রহমত ডেস্ক 16 August, 2022 12:45 AM
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক এমপি বলেছেন, বাংলাদেশ ও বঙ্গবন্ধু অবিচ্ছেদ্য। বঙ্গবন্ধুকে যারা সপরিবারে হত্যা করেছে, তারা বুঝতে পেরেছিল বঙ্গবন্ধু পরিবারের এক ফোটা রক্ত বেঁচে থাকলে বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করা যাবে না। এ থেকেই বোঝা যায় এটি পূর্বপরিকল্পিত, ষড়যন্ত্রমূলক হত্যাকান্ড। বঙ্গবন্ধু নিজেকে খুব সাধারণ মানুষ মনে করতেন। কিন্তু জাতীয় ও আন্তর্জাতিক দৃষ্টিকোণ থেকে তিনি মোটেও একজন সাধারণ মানুষ ছিলেন না। তিনি সারা বিশ্বের দুঃখী মানুষের নেতৃত্ব দেয়ার পর্যায়ে চলে গিয়েছিলেন। এ কারণে তার শত্রু বেড়ে গিয়েছিল। কিন্তু সেই শত্রুরা দেশে একটি ষড়যন্ত্র করে তাকে হত্যা করবে, এটা কখনও ভাবা হয়নি।
মঙ্গলবার (১৬ আগষ্ট) বিকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া মিলনায়তনে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে সম্প্রীতি বাংলাদেশ আয়োজিত ‘বাঙালির শোকের শ্রাবণ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সম্প্রীতি বাংলাদেশের আহ্বায়ক পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন, সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শামসুদ্দীন চৌধুরী মানিক, সাবেক রাষ্ট্রদূত ও সচিব এ কে এম আতিকুর রহমান এবং রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.) মোহাম্মদ আলী শিকদার প্রমুখ।
আইনমন্ত্রী বলেন, জিয়াউর রহমান তো শুরুই করেছিল শাহ আজিজুর রহমানকে প্রধানমন্ত্রী বানিয়ে। শাহ আজিজুর ছিলেন রাজাকার নম্বর ওয়ান। এছাড়াও জিয়াউর রহমানের মন্ত্রিসভার অনেকেই আইয়ুব খানের মন্ত্রী ছিলেন। এ থেকে তো পরিস্কারভাবে বুঝা যায়, মুক্তিযুদ্ধের ধারাকে সম্পূর্ণভাবে বা ৩৬০ ডিগ্রী পরিবর্তন করার জন্যই জিয়াউর রহমান এই হত্যাকান্ড ঘটানোর পর দেশ শাসন শুরু করেছিলেন। তার মানে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে তারা বাংলাদেশকে সম্পূর্ণভাবে হত্যা করতে চেয়েছিল। বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার হওয়ার পর এখন এদেরকে চিহ্নিত না করলে আমরা কিন্তু এই শত্রুদেরকে তাদের নিজেদেরকে লালন-পালন করার অবকাশ দিবো। আমি বলছি না যে তাদের সকলকে জেলখানায় ঢুকাতে হবে, হয়তো অনেকেই মরে গেছেন। তারা জেলখানায় যাওয়ার অনেক দূর চলে গেছেন। কিন্তু এদেরকে এবং এই গোষ্ঠীটাকে যদি আমরা চিহ্নিত করতে পারি এবং তাদের সম্বন্ধে সাবধান থাকতে পারি, তাহলে আমরা ২০৪১ সালে যে উন্নত বাংলাদেশ গড়ার পরিকল্পনা নিয়েছি, সেই জায়গায় পৌঁছাতে পারবো।
বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের বিষয়ে তদন্ত কমিশন গঠন প্রসঙ্গে আইনমন্ত্রী বলেন, কমিশনের রূপরেখা তৈরি করা হয়েছে। প্রথমে করোনা ভাইরাস মহামারি ও পরে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে কমিশন গঠন একটু দেরি হয়ে যাচ্ছে। কমিশন কয় সদস্য বিশিষ্ট হবে, কমিশনের উদ্দেশ্য ও কাজ কী হবে, কিভাবে কাজ করবে তা কমিশনের রূপরেখায় আছে। কমিশনের কাজ হবে অনেকটাই গবেষণামূলক। এই কমিশন গঠনের সাথে জননেত্রী শেখ হাসিনা ওতোপ্রতভাবে জড়িত। তার অভিমত এখানে শিরোধার্য। সেই ক্ষেত্রে তার সাথে আলাপ না করে এটা প্রকাশ করা হবে না। কারণ প্রধানমন্ত্রী এটা সংশোধন, পরিমার্জন, পরিবর্ধন করার কথা বলতে পারেন। তিনি যেটা চূড়ান্ত করে দিবেন সেটাকেই জনগণের সামনে উপস্থাপন করা হবে।