমিক রাসেল যেদিকে যায় প্রেমিকাও সেদিকে যায়। প্রেমিকা বারবার বলছেন আমাকে বিয়ে না করলে আমি এখানেই আত্মহত্যা করব। একপর্যায়ে রাসেলের বাড়ির ভেতরে ঢুকেন তারা। এ সময় প্রেমিক পুলিশ কৌশলে বাড়ির পেছন দিয়ে পালিয়ে যান। পরে পুলিশ সদস্যের পরিবারের লোকজন প্রেমিকা সুইটি আক্তারকে তাদের বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার চেষ্টা করেন। এক পর্যায়ে বাড়ি থেকে বের করে দিতে ব্যর্থ হন। পরে বিষয়টি জানাজানি হয়।
জানা যায়, কয়েকদিন আগে গোপনে পুলিশ সদস্য রাসেল মাহমুদের বিয়ে ঠিক হয়। বিয়েতে ৮ লাখ টাকা যৌতুকও দেওয়ার কথা হয়। এরমধ্যে যৌতুকের কিছু টাকা ছেলের পরিবারকে দেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) বরযাত্রা নিয়ে যাওয়ার কথা। সেই মূহূর্তে প্রেমিকের বাড়িতে হাজির হন প্রেমিকা সুইটি আক্তার। এতেই বিয়ের সকল আয়োজন মুহূর্তেই পণ্ড হয়ে যায়।
সুইটি আক্তার বলেন, প্রায় দেড় বছর আগে বিয়ের জন্য পারিবারিকভাবে আমাকে দেখত বাড়িতে যায় রাসেল। ওই সময় মোবাইল নাম্বার নেন তিনি। তার কিছুদিন পরে মোবাইল ফোনে আমাদের যোগাযোগ হয়। এক পর্যায়ে আমাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এরপর থেকে আমাদের সম্পর্ক চলছিল। সম্পর্ক চলাকালীন জামালপুর শহরে বেশ কয়েকবার দেখা হয়েছে। আমাদের বাড়িতে গিয়েছিল। আমার পরিবারের সবার সাথেই পরিচিত। আমিও তাদের পরিবারের সবার সাথেই মোবাইলে অনেকবার কথা বলেছি। বিয়ে করার আশ্বাস দিয়ে দেখা করেছে বারবার। রাসেল কাল আমাকে রাতে ফোন দিয়ে বিয়ে ঠিক হইছে বলে জানান এবং আমাকে বাড়িতে আসতে বলেন। বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) বাড়িতে আসলে রাসেল পালিয়ে যায়। এ অবস্থায় আমার তো আর বাড়িতে ফিরে যাওয়ার কোন উপায় নেই। আমাকে এখানেই থাকতে হবে। আমাকে বিয়ে না করলে আত্মহত্যা করা ছাড়া আমার কোনো উপায় নেই।'
এ বিষয়ে ছেলের বাবা আমির হামজা বলেন, জোর করেই আমাদের বাড়িতে উঠেছে। তার সাথে আমার ছেলের কোনো প্রেমের সম্পর্ক নাই।
মেলান্দহ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মদন সিংহ বলেন, আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। মেয়ে এবং ছেলের পরিবারের সাথে কথা বলেছি। ছেলের পরিবার অস্বীকৃতি জানিয়েছে। মেয়েকে আইনি সহায়তার জন্য থানায় যেতে বলা হয়েছে।