তত্ত্বাবধায়ক সরকার ইস্যুতে সংলাপের কোনো প্রশ্নই আসে না : তথ্যমন্ত্রী

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ইস্যুতে বিএনপির সাথে সংলাপ করার কোনো প্রশ্নই আসে না। তাদের সাথে কোনো সংলাপের তো প্রয়োজন নাই। আমরা তাদেরকে সংলাপে ডাকিও নাই। আমরা যদি ডাকতাম তাহলে তাদের সেই কথা বলার সুযোগ থাকতো যে, তারা সংলাপে আসবে কি না।

আজ (১৫ মার্চ) বুধবার দুপুরে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন। এর আগে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী অমর প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত একুশে পদকপ্রাপ্ত অধ্যাপক ড. বিকিরণ প্রসাদ বড়ুয়া রচিত ‘বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক দর্শন ও স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্ন’ এবং মো: রফিকুল ইসলামের কাব্য সংকলন ‘তুমি বঙ্গবন্ধু, তুমি জাতির পিতা’ গ্রন্থ দু’টির মোড়ক উন্মোচন করেন। বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. বিকিরণ প্রসাদ বড়ুয়া, অমর প্রকাশনীর সত্ত্বাধিকারী অমর হাওলাদার এবং সাংবাদিক ও গবেষক অভি চৌধুরী, কিশোর কুমার বড়ুয়া, গোলাম কাদের প্রমুখ অনুষ্ঠানে অংশ নেন। মন্ত্রী হাছান গ্রন্থকারদ্বয় এবং প্রকাশককে ধন্যবাদ জানান এবং তাদের হাত ধরে আরো গবেষণাধর্মী বই প্রকাশিত হবে এমন প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন। এ সময় খুলনার সানরাইজ সাহিত্য সংস্কৃতি পরিষদ প্রকাশিত মুজিববর্ষ স্মারক পত্রিকাটি মন্ত্রীর হাতে তুলে দেন কবি আনন্দ কুমার স্বর। 

তথ্যমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার কিম্বা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনে কোনো নির্বাচন হয় না। উনারা যদি আওয়ামী লীগের অধীনে নির্বাচনে যেতে চায়, সেটার কোনো সুযোগ নাই কারণ নির্বাচন আওয়ামী লীগের অধীনে হবে না। নির্বাচন হবে সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন কমিশনের অধীনে এবং বর্তমান সরকার নির্বাচনকালীন সরকারের দায়িত্ব পালন করবে। যেভাবে সংসদীয় গণতন্ত্রের দেশ ভারত, ইংল্যান্ড, জাপান, অস্ট্রেলিয়া, কন্টিনেন্টাল ইউরোপের অন্যান্য দেশ যেমন জার্মানি, ফ্রান্স এবং আরো অনেক দেশে চলতি সরকার নির্বাচনকালীন সরকারের দায়িত্ব পালন করে। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় আমাদের দেশেও সেটি হবে। এ প্রশ্নে সংলাপ করার প্রশ্নই আসে না।

তিনি বলেন, বিএনপি গত নির্বাচনে ৩০০ আসনে ৯০০ প্রার্থীকে মনোনয়ন দিয়েছিল। বাংলাদেশের ইতিহাসে কখনো এ ঘটনা ঘটেনি। আমার নির্বাচনী এলাকায় প্রথমে দেখলাম একজন নমিনেশন পেয়েছে, পরে দেখি ওটা উল্টে গেছে, আরেকজন পেয়েছে। তারপর দেখলাম যে ধানের শীষ বিক্রি করে এলডিপিকে দিয়েছে এবং এর প্রতিবাদে বিএনপির মহিলাকর্মীরা ঝাড়– মিছিল করলো। বিএনপি গত নির্বাচনে এ ধরণের বেচা-বিক্রি করেছে, সে কারণে ৩০০ আসনে ৯০০ নমিনেশন দিয়েছিল। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক সাহেব একটা দেন, ফখরুল সাহেব আরেকটা দেন, রিজভী সাহেব আরেকটা দেন, উনাদের তিনজনের টানাটানিতে যেটা জেতে সেটা ফাইনাল। তাদের নির্বাচনে খুব খারাপ ফল করার পেছনে এগুলো বড় প্রভাব ফেলেছে।

তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের দলে পরীক্ষিত নেতাকর্মী, যাদের জনপ্রিয়তা আছে তাদেরকেই মনোনয়ন দেওয়া হবে। আওয়ামী লীগ একটা আদর্শিক দল, দীর্ঘদিনের পরীক্ষিত নেতা কিম্বা কর্মীকে বাদ দিয়ে সদ্য অবসরপ্রাপ্ত আমলা কিম্বা বড় ব্যবসায়ীদেরকে আমরা নমিনেশন দিই না। অনেকে আওয়ামী লীগের নমিনেশন না পেয়ে বিএনপিতে গিয়েছিল এবং মোটা অংকের টাকা দিয়ে নমিনেশন পেয়েছিল। পরে তারা মন্ত্রীও হয়েছিল। এ ধরণের প্র্যাকটিস বিএনপিই করে কারণ বিএনপি তো সৃষ্টিই হয়েছে ক্ষমতার হালুয়া রুটি বন্টন করে রাজনীতির কাকদের নিয়ে। মির্জা ফখরুল সাহেব, রিজভী সাহেব, খন্দকার মোশাররফ সাহেব সবাই অন্য দল করতেন, দলছুট নেতাদের, রাজনীতির কাকদের নিয়ে বিএনপির সৃষ্টি। সেই কারণে তাদের মধ্যে আদর্শ নাই, তাই তারা এভাবে পদ বাণিজ্য করে, নমিনেশন বাণিজ্য করে।