| |
               

মূল পাতা জাতীয় নির্বাচন কমিশন ‘শুনানি শেষে সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে’


‘শুনানি শেষে সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে’


রহমত নিউজ ডেস্ক     03 May, 2023     10:34 PM    


নির্বাচন কমিশন-ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম বলেছেন, শুনানি শেষে সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে। যতগুলো আবেদন আমাদের কাছে আছে তা কমিশন শুনবে। এখানে যে তথ্য-উপাত্ত দিয়েছে সেটাকে কমিশন বিশ্লেষণ করবে। এখানে একটি নীতিমালা আছে, যেমন প্রশাসনিক অখণ্ডতা, ভৌগলিক অখণ্ডতা, জনসংখ্যা, ভোটার সংখ্যা, অন্যান্য পারিপার্শ্বিক বিষয়ে বিবেচনা করে তারপর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন এবং সেটা গেজেট বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানিয়ে দেবেন। জুলাই মাসের মধ্যে এটা শেষ করার কথা রয়েছে। নির্বাচন কমিশন প্রতিটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে নির্বাচনী আসন সংক্রান্ত বিন্যাসের কার্যক্রম শুরু করে। এরই ধারাবাহিকতায় নির্বাচন কমিশনার আলমগীরের নেতৃত্বে একটি কমিটি ছিল। সেই কমিটি একটা খসড়া প্রস্তাবনা কমিশনে উপস্থাপন করে। যা ইতোমধ্যে গণবিজ্ঞপ্তি আকারে দেশবাসিকে অবহিত করা হয়েছে। গণবিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী বেশ কয়েকটি আসনের পক্ষে-বিপক্ষে আবেদন করেছেন। সেগুলোর শুনানি হচ্ছে।

বুধবার (৩ মে) নির্বাচন ভবনে সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণ সংক্রান্ত শুনানির প্রথমদিন শেষে তিনি সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন। জানা গেছে, ৩৮টি আসনের সীমানা নিয়ে ইসিতে মোট ১৮৬টি আবেদন পড়েছিল। সবচেয়ে বেশি আবেদন পড়েছে কুমিল্লা অঞ্চলে ৮৪টি। সবচেয়ে কম আবেদন পড়েছে ময়মনসিংহ ও চট্টগ্রাম অঞ্চলে, একটি করে। রংপুর ও সিলেট অঞ্চলে কোনো আবেদন পড়েনি। অন্যদিকে রাজশাহীতে ৪৩টি, বরিশালে ২৯টি, ঢাকায় ১৮টি এবং খুলনা ও ফরিদপুর অঞ্চল থেকে পাঁচটি করে আবেদন পড়েছে। বুধবার কুমিল্লা অঞ্চলের আবেদনগুলোর শুনানি হলো। ৭ মে রাজশাহী ও সিরাজগঞ্জের আপত্তিগুলোর শুনানি হবে। এছাড়া, ময়মনসিংহ, ফরিদপুর ও ঢাকা অঞ্চলের সীমানা নিয়ে যে আবেদন পড়েছে সেগুলোর শুনানি হবে ১১ মে। আর বরিশাল, খুলনা এবং চট্টগ্রাম অঞ্চলের আবেদনগুলোর শুনানি হবে ১৪ মে।

ইসি সচিব বলেন, ব্রাহ্মণবাড়ীয়া-৫ আসনের নবীনগরের একটি অংশ আরেকটি আসনের সঙ্গে বিভক্তি ছিল। তার পক্ষে-বিপক্ষে আবেদন করেছেন। কেউ চাচ্ছেন আগের মতো বহাল রাখার জন্য, আবার কেউ চাচ্ছেন কয়েকটি ইউনিয়ন অন্য জায়গা থেকে সংশোধন করে আরেকটি আসনের সঙ্গে সংযুক্ত করতে। কুমিল্লা-১ আসনের মধ্যে রয়েছে কুমিল্লা, দাউদকান্দি এবং মেঘনা উপজেলা। কুমিল্লা-২ এর মধ্যে রয়েছে হোমনা এবং তিতাস উপজেলা। কুমিল্লার মেঘনাবাসীদের পক্ষ থেকে ওখানকার আওয়ামী লীগের সভাপতি সফিক এবং জনপ্রতিনিধিরা রয়েছেন। মেঘনা উপজেলাটিতে তারা প্রশাসনিক এবং ভৌগোলিকভাবে দাউদকান্দি ও হোমনার সঙ্গে থাকতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। সুতরাং সেটা কুমিল্লা-১ থেকে ২ এর সঙ্গে অন্তর্ভুক্ত করে এবং ২ এর সঙ্গে যে বিদ্যমান তিতাস উপজেলা আছে সেটাকে হোমনা থেকে বাদ দিয়ে দাউদকান্দির সঙ্গে সংযুক্ত করা। এটার পক্ষে-বিপক্ষে বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতা, স্থানীয় সুশীল সমাজ এবং তাদের বিজ্ঞ আইনজীবী বক্তব্য উপস্থাপন করেছেন। কমিশনের সিদ্ধান্ত হচ্ছে যতগুলো আবেদন পড়েছে সব পক্ষের বক্তব্য শোনার পর কমিশন পূর্ণাঙ্গ মিটিং করে সিদ্ধান্ত প্রজ্ঞাপন আকারে কমিশনের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেবেন। 

তিনি আরো বলেন, প্রথমে ছিল দাউদকান্দি উপজেলা। সেখান থেকে হোমনা উপজেলা হয়েছে, তারপর মেঘনা উপজেলা হয়েছে পরবর্তী সময়ে তিতাস উপজেলা হয়েছে। ২০০৮ সালে বিভক্তির মাধ্যমে দাউদকান্দির সঙ্গে মেঘনা উপজেলা সংযুক্ত করে কুমিল্লা-০১ আসন করা হয়েছে এবং হোমনা উপজেলার সঙ্গে তিতাস উপজেলা সংযুক্ত করে কুমিল্লা-০২ আসন সংযুক্ত করা হয়েছে। মেঘনার রাজনৈতিক ব্যক্তিদের বক্তব্য হচ্ছে, যেহেতু হোমনা থেকে বেশিরভাগ অংশ নিয়ে মেঘনা উপজেলা গঠিত হয়েছে, এতে দাউদকান্দি উপজেলা দূরবর্তী হওয়ায় তাদের যাতায়াতে অসুবিধার কারণে তারা হোমনার সঙ্গে সংযুক্তির আবেদন করেছে। কুমিল্লাতে এক সময় ১২টি আসন ছিল। ২০০৮ সালে একটি আসনকে সমন্বয় করে ১১টি করা হয়েছে। নাঙ্গলকোটের পক্ষে একজন সাবেক সংসদ সদস্য এবং অন্যান্য আবেদন করেছে। এখানে একটি নতুন আসন অন্তর্ভুক্ত করার আবেদন করেছেন। নাঙ্গলকোট যেহেতু একসময় একটি স্বতন্ত্র আসন ছিল, সেটাকে পুনর্বহালের আবেদন জানিয়েছেন।  এদিকে শুনানিতে এসে নিজেদের মধ্যে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন কুমিল্লা-১ ও ২ আসনের সংক্ষুব্ধরা। যারা দাউদকান্দি ও মেঘনা থেকে এসেছিলেন। তবে বড় কোনো ঘটনা ঘটার আগেই পুলিশ এসে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এরই মধ্যে এক নারীর আঘাতে অন্য এক নারীর কপাল কেটে যায়। এছাড়া একটি হাইয়েজ গাড়ির গ্লাস ভাঙচুর ও কয়েকটি প্রাইভেট কার ধাওয়া করে তারা। এ সময় ‘মেঘনার মাটি, জালাল ভূইয়ার ঘাঁটি’- বলে স্লোগান দিতে শোনা যায়।