রহমত নিউজ ডেস্ক 02 May, 2023 10:30 PM
বাংলাদেশ পুলিশের সম্মান নিয়ে যেন কেউ ছিনিমিনি না খেলে সে ব্যাপারে পুলিশ সদস্যদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশ-ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক বলেছেন, দু-একজন পুলিশ সদস্য যদি কোনো অন্যায় করেন, অপরাধ করেন বা কোনো ভুল করেন, এর দায়ভার ডিএমপি নেবে না। কেউ যদি অন্যায় করেন, পুলিশ বাহিনীর সম্মান মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেন? এটা কী কেউ মেনে নেবেন? সমস্বরে উপস্থিত সদস্যরা বলেন, না কখনো মেনে নিব না।
মঙ্গলবার (২ মে) বেলা ১১টার দিকে রাজারবাগ পুলিশ লাইনসের শহীদ এসআই শিরু মিয়া মিলনায়তনে নিউমার্কেটে অগ্নিদুর্ঘটনায় পুলিশ সদস্যদের ভালো ও মানবিক কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এতে ডিএমপির পক্ষ থেকে সেদিন নিউমার্কেট অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ৩৩ জন পুলিশ সদস্যকে পুরস্কৃত করা হয়।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, ইউনিফর্ম পরে কেউ এমন কোনো কাজ করবেন না, যাতে ৩২ হাজার ফোর্সের সম্মানহানি ঘটে। সরকার আমার ইউনিফর্ম দিয়েছে, মর্যাদা দিয়েছে। সেই মর্যাদা কোনোভাবেই নষ্ট হতে দেব না। ভবিষ্যতে আমাদের অনেক চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে। তবে কখনো পুলিশ হারেনি, ১৯৭১ সালেও পুলিশ হারেনি, ভবিষ্যতেও হারবে না। ১৯৭১ সাল থেকেই পুলিশ জনগণের পাশে ছিল, ভবিষ্যতেও থাকবে। স্বাধীন মাতৃকার জন্য পুলিশ সদস্যরা প্রথম বুক পেতে দিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার সময় পুলিশ সদস্য সিদ্দিকুর রহমান পালিয়ে যেতে পারতেন, কিন্তু তিনি পালিয়ে যাননি, বঙ্গবন্ধুকে রক্ষা করতে গিয়ে জীবন দিয়েছেন।’ তিনি বলেন, ২০১২–১৩ সালে আগুন সন্ত্রাসের সময় পুলিশ সদস্যদের ওপর হামলা-নির্যাতন চালানো হয়েছে, পুড়িয়ে মারা হয়েছে। রাজশাহীতে হেলমেট দিয়ে থেঁতলে পুলিশ সদস্যদের হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। সে সময়ও পুলিশ পিছু হটেনি। দেশমাতৃকা রক্ষা করেছে। করোনাকালে পিতা পুত্রের লাশ ফেলে পালিয়ে গেছেন, দাফন করার মানুষ মিলছিল না, তখন পুলিশই দাফন–কাফনের কাজ করেছে। মানুষের ঘরে ঘরে খাবার পৌঁছে দিয়েছে।
তিনি আরো বলেন, নিউমার্কেটের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় পুলিশ যে মানবতার বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছে, যে মানবিক কাজটি করেছে, তা নতুন কিছু নয়। তা পুলিশের দায়িত্ব মাত্র। ১৯৭১ সাল থেকেই পুলিশ সদস্যরা যেকোনো ধরনের ঝুঁকি নিতে পারেন। এটার প্রমাণ নিউমার্কেটের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা। আমরা সিনিয়র অফিসার, আমাদের কিছু দায়িত্ব আছে। আমার পুলিশ, আমার সহকর্মীদের উৎসাহিত করা, অনুপ্রেরণা, সাহস দেওয়া আমাদের পবিত্র দায়িত্ব কর্তব্য। মুখে বাঁশি বাজানো, মাথায় বিশাল কাপড়ের বস্তা নিয়ে বের হওয়ার ছবি সারা বাংলাদেশে ভাইরাল হয়েছে। এটা বাংলাদেশ তথা ডিএমপির মর্যাদা অনেক দূর নিয়ে গেছে। ডিএমপির সদস্যরা যা করেছেন, তা পুরস্কার দিয়ে পূরণ সম্ভব নয়। তবে ভালো কাজের স্বীকৃতি এটি, এটি একটি বার্তা। বাকি সদস্যরা যেন এটা বোঝেন, উৎসাহিত হোন। পুলিশ সদস্যরা ভবিষ্যতে যাঁরাই ভালো কাজ করবেন, তাঁদের পুরস্কৃত করা হবে। তবে, পুলিশের অবদান অনেক সম্মানিত নাগরিক অনুধাবন করতে পারেন না। আমরা কষ্ট পাই, দুঃখ পাই। কারণ, চামড়াপোড়া গরমে পুলিশের সদস্যরা সারা দিন ডিউটি করেন। কোনো ট্রাফিক পুলিশ ট্রাক ড্রাইভারের কাছ থেকে কয় টাকা নেন, তার নিউজ করেন, ছবি প্রকাশ করেন। সাংবাদিক ভাইদের অনুরোধ করব, পুলিশ অনেক ভালো কাজ করে, সেটি প্রচার করুন। পুলিশের কষ্টের কথাগুলো তুলে ধরেন। জনগণ যেন বুঝতে পারে। ডিএমপির ৩২ হাজার ফোর্সের মধ্যে দু-একজন বাদে বাকি সদস্যরা নগরবাসীর সেবাদানে নিয়োজিত ও আত্মত্যাগে প্রস্তুত। দু-একজন সদস্যদের অপকর্মের, অন্যায়ের দায়দায়িত্ব পুলিশ কখনোই গ্রহণ করবে না।