| |
               

মূল পাতা জাতীয় থানায় এসে কোনো ব্যক্তি যেন হয়রানির শিকার না হয় : রাষ্ট্রপতি


থানায় এসে কোনো ব্যক্তি যেন হয়রানির শিকার না হয় : রাষ্ট্রপতি


রহমত নিউজ ডেস্ক     04 January, 2023     08:03 PM    


সন্ত্রাস ও মাদক প্রতিরোধে পুলিশকে আরো সজাগ ও সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়ে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, আইনি  সেবা পেতে জনগণ যেন হয়রানির শিকার না হয় তা নিশ্চিত করতে হবে। ‘পুলিশ-থানা’কে জনগণের আইনি সহায়তা পাওয়ার প্রাথমিক কেন্দ্র, থানায় আসা বিপন্ন মানুষকে তাদের প্রত্যাশিত সেবা প্রদানে আপনাদেরকে নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে হবে। যাতে করে থানায় এসে কোনো ব্যক্তি যেন অযথা হয়রানির শিকার না হয়। তাদের সাথে মানবিক আচরণ করারও তাগিদ দেন। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে দেশ ও জনগণের কল্যাণে সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের কথা উল্লেখ করে এবং দেশের আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশের ভূমিকার প্রশংসা করেন তিনি।

আজ (৪ জানুয়ারি) বুধবার সন্ধ্যায় বঙ্গভবনে পুলিশ সপ্তাহ ২০২৩ উপলক্ষে পুলিশ কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে দেয়া এক ভাষণে রাষ্ট্রপতি এ  নির্দেশনা দেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, এমপি, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খান, বঙ্গভবনের সংশ্লিষ্ট সচিবগণ, ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ-আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন এবং ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাবৃন্দ অনুষ্ঠানে অংশ নেন। পরে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে ফটোসেশনে অংশ নেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ।

পুলিশের উন্নয়ন ও আধুনিকায়নে সরকারের নানা কার্যক্রম তুলে ধরে আগামী দিনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় পুলিশকে নিজেদের দক্ষ করে গড়ে তোলারও আহ্বান জানিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, পুলিশের প্রতি জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস বাড়াতে জনমুখী সেবা চালুর মাধ্যমে জনবান্ধব পুলিশি ব্যবস্থা গড়ে তুলুন। মনে রাখবেন, জনগণকে সেবা প্রদান করা আপনাদের পবিত্র দায়িত্ব। কমিউনিটি পুলিশিং, বিট পুলিশিং, ওপেন হাউজ ডে ইত্যাদি জনমুখী কার্যক্রমের মাধ্যমে পুলিশিংয়ের ক্ষেত্রে জনগণকেও সম্পৃক্ত করতে হবে। তাদের সাথে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলার মাধ্যমে জনগণের আস্থা অর্জন করতে পারলে অপরাধ নিয়ন্ত্রণ পুলিশের জন্য অনেক সহজ হবে।পুলিশের প্রতি জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস আরো বাড়াতে এ ধরণের আরও প্রযুক্তিনির্ভর জনমুখী সেবা চালুর উদ্যোগ গ্রহণ করারও তাগিদ দেন। প্রথাগত অপরাধের সাথে ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ও সাইবার বুলিংসহ সাইবার অপরাধের ক্রমবর্ধমান চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় পুলিশের দক্ষতা ও সক্ষমতা বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই।  চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায়ও বাংলাদেশ পুলিশকে এগিয়ে থাকতে হবে। বাংলাদেশ পুলিশে আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স-এআই, বিগ ডাটা ইত্যাদি প্রযুক্তি সংযোজন ও ব্যবহারের মাধ্যমে অপরাধ দমনে উদ্যোগী হতে হবে। এছাড়া, মাদকের বিস্তার দেশের জন্য পুলিশের পাশাপাশি দেশের সকল শ্রেণি-পেশার মানুষকে মাদকের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। কিশোর অপরাধ দমনেও বাংলাদেশ পুলিশকে আরো তৎপর হতে হবে। পিতা-মাতা, অভিভাবক ও পরিবারকেও এক্ষেত্রে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের অনুরোধ করেন রাষ্ট্রপতি।

তিনি বলেন, পুলিশকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে গবেষণা ও উদ্ভাবনের মাধ্যমে সমসাময়িক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার সক্ষমতা অর্জন করতে হবে। বাংলাদেশ পুলিশের উন্নয়ন ও আধুনিকায়নে সরকার বিভিন্ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করেছে উল্লেখ করে  রাষ্ট্রপতি বলেন, ২০৪১ সালের উন্নত বাংলাদেশের উপযোগী করে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীকে গড়ে তুলতে হবে। রাষ্ট্রপতি ১৯৭৫ সালের ১৫ জানুয়ারি রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে প্রথম পুলিশ সপ্তাহে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উদ্বোধনী ভাষণের উদ্ধৃতি দেন, ‘মনে রাখবেন, আপনাদের মানুষ যেন ভয় না করে। আপনাদের যেন মানুষ ভালোবাসে। আপনারা জানেন, অনেক দেশে পুলিশকে মানুষ শ্রদ্ধা করে। আপনারাও শ্রদ্ধা অর্জন করতে শিখুন।’ জনগণের প্রতি বঙ্গবন্ধুর গভীর মমত্ববোধ ও ভালবাসার এ উক্তি স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, আপনারা মানুষের সাথে মানবিক আচরণ করবেন, ভাল ব্যবহার করবেন। তাদের সমস্যা মনোযোগ দিয়ে শুনে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদানে সর্বদা সচেষ্ট থাকবেন। আমি আশা করি, আপনারা মানবিক পুলিশ হয়ে জনবান্ধব পুলিশি ব্যবস্থা গড়ে তোলার মাধ্যমে জনগণকে সেবা প্রদানে আরও ব্রতী হবেন। বাংলাদেশ পুলিশের সকল সদস্যকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধে জীবন উৎসর্গকারী পুলিশ সদস্যদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান। কোভিড-১৯ মহামারির মানবিক বিপর্যয়কালে জনসেবায় আত্মনিয়োগ করে ১০৬ জন অকুতোভয় পুলিশ সদস্যসহ দেশ ও জনগণের কল্যাণে বিভিন্ন সময়ে যারা জীবন উৎসর্গ করেছেন, রাষ্ট্রপতি তাদের আত্মার মাগফিরাত ও শান্তি কামনা করেন তিনি।