রহমত নিউজ ডেস্ক 17 December, 2022 04:28 PM
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমীর আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী বলেন, শায়খুল ইসলাম আল্লামা শাহ আহমদ শফি রাহমাতুল্লাহি আলাইহি ঘোষিত হেফাজতের ১৩ দফা আন্দোলনে ক্ষমতা কেন্দ্রিক কোন রাজনৈতিক এজেন্ডা নেই। হেফাজতে আল্লামা শাহ আহমদ শফী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি রেখে যাওয়া আমানত এবং আমাদের পূর্বপুরুষ ওলামায়ে দেওবন্দ তথা আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের পদাঙ্ক অনুসরণ করে চলছে এবং চলবে। তবে একজন মু'মিনের কাছে তার জানের চেয়েও ঈমান প্রিয়, অতএব দেশের প্রত্যেকটা মুসলমানই হেফাজতের নেতা কর্মী বা সমর্থক। তাই যখনই ঈমান আকিদার বা সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানের স্বার্থ সংরক্ষণে এবং হেফাজতের ১৩ দফা বাস্তবায়নে ডাক আসবে তখন দল মত নির্বিশেষে, নিজের রাজনৈতিক পরিচয় ভুলে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ ভাবে মাঠে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। এজন্য সকলের মানসিক প্রস্তুতিও থাকতে হবে।
আজ (১৭ ডিসেম্বর) শনিবার সকাল ৯টায় রাজধানী ঢাকার গুলিস্তানস্থ কাজী বশির মিলনায়তনে শায়খুল ইসলাম আল্লামা শাহ আহমদ শফী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি কর্তৃক ঘোষিত ১৩ দফা দাবি আদায়, কারাবন্দী হেফাজত নেতা-কর্মীদের মুক্তি ও হেফাজতের নামে ২০১৩ সাল থেকে আজ পর্যন্ত হওয়া সব মামলা প্রত্যাহার ও জাতীয় শিক্ষানীতিতে ধর্মীয় শিক্ষা সঙ্কোচনের প্রতিবাদ, পাবলিক পরীক্ষায় ধর্ম বিষয়ে ১০০ নম্বরের পরীক্ষার ব্যবস্থা করা এবং জাতীয় শিক্ষা কমিশনে হক্কানি আলেম প্রতিনিধি রাখার দাবিতে হেফাজতে ইসলাম বাংলাশের উদ্যোগে জাতীয় ওলামা মাশায়েখ সম্মেলনে সভাপতির লিখিত বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। লিখিত বক্তব্যে পাঠ করেন, আল- জামিয়াতুল ইসলামিয়া আজিজুল উলূম বাবুনগরের মুহাদ্দিস মাওলানা ড. হারুন আজিজী নদভী।
আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী বলেন, আজকে আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশসহ বিশ্বময় যে ফিতনা ফাসাদ শুরু হয়েছে বরং প্রতিনিয়ত যে হারে নতুন নতুন ফিতনার আবির্ভাব হচ্ছে, তাতে সচেতন অভিভাবক মহল প্রত্যেকে তাদের আগামী প্রজন্মের ঈমান-আকিদা ও বিশ্বাস নিয়ে শংকিত। বর্তমানে ব্যক্তি, পরিবার,সমাজ সর্বত্র অশান্তি বিরাজ করছে, চারিদিকে অশান্তি আর অশান্তি। সবকিছুর মুল কারণ হচ্ছে মানব জাতির কৃতকর্মের ফল।আল্লাহর ক্রোধ ও অসন্তুষ্টিকে ভয় করুন, বিশেষ করে মজলুম হাফেজ, আলেমদের চোখের পানিকে ভয় করুন। এসব জুলুম ও নির্যাতনের কারণে দেশের শান্তি শৃঙ্খলা অবনতীর আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এবংদেশে দুর্ভিক্ষের আশঙ্কাও দেখা দিয়েছে।
তিনি আরো বলেন, হযরত ইউসুফ আলাইহিস সালামা যখন কারাগারে বন্দি ছিলেন তখন ঐদেশে দুর্ভিক্ষ দেখা দিয়েছিল। হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর সর্বশেষ নবী। পৃথিবীতে আর কোন নবী রাসুলের আগমন ঘটবে না, ওলামায়েকেরাম নবী রাসুলের উত্তরসূরী। তাদের বন্দি রেখে দেশে শান্তি এবং স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়। দেশের এই ক্রান্তি কালে অশান্তি ও দুরবস্থা থেকে মুক্তি এবং সমস্যা থেকে উত্তরণের লক্ষে প্রথমত হেফাজত নেতাকর্মীদের নামে করা সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করুন এবং তাদেরকে দ্রুত মুক্তি দিয়ে মজলুমদের কান্না বন্ধ করুন। আসুন, আমরা সকলেই আগামীতে কোন জুলুম অত্যাচার, গোনাহ বা অপরাধ না করার প্রতিজ্ঞা করে আল্লাহর কাছে খালেছ নিয়তে তওবা করি।
হেফাজতের সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা মীর ইদরিস ও প্রচার সম্পাদক মুফতী কিফায়াতুল্লাহ আযহারীর যৌথ সঞ্চালনায় সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন, হেফাজতের মহাসচিব মাওলানা শায়খ সাজিদুর রহমান, নায়েবে আমীর আল্লামা আতাউল্লাহ হাফেজ্জী, মাওলানা মুহাম্মদ ইয়াহইয়া, মাওলানা সালাহউদ্দীন নানুপুরী, মাওলানা আবদুল আউয়াল, দেওনার পীর অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান, মুফতী জসিম উদ্দিন, মাওলানা মুহিব্বুল হক গাছবাড়ী, মাওলানা আবদুল বাছির, মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ সাদী ময়মনসিংহ, বেফাকের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হক, হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মুহিউদ্দীন রাব্বানী, মাওলানা আনোয়ারুল করীম যশোরী, মুফতী হাবিবু রহমান কাসেমী, ঢাকা মহানগর সভাপতি মাওলানা আব্দুল কাইয়ুম সুবহানী, মুফতী মোবারক উল্লাহ, মুফতী মিজানুর রহমান সাঈদ, মাওলানা হাবিবুল্লাহ মিয়াজী, মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মাওলানা জালাল উদ্দিন আহমদ, নায়েবে আমীর মাওলানা রেজাউল করীম জালালী, যুগ্ম মহাসচিব মুফতি আতাউল্লাহ আমিন, হেফাজতের বিলুপ্ত কমিটির সহকারী মহাসচিব মাওলানা খালিদ সাইফুল্লাহ আইয়ুবী, মুফতী হাবিবুল্লাহ মাহমুদ কাসেমী, মাওলানা শাব্বির আহমদ রশিদ, মাওলানা আব্দুল বাসেত খান, সদ্য কারামুক্ত মুফতি ফখরুল ইসলাম, মুফতি আবদুর রহীম কাসেমী, জামিয়া নূরিয়ার শিক্ষক মুফতি সুলতান মুহিউদ্দন, মাওলানা শওকত হোসাইন সরকার, মাওলানা মাসুদুল করীম, মাওলানা ফয়সাল, মুফতী ইলিয়াস হামিদী, মাওলানা মুসতাকিম বিল্লাহ হামিদী, মাওলানা গাজী ইয়াকুব উসমানী, মাওলানা খালেদ বিন নূর প্রমুখ।