রহমত ডেস্ক 03 May, 2022 04:56 PM
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সাজাপ্রাপ্ত হাজি সেলিম চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার অনুমতি পেলেও খালেদা জিয়াকে রাজনৈতিক কারণেই সরকার বিদেশে চিকিৎসার সুযোগ দিচ্ছে না। সাজাপ্রাপ্ত হাজি সেলিম চিকিৎসার জন্য বিদেশ যাত্রা থেকে প্রমাণিত হয় যে, দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে সম্পূর্ণ রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে আটক করে রাখা হয়েছে। এজন্য শুধু আমরা নই বিদেশেও বলা হচ্ছে যে, সম্পূর্ণ রাজনৈতিক কারণে তাকে এ সাজা দেওয়া হয়েছে। ঈদে আমরা সবসময় এ প্রত্যাশা করি যে, দেশের সব মানুষের মধ্যে আনন্দ আসবে ও আনন্দের সঙ্গে তারা ঈদুল ফিতর পালন করবেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যের ব্যাপার যেভাবে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে, যেভাবে দেশে অর্থনৈতিক অবস্থা খারাপ হচ্ছে ও একই সঙ্গে সাধারণ মানুষ কর্মচ্যুত হচ্ছেন সেখানে আনন্দের সঙ্গে ঈদুল ফিতর পালন করা সম্ভব হচ্ছে না। সে কারণে ।
আজ (৩ মে) মঙ্গলবার সকালে শেরে বাংলা নগরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবর জিয়ারত ও পুস্পমাল্য অর্পণের পর দেশের বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরে তিনি এসব কথা বলেন। সকাল সাড়ে ১১টায় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান জিয়াউর রহমানের সমাধিস্থলে এসে তার কবরে পুস্পমাল্য অর্পণ করে ফাতেহা পাঠ করেন।এ সময়ে উপস্থিত ছিলেন, জয়নুল আবদিন ফারুক, রুহুল কবির রিজভী, মাহবুব উদ্দিন খোকন, হাবিব উন নবী খান সোহেল, মীর সরফত আলী সপু, আমিরুল ইসলাম খান আলিম, ঢাকা মহানগরে আমিনুল হক, রফিকুল আলম মজনু, হাবিবুর রশীদ হাবিব, স্বেচ্ছাসেবক দলের মোস্তাফিজুর রহমান, আবদুল কাদির ভূঁইয়া জুয়েল, ওলামা দলের শাহ নেছারুল হক, মৎস্যজীবী দলের রফিকুল ইসলাম মাহতাব, আবদুর রহীম, তাঁতী দলের আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ। কারাভোগের আগে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া প্রতিটি ঈদে তার স্বামীর কবর জিয়ারত করতেন। সেই ধারাবাহিকতা রক্ষায় মহাসচিবসহ নেতারা প্রতিবছর জিয়ার কবর জিয়ারত করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, সারাদেশে আমাদের প্রায় ৩৫ লাখ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে তাদের আসামি করা হয়েছে। প্রায় ৬শ’র বেশি নেতা-কর্মীকে গুম করা হয়েছে। সহাস্রাধিক নেতা-কর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। এরকম একটা চরম ফ্যাসিবাদী শাসনে আজকে গণতান্ত্রিক অধিকারকে সম্পূর্ণভাবে হরণ করা হয়েছে। মানুষের যে মৌলিক অধিকারগুলো আছে তা থেকে তারা বঞ্চিত হচ্ছে। আপনারা দেখেছেন যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকার রিপোর্ট যেটা কিছুদিন আগে বেরিয়েছে। সেখানে দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার মামলাকে সম্পূর্ণভাবে রাজনৈতিক মামলা ও সাজা দেওয়াটাও রাজনৈতিক প্রতিহিংসার জন্য দেওয়া হয়েছে। সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই যারা এদেশে গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছেন, লড়াই করেছেন, যারা স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের জন্য লড়াই করেন তাদের বিরুদ্ধে এ ধরনের দমনমূলক ব্যবস্থা নিচ্ছে তারা। বিশেষ করে দেশনেত্রী খালেদা জিয়া যিনি স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের প্রতীক, গণতন্ত্রের প্রতীক, গণতন্ত্রের মাতা তাকে অন্যায়ভাবে আটক করে রেখে ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করতে চায়।
তিনি বলেন, আমরা পরম করুনাময় আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি, তিনি যেন এ অবস্থার অবসান ঘটান। আমরা যেন এ স্বৈরশাসনের অবসান ঘটিয়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে পারি। আমরা যেন দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে পারি ও আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনতে পারি- এ হচ্ছে আজকে আমাদের প্রার্থনা। ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার দিনে আমরা দলের প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মাজারে আসি জিয়ারত করতে। এবার অত্যন্ত ভারাক্রান্ত হৃদয়ে আমরা এখানে এসেছি। কারণ দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া গৃহবন্দি অবস্থায় আছেন। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান মিথ্যা মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে বিদেশে নির্বাসিত অবস্থায় আছেন।