রহমত নিউজ 13 March, 2024 08:11 PM
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থীদের আয়োজনে রমজানের আলোচনা সভায় হামলা করেছে বহিরাগত ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এতে আইন বিভাগের তিন শিক্ষার্থীসহ আহত হয়েছেন সাত শিক্ষার্থী। বুধবার (১৩ মার্চ) দুপুরে রোজার ফজিলত ও তাৎপর্য সম্পর্কে আলোচনা করতে শিক্ষার্থীরা বঙ্গবন্ধু টাওয়ারের মসজিদে জড়ো হলে তাদের ওপর হামলা করা হয়।
আহত শিক্ষার্থীরা হলেন- ঢাবির আইন বিভাগের ২০২০-২১ সেশনের শিক্ষার্থী সাফওয়ান, রেজওয়ান রিফাত, শাহীন, সাকিব তূর্য, মাহাদী, কুতুবউদ্দিন। এ সময় তাদেরকে বেধড়ক মারধর করা হয়। তাদের মধ্যে গুরুতর আহত হয়েছেন শাহীন, রেজওয়ান ও সাকিব। আহত অবস্থায় সবাইকে ঢাকা মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
অন্যদিকে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা ২১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আসাদুজ্জামান আসাদের ডান হাত বলে পরিচিত শাহবাগ থানা ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক মো. তাওহীদুল ইসলাম ওরফে সুজন এ হামলার নেতৃত্ব দিয়েছেন। সুজন স্থানীয়ভাবে 'টোকাই নেতা' বলে পরিচিত। এ ছাড়াও রাজনীতিতে তিনি ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক সজল কুন্ডুর অনুসারী বলে পরিচিত।
প্রত্যক্ষদর্শী টাওয়ারের কর্মচারী ও ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আইন বিভাগের বিভিন্ন বর্ষের ১৫-২০ জন শিক্ষার্থী জোহরের নামাজ পড়তে বঙ্গবন্ধু টাওয়ারে আসেন। এ সময় তারা নামাজ শেষে রমজানের গুরুত্ব, তাৎপর্য ও মাসলা মাসায়েল সম্পর্কে আলোচনা করতে চাইলে বাধা দেন বঙ্গবন্ধু টাওয়ার কর্মচারী সমিতির সভাপতি সিরাজুল হক। এ সময় তিনি বলেন, এখানে আলোচনা করা উপাচার্য ও প্রক্টর থেকে নিষেধ রয়েছে। কেন্দ্রীয় মসজিদ ছাড়া কোথাও রমজানের আলোচনা করা যাবে না বলে জানান। এ সময় সেখানে উপস্থিত শাহবাগ থানা ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক তাওহীদুল ইসলাম সুজন এসে তাদের মসজিদ থেকে বের হতে বলেন৷
তার কথা মতো শিক্ষার্থীরা মসজিদ থেকে বের হয়ে সেন্ট্রাল মসজিদের যাওয়ার পথে তাওহীদুল ইসলাম সুজন ও তার অনুসারীরা তাদের ওপর হামলা করে। তাদেরকে রাস্তায় ফেলে বেধড়ক মারধর করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
ভুক্তভোগী আইন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শামীম শহীদী বলেন, তাবলীগের বন্ধু ও বড় ভাইয়েরা রোজার আমল ও ফজিলত সম্পর্কে আলোচনা করতে বঙ্গবন্ধু টাওয়ারের মসজিদে যাই। আমরা আগেই এটা প্রচার করেছি, রোজার ফজিলত, মাসলা মাসায়েল নিয়ে আলোচনা করবো। কিন্তু হঠাৎ অপরিচিত কয়েকজন মসজিদে এসে আমাদের বের হতে বলে। এ ছাড়াও টাওয়ারের কর্মচারীরাও আমাদের চলে যেতে বললে আমরা বের হই। এ সময় আমরা গেটের কাছাকাছি আসতেই ৩০/৪০ জন আমাদের ওপর হামলা করে। পরে আমরা জানতে পারি তারা ছাত্রলীগের নেতাকর্মী ছিল। তাবলীগের ওপর ছাত্রলীগ হামলা করবে আমরা ভাবতে পারিনি।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত তাওহীদুল ইসলাম সুজন বলেন, ঘটনা একেবারে বানোয়াট ও মিথ্যা। আমার একটা ছবি দিয়ে আমার বিরুদ্ধে প্রচারণা চালানো হচ্ছে। আমি অসুস্থ, আমার দাঁতে ব্যথা। আমি তাদের মারতে যাবো কেন? তাছাড়া তখন আমি ক্যাম্পাসের বাইরে ছিলাম। তবে তাকে ভিডিও ফুটেজেও দেখা গেছে।
হামলায় বঙ্গবন্ধু টাওয়ার কল্যান সমিতির সভাপতি সিরাজুল হকের বিরুদ্ধে সহযোগিতা করার অভিযোগ উঠেছে । তবে হামলার বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না বলে জানিয়েছেন।