বেলায়েত হুসাইন 22 September, 2022 12:42 PM
মিসরের যে কয়জন কারী পবিত্র কুরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে গোটা পৃথিবীকে মোহাচ্ছন্ন করতে পেরেছেন তাদের একজন শায়খ কারী মাহমুদ খলিল আল হুসারি। রেডিও মিশরের প্রথম পরিচালক আব্দুল খালেক আব্দুল ওহহাব শায়খ হুসারি সম্পর্কে বলেন, ‘তিনি ছিলেন খাঁটি একজন কুরআনের শিক্ষক, গোটা মিসরে কুরআনের তা’লিমের ক্ষেত্রে তিনি অদ্বিতীয় ব্যক্তি ছিলেন।’
বর্তমান সময়ের প্রসিদ্ধ কারি মাহমুদ আল হালবায়ী বলেন, ‘শায়খ আল হুসারি এমনভাবে কুরআন পাঠ করতেন যেন পবিত্র এ গ্রন্থে বর্ণিত শরিয়তের হুকুম-আহকাম ও বিধানাবলি স্পষ্ট ভাষায় বর্ণনা করছেন।’
মিসরের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ত্বহা আব্দুল ওহহাব শায়খ আল হুসারির ব্যাপারে মন্তব্য, ‘তার কণ্ঠ ছিল সুমিষ্ট, তার তেলাওয়াত মানুষের মস্তিষ্কে রেখাপাত করতো, তার ভরাট কণ্ঠের তেলাওয়াত ছিল অসাধারণ।’
কুরআনের মহান এই খাদেম ঠিক ১০৩ বছর আগে জন্মগ্রহণ করেন। অর্থাৎ ১৯১৭ সালের এ সেপ্টেম্বর মাসে মিসরের পশ্চিমাঞ্চলীয় একটি জেলায় তার জন্ম। মাত্র ১০ বছর বয়সে পবিত্র কুরআনের হাফেজ হওয়ার গৌরব অর্জন করতে সমর্থ হন তিনি। ১৯৬১ সালে তার কণ্ঠে হাফস পদ্ধতিতে সম্পূর্ণ কুরআনে কারিমের অডিও রেকর্ড সম্পন্ন হয়- ইতিহাসে এটিই সর্বপ্রথম সম্পূর্ণ কুরআনে কারিমের অডিও রেকর্ড। সম্পূর্ণ পারিশ্রমিক বিহীন এই কাজটি আঞ্জাম দেন তিনি। পরবর্তীতে আরো তিন পদ্ধতির তেলাওয়াত রেকর্ড করান শায়খ আল হুসারি।
প্রথম খেদমতটি করার পরে তিনি বলেন, ‘আমার কণ্ঠে হাফসের বর্ণনায় সম্পূর্ণ কুরআনে কারিমের অডিও রেকর্ডের মাধ্যমে মহান আল্লাহ আমাকে অনেক সম্মানিত করেছেন। এই কুরআনের বদৌলতে আমি সাত মহাদেশে আমন্ত্রিত হয়েছি। এটা আল্লাহর অসীম অনুগ্রহ!’
শায়খ মাহমুদ খলিল আল হুসারির মেয়ে ইয়াসমিন হুসারি বলেন, ‘আমেরিকায় এক সফরে আমার বাবা মার্কিন কংগ্রেসে কুরআন তেলাওয়াত করেন। তার তেলাওয়াতে মুগ্ধ হয়ে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জেমি কার্টার তার কাছে কুরআনে কারিমের একটি প্রতিলিপি উপহার চেয়েছিলেন। আমার বাবা আমেরিকার সেই সফরে সর্বপ্রথম উচ্চস্বরে আজানও দেন।’
কুরআনের জন্য নিবেদিতপ্রাণ এই মহামানব ১৯৮০ সালের নভেম্বর মাসে মহান প্রভুর ডাকে সাড়া দিয়ে পরলোক গমন করেন। আমরা মহান রবের কাছে জান্নাতে তার উঁচু মর্যাদা কামনা করি।
শাখখ হুসারির কণ্ঠে সূরা নূহ তেলাওয়াত
সূত্র: আল জাজিরা