| |
               

মূল পাতা জাতীয় গণমাধ্যম ‘সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অনেক আইন আছে, সুরক্ষায় কোনো আইন হয়নি’


‘সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অনেক আইন আছে, সুরক্ষায় কোনো আইন হয়নি’


রহমত নিউজ ডেস্ক     27 September, 2023     12:11 PM    


দেশের সংবিধানে মতপ্রকাশ ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা দেয়া হলেও অনেক আইন আছে, যা সাংবাদিকের কণ্ঠ রোধে ব্যবহৃত হয়। সাংবাদিকের বিরুদ্ধে অনেক আইন থাকলেও তাঁদের সুরক্ষায় কোনো আইন হয়নি।

মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর কাজী নজরুল ইসলাম অ্যাভিনিউয়ে দ্য ডেইলি স্টার ভবনে ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড রিসোর্সেস ডেভেলপমেন্ট ইনিশিয়েটিভ (এমআরডিআই) ও এশিয়া ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে তিনটি গবেষণার ফলাফল প্রকাশের জন্য আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন। সুইডেনভিত্তিক প্রতিষ্ঠান নিরাসের পরিচালনায় ইন্টারন্যাশনাল ট্রেনিং প্রোগ্রাম (আইটিপি) কার্যক্রমে অংশগ্রহণকারী বাংলাদেশের তিনটি গবেষক দল গবেষণা তিনটি করে। এতে সহযোগিতা করেছে সুইডিশ ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট কো-অপারেশন এজেন্সি (সিডা)।

গণমাধ্যমসংশ্লিষ্ট বিদ্যমান আইন, নীতি, বিধিবিধান বিশ্লেষণ; বাংলাদেশের গণমাধ্যমে টেকসই সাংবাদিকতার ধারণা, চর্চা ও গণমাধ্যমের আর্থিক সক্ষমতা অর্জনে টেকসই সাংবাদিকতার ভূমিকা এবং ডিজিটাল সংবাদমাধ্যমে স্ব–ব্যবস্থাপনা পরিস্থিতি নিয়ে গবেষণা তিনটি হয়েছে।

সমষ্টি নামের বেসরকারি সংস্থার পরিচালক মীর মাসরুর জামান সংবাদমাধ্যমের স্বব্যস্থাপনা নীতি নিয়ে তাঁদের গবেষণার ফলাফল তুলে ধরেন। তিনি বলেন, গণমাধ্যম আইনি কাঠামোর চেয়ে ক্ষমতা ও সম্পর্ক দ্বারা বেশি প্রভাবিত। তিনিই বলেন যে বাংলাদেশে এখনো অনেক আইন আছে, যা সাংবাদিকদের কণ্ঠ রোধ করতে ব্যবহার করা হয়। সাংবাদিকদের সুরক্ষায় কোনো আইন নেই এবং তাঁরা যেকোনো সময় ভুক্তভোগী হতে পারেন। রহিত করার ঘোষণা দেওয়া ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সাংবাদিকদের মধ্যে ভয়ের পরিবেশ তৈরি করেছিল।

টেকসই সাংবাদিকতা–সম্পর্কিত গবেষণার ফলাফল তুলে ধরে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক রেজওয়ান উল আলম বলেন, দেশে সাংবাদিকেরা হাত-পা বাঁধা অবস্থায় কাজ করছেন। এখানকার টেকসই সাংবাদিকতার ধারণা আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন নয়। রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে সাংবাদিকতায় পেশাদারত্ব বজায় রাখতে হবে।

ডিজিটাল সংবাদমাধ্যমে স্ব–ব্যবস্থাপনা পরিস্থিতি–সংক্রান্ত গবেষণার ফলাফল তুলে ধরে ঢাকা ট্রিবিউনের নির্বাহী সম্পাদক রিয়াজ আহমেদ বলেন, বেশির ভাগ সংবাদমাধ্যম প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব নীতিমালা নেই। পাঠকেরা কী চান, তা জানার ব্যবস্থাও নেই। তথ্য যাচাইয়ের জন্য ৭০ শতাংশেরই কোনো প্রশিক্ষণ নেই।

অনুষ্ঠানে আলোচকদের একজন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সাবেক সভাপতি মনজুরুল আহসান বুলবুল বলেন, সাইবার নিরাপত্তা আইন নিয়ে ৫০০টির মতো মতামত জমা পড়েছিল। কিন্তু এর মধ্যে সাংবাদিকদের মতামতের সংখ্যা খুব কম। এই যে আইন হয়, তা নিয়ে সাংবাদিকদের চিন্তা আছে কি? তথ্য অধিকার আইন নিয়েও এমআরডিআইয়ের মতো সংগঠন কাজ করেছে, সাংবাদিকদের সংগঠন নয়। অনেকে এখনো নিয়োগপত্র পান না, বেতন-ভাতাও ঠিকমতো পান না। আইন ছাড়া এতগুলো ইলেকট্রনিক মিডিয়া চলছে।

অনুষ্ঠানে আরেক আলোচক প্রথম আলোর হেড অব অনলাইন শওকত হোসেন বলেন, যাঁরা সাংবাদিকতা করতে চান, তাঁদের যেন বাধা না দেওয়া হয়, কাউকে যাতে নিজেদের ওপর স্বনিয়ন্ত্রণ আরোপ করতে বাধ্য হতে না হয়। অনেককে স্বনিয়ন্ত্রণে বাধ্য করা হচ্ছে নানা উপায়ে। ভবিষ্যতে সাংবাদিকতায় টিকতে হলে প্রয়োজন স্বব্যবস্থপনা নীতি, সুসাংবাদিকতা, অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা ও ভালো লেখা।

এমআরডিআইয়ের নির্বাহী পরিচালক হাসিবুর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের প্রধান বার্তা সম্পাদক আশিস সৈকত, সাংবাদিক মানস ঘোষ, গৌতম মণ্ডল, সাইফুল আলম, মবিনুল ইসলাম, এশিয়া ফাউন্ডেশনের পরিচালক আইনি ইসলাম প্রমুখ।