মূল পাতা শিক্ষাঙ্গন র্যাঙ্কিংয়ে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অনেক পিছিয়ে আছে : শিক্ষামন্ত্রী
রহমত নিউজ ডেস্ক 13 May, 2023 09:42 PM
অভিজ্ঞতা ও উন্নত গবেষণার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে বিশ্বমান অর্জন করে বিশ্বদরবারে অবস্থান করে নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, র্যাঙ্কিংয়ে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অনেক পিছিয়ে আছে, এটা সত্য যে র্যাঙ্কিংয়ে আমরা অনেক পিছিয়ে আছি। র্যাঙ্কিংয়ে ওপরে থাকার জন্য যে বিষয়গুলোয় মনোযোগ দিতে হয়, সেগুলোর দিকে আমরা মনোযোগী ছিলাম না। আমাদের অত্যন্ত দক্ষ গবেষক রয়েছেন, গুণগত মানের শিক্ষক রয়েছেন। যে বিষয়গুলোর ওপর র্যাঙ্কিং নির্ভর করে, সেসব ক্ষেত্রে মনোযোগী ছিলাম না। এখন বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কিছুটা মনোযোগী হচ্ছে। এখন না হোক, অদূর ভবিষ্যতেও সব না হোক, কিছু বিশ্ববিদ্যালয় র্যাঙ্কিংয়ে ভালো জায়গায় উঠে আসবে।
আজ (১৩ মে) শনিবার গাজীপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ সমাবর্তন অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য ও রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের প্রতিনিধি হিসেবে বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল, পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম, ভারতের যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. শৌভিক ভট্টাচার্য্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মো. গিয়াসউদ্দীন মিয়া প্রমুখ। সমাবর্তনে ২৩২০ জন শিক্ষার্থীকে ডিগ্রি দেওয়া হয়। এরমধ্যে ৬০১ জন বিএস (কৃষি), ২৭৭ জন বিএস (ফিশারিজ), ২৩২ জন ডিভিএম, ৩৩৫ জন বিএস (কৃষি অর্থনীতি), ৮৪০ জন এমএস ও ৩৫ জন পিএইচডি শিক্ষার্থী।
শিক্ষক ও বিজ্ঞানীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, কৃষিজমির পরিমাণ আশঙ্কাজনকভাবে কমে যাচ্ছে। রাসায়নিক সারের যথেচ্ছ ব্যবহারের ফলে কৃষিজমির উৎপাদনশীলতা ও উর্বরতা উল্লেখযোগ্য হারে কমে যাচ্ছে। জীববৈচিত্র্য হ্রাস ও পরিবেশদূষণের ফলে ফসল উৎপাদন অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে। খরা, বন্যা, লবণাক্ততা, আর্সেনিক বিষাক্ততা ও দুর্যোগজনিত নানামুখী কারণে জমির উৎপাদনক্ষমতায় নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে কৃষি গবেষণাকে অগ্রগতি দিয়ে খাদ্য উৎপাদনে আধুনিক ও উন্নত লাগসই প্রযুক্তির উদ্ভাবন এবং সেগুলোর যথাযথ সম্প্রসারণের মাধ্যমে কৃষক পর্যায়ে সরাসরি প্রয়োগের ব্যবস্থা করে দিতে হবে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন কৃষকের অকৃত্রিম বন্ধু। তিনিই কৃষিবিদদের প্রথম শ্রেণির মর্যাদা দিয়ে গেছেন। কৃষিবিদরা আজ বিশেষ মর্যাদা লাভ করে দক্ষতার সাথে সবর্ত্র দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করছে। বঙ্গবন্ধুর সুদূর প্রসারী ঐতিহাসিক কৃষি নীতি ও সে আলোকে বর্তমান সরকারের গৃহীত বাস্তবমুখী পদক্ষেপের ফলে কৃষিতে আজ বৈপ্লবিক পরিবর্তন সম্ভব হয়েছে। দেশরতœ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। ২০৪১ সালে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে সরকার কাজ করছে।
তিনি আরো বলেন, বৈরী পরিবেশ উপযোগী ফসলের জাত ও আধুনিক যুগোপযোগী চাষাবাদপদ্ধতি উদ্ভাবন করে কৃষকদের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়া এখন জরুরি হয়ে পড়েছে। স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে নিরাপদ ফল ও সবজি উৎপাদনে বায়োটেকনোলজি প্রযুক্তি প্রয়োগ এবং কীটনাশকের বিকল্প উপায় উদ্ভাবনের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। বায়োফর্টিফিকেশনের মাধ্যমে বিভিন্ন প্রয়োজনীয় খাদ্য উপাদানসমৃদ্ধ ফসল উৎপাদন এবং উদ্ভিদ রোগ প্রতিরোধী জাত উন্নয়নের প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। সর্বোপরি খাদ্যে দীর্ঘমেয়াদি স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা, কৃষিবিজ্ঞানী ও গবেষকরা দেশীয় ও আন্তর্জাতিক অনুদান ও সহযোগিতার মাধ্যমে বিদ্যমান চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে পারবে বলে আমার বিশ্বাস।