রহমত নিউজ 10 November, 2022 08:01 PM
স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের অনেকেই নিজেদের দায়িত্ব সম্পর্কে জানেন না। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে স্থানীয় পর্যায়ের জনপ্রতিনিধিরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবেন। কিন্তু এ জনপ্রতিনিধিদের অনেকে তাঁদের কী দায়িত্ব এবং সেগুলো কীভাবে পালন করতে হয়, সেটা জানেন না। দায়িত্ব সম্পর্কে না জানা জনপ্রতিনিধিদের একক দায় নয়, শুধু জনপ্রতিনিধিদের দোষ দিলে হবে না। তাঁদের অনেকের শিক্ষার যোগ্যতার ঘাটতি আছে। তাঁদের জন্য পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা যায়নি। জাতীয় স্থানীয় সরকার ইনস্টিটিউটের (এনআইএলজি) সক্ষমতার ঘাটতি রয়েছে। এনআইএলজির আর্থিক ও লজিস্টিক ঘাটতি রয়েছে।
আজ (১০ নভেম্বর) বৃহস্পতিবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বাংলাদেশ সরকার এবং জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি-ইউএনডিপির যৌথ আয়োজিত ‘এসডিজি লোকালাইজেশন: ফাইন্ডিংস অ্যান্ড ওয়ে ফরওয়ার্ড’ শীর্ষক জাতীয় কর্মশালায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মুহম্মদ ইবরাহিমের সভাপতিত্বে কর্মশালায় বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি গুইন লুইস, সুইডিশ দূতাবাসের হেড অব কো-অপারেশন মারিয়া স্ট্রিডসমেন প্রমুখ। প্রশ্নোত্তর পর্ব সঞ্চালনা করেন ইউএনডিপি বাংলাদেশের সিনিয়র স্ট্র্যাটেজিক অ্যাডভাইজার আবুল কালাম আজাদ। সমাপনী বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি-বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক জুয়েনা আজিজ।
তাজুল ইসলাম বলেন, স্থানীয় পর্যায়ে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার অভীষ্ট অর্জনে সর্বসাধারণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। এ অংশগ্রহণের বড় ভূমিকা রাখবেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। এই জনপ্রতিনিধিরা তাঁদের এলাকা সম্পর্কে জানেন, জনগণের চাহিদা সম্পর্কে তাঁদের ধারণা আছে। প্রাতিষ্ঠানিকভাবে জনপ্রতিনিধিদের দায়িত্বও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তাঁদের অনেকে জানেন না তাঁদের দায়িত্ব কী। এসডিজি অর্জনে ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যদের সম্মুখযোদ্ধা, তাঁরা একেকজন চার-পাঁচ হাজার জনগণের প্রতিনিধিত্ব করছেন। তাঁদের কাছে পৌঁছাতে হবে। তাঁদের দায়িত্ব সম্পর্কে জানাতে হবে, সচেতন করতে হবে। কীভাবে এ দায়িত্ব পালন করতে হবে, তা জানাতে হবে। তাঁদের জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে।
এসডিজি লোকালাইজেশন বা স্থানীয়করণ বাংলাদেশ সরকার ও ইউএনডিপির একটি সম্মিলিত উদ্যোগ। সুইডেন সরকারের সহায়তায় ইউএনডিপি দেশের ৯টি পিছিয়ে পড়া জেলায় এ পাইলট কার্যক্রম চালাচ্ছে। এ কার্যক্রমে দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি-বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক আর প্রশাসনিক সহায়তা দিচ্ছে স্থানীয় সরকার বিভাগ। কর্মশালায় তিনটি আলাদা প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের যুগ্ম সচিব (এসডিজি বিষয়ক) মো. মনিরুল ইসলাম, গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা এবং ইউএনডিপি বাংলাদেশের সহকারী আবাসিক প্রতিনিধি সরদার এম আসাদুজ্জামান।
এসব প্রবন্ধে বলা হয়, স্থানীয় পর্যায়ে অংশীজনদের চাহিদার সঙ্গে প্রশাসনের চাহিদার পার্থক্য রয়েছে। স্থানীয় পর্যায়ে এসডিজি অর্জন করতে হলে পর্যাপ্ত বাজেট বরাদ্দ থাকতে হবে। যেমন স্থানীয় পর্যায় থেকে চাহিদা দেওয়া হলো ১০০টি স্কুলের পয়োনিষ্কাশনের জন্য, কিন্তু কেন্দ্র থেকে বরাদ্দ দেওয়া হলো ১০টিতে। এমন হলে এসডিজি অর্জন কষ্টসাধ্য হবে। স্থানীয় পর্যায়ে সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করতে হবে। বিভিন্ন পর্যায়ের সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর সমন্বয় বাড়াতে হবে বলে এসব প্রবন্ধে সুপারিশ করা হয়েছে।