রহমত ডেস্ক 21 May, 2022 08:18 PM
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর ও চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীমবলেছেন, গণকমিশন নামে একটি দেশবিরোধী শক্তি দেশকে অনিশ্চিত গন্তব্যে ঠেলে দিতে চাচ্ছে। তারা দেশের সম্মানিত ১১৬জন আলেম এবং ১০০০ মাদরাসার তালিকা করে দেশের সংবিধানবিরোধী কাজ করছে। এজন্য তথাকথিত গণকমিশনকে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। ওই অপশক্তি সাম্প্রদায়িকতাকে উসকে দিতে কাজ করছে। এধরণের দেশ ও ইসলামবিরোধী কর্মকান্ড রুখে দিতে এখনই সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। জনগণ আজ ভালো নেই, সাধারণ মানুষ তাদের চাহিদা সঠিকভাবে পূরণ করতে পারছেনা। কারণ মানুষের নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য লাগামহীনভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে । ভোজ্য তেল, চাল, ডাল, গ্যাস সহ সকল নির্মাণসামগ্রী মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে। অথচ সরকার এটাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। সরকার এ ব্যপারে যথাযথ কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না ফলে সাধারণ মানুষ ক্ষোভে ফুঁসছে কিন্তু প্রতিবাদও করতে পারছে না হামলা-মামলা ও হয়রানির ভয়ে।
আজ (২১ মে) শনিবার দুপুর ২টায় খুলনা রেলষ্টেশন সংলগ্ন কদমতলা রোডে অনুষ্ঠিত বিশাল সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। কথিত ‘গণকমিশন’ কর্তৃক দেশের সম্মানিত ১১৬ জন আলেম ও ১০০০ মাদরাসার বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অভিযোগ এবং ইসলাম ও দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র-চক্রান্তের প্রতিবাদ, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদ, শিক্ষা-সিলেবাসে ধর্মীয় শিক্ষার সংকোচন বন্ধ, ইসলাম, দেশ ও মানবতাবিরোধী মদের বিধিমালা বাতিল, স্বাধীনতার মূল লক্ষ্য-সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা এবং দুর্নীতি ও সন্ত্রাসমুক্ত কল্যাণরাষ্ট্র গঠনে ইসলামী হুকুমত কায়েমের লক্ষ্যে, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ খুলনা বিভাগের উদ্যোগে বিশাল সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
দলের নায়েবে আমীর অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা আব্দুল আউয়ালের সভাপতিত্বে ও শেখ মোঃ নাসির উদ্দিন, হাফেজ আসাদুল্লাহ গালীব ও মুফতী ইমরান হোসাইনের পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, সহকারী মহাসচিব মাওলানা আব্দুল কাদের, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক বেলায়েত হোসেন ও মাওলানা শোয়াইব হোসেন, দপ্তর সম্পাদক মাওলানা লোকমান হোসেন জাফরী, শ্রমিকনেতা মুফতী মোস্তফা কামাল, যুবনেতা ইঞ্জিনিয়ার আতিকুর রহমান মুজাহিদ, ছাত্রনেতা সহ-সভাপতি শরিফুল ইসলাম রিয়াদ প্রমুখ।
চরমোনাই পীর বলেন, স্বাধীনতার ৫১ তম বর্ষে এসেও আজকের সরকার ৭১ পুর্ববর্তী সরকারের মতো, নিপিড়নমূলক আচরণ করছে। মানুষ ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত। আগামী নির্বাচন জাতীয় সরকারের অধীনে দিতে হবে এবং ইভিএম বাতিল করতে হবে। ভোট ডাকাতির মেশিন দিয়ে ভোট গ্রহণ চলবে না। স্বাধীনতা পরবর্তী যারাই ক্ষমতায় এসেছে, তারা সকলেই জনআকাক্ষাকে বাস্তবায়ন করতে ব্যর্থ হয়েছে। গণতন্ত্রের নামে সর্বত্র দলীয়করণ এবং স্বৈরতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে। গুম ও খুনের রাজত্ব কায়েম করেছে। দুর্নীতি মহামারি আকার ধারণ করেছে। রাষ্ট্রের রন্দ্রে রন্দ্রে দুর্নীতি ঢুকে পরেছে। লুটপাট, সুদ -ঘুষ দেশ সয়লাব। যুব সমাজকে ধ্বংষ করতে মদের বিধিমালা প্রণয়ন করতে সরকার ও মরিয়া হয়ে উঠেছে। ভরা মৌসুমেও চালের দাম বৃদ্ধি মেনে নেয়া যায় না। সরকার সিন্ডিকেটের কাছে হার মেনেছে। এরমধ্যে আবার বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে। এভাবে একটি দেশ চলতে পারে না।
তিনি আরো বলেন, ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগ নবম জাতীয় সংসদে একতরফাভাবে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী পাশ করার পর থেকেই রাজনৈতিক সংকটে নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে। রাজনৈতিক সংকট উত্তরণে বার বার দাবী জানিয়ে আসছি। দেশের প্রায় সব রাজনৈতিকদল এবং নাগরিকসমাজের প্রতিনিধিগণ সংকট সমাধানের উদ্যোগ গ্রহণের কথা বলে আসলেও, কার্যকর কোন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি। আওয়ামীলীগ সরকার দেশের নির্বাচন ব্যবস্থাকেই ধ্বংস করে ফেলেছে। বিগত ১৩ বছরে দেশে কোন সুষ্ঠু নির্বাচন হয়নি। আবারও ২০১৪ ও ১৮ এর নির্বাচনের মতো নির্বাচনের নামে প্রহসন হবে। রাতের ভোটে নির্বাচিত বর্তমান সংসদের কোন নৈতিক বৈধতা নেই। সিলেট বিভাগের বিভিন্ন অঞ্চলে বন্যায় পানিবন্দী দূর্দশাগ্রস্থ মানুষের পাশে দাড়ানোর জন্য দলের নেতা-কর্মী এবং বিত্তবানদের প্রতি আহবান জানান। সরকারের প্রতি প্রয়োজনে হেলিকপ্টারে পানিবন্দী মানুষের কাছে ত্রাণ পৌছে দেয়ার আহবান জানান তিনি।