| |
               

মূল পাতা জাতীয় কোন সড়কই বন্যার কবল থেকে রেহাই পায় নি : পরিকল্পনা মন্ত্রী


কোন সড়কই বন্যার কবল থেকে রেহাই পায় নি : পরিকল্পনা মন্ত্রী


রহমত ডেস্ক     04 July, 2022     11:19 PM    


পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, হাওরাঞ্চলের মানুষের উন্নত জীবনযাপনের বিষয়টি বিবেচনা করেই বন্যাসহ সকল প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলার পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। বন্যা হবে, তা মোকাবেলা করতে হবে। তাই বলে উন্নয়ন কাজ বন্ধ করব, তা হতে পারেনা। কারণ, তাদেরও ভাল জীবনমান দিতে হবে। ভয়াবহ বন্যায় যেভাবে স্থাপনা ও অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়েছে, সেভাবে প্রাণহানীর ঘটনা ঘটেনি। কোন সড়কই বন্যার কবল থেকে রেহাই পায় নি, তবে ছোট সড়কগুলো নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। 

আজ (৪ জুলাই) সোমবার বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে ঢাকাস্থ সিলেট বিভাগ সাংবাদিক সমিতি-সিবিসাস আয়োজিত ‘সিলেট অঞ্চলে ঘন ঘন বন্যা; কারণ, পূনর্বাসন ও স্থায়ী সমাধান’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সিলেট বিভাগ সাংবাদিক সমিতি, ঢাকার সভাপতি আজিজুল পারভেজের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ এবং পানি সম্পদ উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীম। সভায় বিশেষজ্ঞ আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন পদ্মা সেতু প্রকল্প বিশেষজ্ঞ প্যানেল, ইমেরিটাস অধ্যাপক ও স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. এম ফিরোজ আহমেদ, বাংলাদেশ পরিবেশ সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি কামরুল ইসলাম চৌধুরী, বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি-বেলা’র প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূ-তত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. কাজী মতীন উদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন-বাপা’র সাধারণ সম্পাদক শরীফ জামাল, ইনস্টিটিউট অব প্লানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট-আইপিডি’র পরিচালক মো. আরিফুল ইসলাম ও রিভার এন্ড ডেল্টা রিসার্চ সেন্টার-আরডিআরসির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ এজাজ। এতে ত্রাণ বিতরণের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন প্রতিদিনের বাংলাদেশ’র সম্পাদক মুস্তাফিজ শফি এবং ধারণাপত্র উপস্থাপন করেন অনুষ্ঠান আয়োজক উপ-কমিটির আহবায়ক এহসানুল হক জসিম।

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, গ্রামাঞ্চলের স্কুলগুলো প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার উপযোগী করে নির্মাণ করায় প্রাণহানির সংখ্যা ব্যাপকভাবে সীমিত সংখ্যায় রাখা সম্ভব হয়েছে। হাওর অঞ্চলে যে ‘ মবিলিটি’ তৈরি হয়েছিল, তা কবে ফিরে পাওয়া যাবে, তা কেউ বলতে পারবে না। কৃষিক্ষেত্রে ত্রাণ সহায়তা দেয়া হচ্ছে, কৃষি পুনর্বাসনের জন্য সার, বীজ, কীটনাশকসহ প্যাকেজের মাধ্যমে বিশেষ সহায়তা দেয়া হবে। দ্রুত সময়ের মধ্যে এই সহায়তা কৃষকদের মধ্যে বিতরণ করা হবে। হাওরাঞ্চলের বেশির ভাগ বাড়ীর ফ্লোর কাঁচা মাটির তৈরি। পানি নেমে গেলেও ফ্লোর বসবাসের জন্য উপযোগী হয়ে উঠছে না। তাই দূর্গম হাওরাঞ্চলের মানুষ বাড়ী ফিরতে পারছে না। সরকারীভাবে গরীব মানুষের ঘরের ফ্লোরগুলো পাকা করে দেয়ার বিষয়ে এবং অন্ততপক্ষে চারটি পাকা খুঁটি দেয়ার বিষয়ে অর্থ বরাদ্দের বিষয়ে প্রস্তাব করা হবে। এক সময় কেউ কারো পাশে দাঁড়াবে সেই পরিস্থিতি থাকতো না। কিন্তু এখন এটা খুবই ভালো দিক, সরকার যাওয়ার আগে মানুষ পৌঁছে গেছে। সরকার অতিসত্ত্বর সুনামগঞ্জ ও সিলেটের মানুষের পুনর্বাসন করবে । 

তিনি আরো বলেন, আমার ক্ষুদ্র জ্ঞানে বলছি, ৩৫ বছরে হাওর এলাকার মানুষের অর্থনৈতিক অবস্থা যে উন্নতি হয়েছে। সক্ষমতা বেড়েছে, তা এ বন্যার ক্ষয়ক্ষতি একশো ভাগের একভাগও হবে না। সার্বিক অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নয়ন হয়েছে। মানুষের সক্ষমতা বেড়েছে। মাথাপিছু আয় গড়ে বেড়েছে, যদিও সবার সমান নয়। শিক্ষার হার বেড়েছে, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন হয়েছে। গত ৩৫ বছরে কোনো গ্রামে সড়কের কাজ বাকি নেই। এমন কোনো সড়ক নেই, যেখানে আমি হাত দিইনি। বন্যায় গ্রামের ছোট ছোট সড়কগুলো প্রায় নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। স্কুল-কলেজ আমরা অবস্থা উন্নতি করে ফেলতে পারবো। কিন্তু সড়ক যে পরিমাণ নষ্ট হয়েছে, আমরা এটা নিয়েই শঙ্কিত। যে পরিমাণ স্থাপনা নষ্ট হয়েছে, সে তুলনায় কিন্তু প্রাণহানি কম হয়েছে। এখানে অর্থনৈতিক ক্ষতিটাই মুখ্য।