রহমত নিউজ ডেস্ক 13 February, 2023 06:16 PM
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও ভারপ্রাপ্ত দপ্তর সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, আওয়ামী সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় এখন দুর্নীতির জয়জয়কার, রাজরোষে বিরোধী মত ও ব্যক্তিরা কারাগারে, নারকীয় উল্লাসে চলছে গুম-খুন-ক্রসফায়ার, ক্ষমতাসীনদের আশকারায় পৈশাচিক আনন্দে নারী-শিশু নির্যাতনের হিড়িক চলছে, বিচার বিভাগকে করা হয়েছে সরকারের হাতের খেলনা, প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে শুধুমাত্র সরকার ও সরকারপ্রধানের নিজস্ব বরকন্দজে পরিণত করা হয়েছে। আজ (১৩ ফেব্রুয়ারি) সোমবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- বিএনপি নেতা এবি এম মোশাররফ, ভিপি জয়নাল আবেদীন, তাইফুল ইসলাম টিপু প্রমুখ।
প্রিন্স বলেন, দেশে শান্তিবিনাশী সমাজবিরোধীদের দাপট বেড়েছে। কারণ এরা সরকারি দলের লোক। তবে চলমান দুঃশাসনে জনগণের মধ্যে এখন ক্রোধবহ্নি দাউদাউ করে জ্বলছে। আর এটি ইতিহাসে প্রমাণিত যে, অবৈধ শাসনের অবসান ঘটাতে জনগণের আন্দোলন ও প্রতিজ্ঞা কখনোই নিষ্ফল হয়নি। অবৈধভাবে ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী নেতা-মন্ত্রীরা মাঝে মধ্যে দুঃস্বপ্ন দেখে লাফ দিয়ে উঠে এবং আবোল-তাবোল বকতে থাকে। আওয়ামী লীগের ঐতিহ্যই হচ্ছে গণতন্ত্র ও জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করা। আমি দৃঢ়তার সঙ্গে বলতে চাই- জনগণের কাছে শাক দিয়ে মাছ ঢেকে লাভ নেই। সরকার নিজের গর্ত নিজেই খুঁড়ছে। এ সরকার বেশি দিন টিকে থাকবে না। পৃথিবীতে কোনো ফ্যাসিবাদ টিকে থাকেনি। এ নির্দয় ফ্যাসিবাদী সরকারও টিকবে না। জবরদস্তি করে জনগণের ঘাড়ে চেপে বসে থাকার দিন শেষ হবে অচিরেই।
তিনি বলেন, আওয়ামী মন্ত্রী ও নেতারা বলছেন- বিএনপি নাকি রাষ্ট্র ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য ষড়যন্ত্র শুরু করেছে, বিদেশিদের কাছে ধর্ণা দিচ্ছে। আওয়ামী নেতাদের উদ্দেশে বলতে চাই- বিএনপিতো গণবিরোধী অবৈধ সরকারের পতনের জন্য প্রশস্ত রাজপথেই আন্দোলন করছে। ষড়যন্ত্র ও চক্রান্তের মাধ্যমে রাজোচিত জীবন নির্বাহ যাতে ব্যাহত না হয় সেজন্যই আওয়ামী নেতা-মন্ত্রীরা নিশিরাতে ভোট ডাকাতি করে ক্ষমতায় আছে। ষড়যন্ত্র, সন্ত্রাস ও প্রশাসনকে কব্জায় নিয়ে ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়ে জনগণকে দুঃসহ জীবন-যাপনে বাধ্য করে অবৈধভাবে ক্ষমতা ধরে রেখেছে আওয়ামী শাসকগোষ্ঠী। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী এবং আওয়ামী সন্ত্রাসীরা এখন জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। বিএনপিসহ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর শান্তিপূর্ণ যেকোনো কর্মসূচিতে হামলা ও বেপরোয়া গণগ্রেফতার চালানো হচ্ছে। আওয়ামী অবৈধ সরকার নিজেদের ক্ষমতাকে আবারও বেআইনি পন্থায় আঁকড়ে রাখতে সারা দেশে বিএনপি নেতাকর্মীদের গণগ্রেফতারের পুরনো খেলায় মেতে উঠেছে। অবৈধ আওয়ামী শাসকগোষ্ঠীর এ ধরনের ন্যাক্কারজনক আচরণের আমি তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
তিনি আরো বলেন, সারা দেশ থেকে গ্রেফতারকৃত নেতাকর্মীদের অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তির জোর আহ্বান জানাচ্ছি। হামলায় আহত নেতাকর্মীদের আশু সুস্থতা কামনা করছি। একইসঙ্গে মিথ্যা ও গায়েবি মামলা প্রত্যাহারসহ হয়রানি বন্ধের জোর আহ্বান জানাচ্ছি। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী দুই মাসের বেশি কারাগারে ভীষণ অসুস্থ। তাকে বিশেষায়িত কোনো হাসপাতালে সুচিকিৎসা দেওয়ার জন্য আমাদের দাবি উপেক্ষা করে সরকার তার প্রতি অমানবিক আচরণ করছে। আমরা আবারও রিজভীকে অবিলম্বে কোনো বিশেষায়িত হাসপাতালে সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জোর আহ্বান জানাচ্ছি। অবিলম্বে রুহুল কবির রিজভীর নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করছি।