রহমত নিউজ ডেস্ক 06 December, 2022 12:44 PM
জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধনী প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন করার তাগিদ দিয়েছেন সংসদ সদস্য, জনস্বাস্থ্যবিদ, চিকিৎসক, অর্থনীতিবিদ এবং তামাকবিরোধী নেতৃবৃন্দ।
সোমবার (৫ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর হোটেল ওয়েস্টিনে ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডস-সিটিএফকে, প্রজ্ঞা-প্রগতির জন্য জ্ঞান, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ, স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশন, ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন, ডরপ এবং উন্নয়ন সমন্বয়ের সম্মিলিতভাবে আয়োজিত ‘প্রাইম মিনিস্টার’স ভিশন অফ টোব্যাকো-ফ্রি বাংলাদেশ বাই ২০৪০, অ্যাচিভমেন্টস অ্যান্ড ওয়ে ফরোয়ার্ড’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন সরকারের তামাকবিরোধী নানাবিধ কার্যক্রমের ফলে তামাক ব্যবহার ২০০৯ সালের তুলনায় ২০১৭ সালে ১৮.৫ শতাংশ হ্রাস (রিলেটিভ রিডাকশন) পেয়েছে। স্বল্প সময়ে তামাকের এই ব্যবহার হ্রাস সরকারের সাফল্যের স্বাক্ষর বহন করলেও ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ অর্জনের জন্য তা যথেষ্ট নয়। বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের কিছু দুর্বলতা যেমন, পাবলিক প্লেস এবং পরিবহনে ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান সংরক্ষণ, বিক্রয়স্থলে তামাক পণ্য প্রদর্শন, তামাক কোম্পানির সামাজিক দায়বদ্ধতা কর্মসূচি-সিএসআর, তামাকপণ্যের খুচরা বিক্রয় এবং ই-সিগারেটসহ নতুন ধরনের তামাকপণ্য বিক্রয় চলমান থাকায় তামাক ব্যবহার হ্রাসে তা কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারছে না। বর্তমানে প্রাপ্তবয়স্ক জনগোষ্ঠীর ৩৫.৩ শতাংশ (৩ কোটি ৭৮ লক্ষ) তামাক ব্যবহার করে। তামাকজনিত রোগে বছরে ১ লক্ষ ৬১ হাজার মানুষের মৃত্যু হয় এবং আরো কয়েক লক্ষ মানুষ পঙ্গুত্ব বরণ করে। তাই আইন সংশোধনের মাধ্যমে তামাক ব্যবহারে কঠোরতা আরোপে যত দেরি হবে তামাকজনিত মৃত্যু ও ক্ষয়ক্ষতি বাড়তে থাকবে। দেশে তামাকের ব্যবহার কমিয়ে ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ অর্জনের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৬ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন টোব্যাকো কন্ট্রোল-এফসিটিসির আলোকে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের প্রত্যয় ব্যক্ত করেছিলেন।
তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের খসড়া সংশোধনীতে যেসব প্রস্তাব অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে তারমধ্যে রয়েছে সকল পাবলিক প্লেস ও পাবলিক পরিবহনে ‘ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান’ রাখার বিধান বিলুপ্ত করা; বিক্রয়স্থলে তামাকজাত দ্রব্য বা প্যাকেট প্রদর্শন নিষিদ্ধ করা; তামাক কোম্পানির সামাজিক দায়বদ্ধতা কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করা; সব ধরনের খুচরা বা খোলা তামাকজাত দ্রব্য বিক্রয় নিষিদ্ধ করা; ই-সিগারেট, ভ্যাপিং, হিটেড টোব্যাকো প্রোডাক্টসহ এধরনের সকল পণ্য উৎপাদন, আমদানি ক্রয়-বিক্রয় নিষিদ্ধ করা; এবং তামাকজাত দ্রব্যের প্যাকেট বা মোড়কে সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবার্তার আকার ৫০ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি করে ৯০ শতাংশ করা ইত্যাদি।
অনুষ্ঠানে আলোচক ছিলেন সাবের হোসেন চৌধুরী এমপি, অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবে মিল্লাত এমপি, ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী এমপি, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (বিশ্বস্বাস্থ্য) কাজী জেবুন্নেসা বেগম, ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো-ফ্রি কিডস-সিটিএফকের এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট ইয়োলোন্ডা রিচার্ডসন, গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটর-জিএইচএআইর ভাইস প্রেসিডেন্ট বন্দনা শাহ, সিটিএফকে বাংলাদেশ এর লিড পলিসি অ্যাডভাইজার মো. মোস্তাফিজুর রহমান, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক ব্রিগেডিয়ার (অব.) আব্দুল মালিক, অর্থনীতিবিদ ড. আতিউর রহমান, অ্যান্টি টোব্যাকো মিডিয়া এলায়েন্স-আত্মা এবং তামাকবিরোধী সংগঠনসমূহের প্রতিনিধিবৃন্দ।