রহমত ডেস্ক 09 April, 2022 04:37 PM
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যক্ষ মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী বলেছেন, দেশে দ্রব্য মূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকার পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে। সরকারের প্রভাবশালী কিছু লোকজনের ছত্রছায়ায় গঠিত সিন্ডিকেটের কারণে চাল, ডাল, তেল, আলুসহ সব নিত্যপণ্যের দাম এখন আকাশচুম্বি। এতে করে নিম্ন ও নিম্ন মধ্যবিত্ত জনগোষ্ঠী তাদের দৈনন্দিন প্রয়োজন মিটাতে অক্ষম হয়ে পড়েছে। দেশ জুড়ে চলছে হাহাকার। অথচ এ বিষয়ে সরকারের উল্লেখযোগ্য কোন পদক্ষেপ নেই বরং মন্ত্রীদের দায়িত্বজ্ঞানহীন বক্তব্য জনজীবনে সৃষ্ট ক্ষত আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে। এক্ষেত্রে সরকার শতভাগ ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে।
শুক্রবার (০৮ এপ্রিল) বিকেলে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর উত্তর আয়োজিত সাঈদনগর ভাটারাস্থ আস-সাঈদ মিলনায়তনে “আত্মশুদ্ধি অর্জনে মাহে রমজানে আমাদের করণীয়”-শীর্ষক এক আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সংগঠনের ঢাকা মহানগর উত্তর সভাপতি অধ্যক্ষ মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ইফতার মাহফিলে বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগর উত্তরের সহ-সভাপতি আলহাজ্ব আনোয়ার হোসেন, মুফতী ওয়ালী উল্লাহ, সেক্রেটারী মাওলানা আরিফুল ইসলাম, সহকারী সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতী ফরিদুল ইসলাম, প্রচার ও দাওয়াহ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার গিয়াস উদ্দিন পরশ, অর্থ সম্পাদক ডা. মুজিবুর রহমান, ছাত্র ও যুব সম্পাদক এ্যাডভোকেট শওকত আলী প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।
সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী বলেন, দেশে আজ কাঁচাবাজার থেকে শুরু করে ভোজ্য তেল, গ্যাসসহ নিত্য প্রয়োজনীয় সব কিছুই সিন্ডিকেট দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। শুধু এই সরকার নয়, আগের সরকারগুলোর সময়ও আমরা দেখেছি, সিন্ডিকেটের কারণে হঠাৎ করেই জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যায়। সরকার চাইলে এদের নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। কিন্তু সরকার এটা করবে না। কারণ মূল্যবৃদ্ধির পেছনে আওয়ামী লীগের মন্ত্রী এবং তাদের নেতাদের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। তারা দুর্নীতি করে ফুলেফেঁপে উঠেছে।
তিনি বলেন, প্রতিটি ইসলামী রাষ্ট্রে ভোক্তাদের সুবিধার্থে রমজান মাসে সব কিছুর দাম কমে। অথচ বাংলাদেশ একমাত্র দেশ যেখানে উল্টো চিত্র দেখা যায়। এ পরিস্থিতি থেকে রেহাই পেতে হলে দেশে ইসলামী শাসন ব্যবস্থা কায়েম করার কোন বিকল্প নেই। এসময় তিনি সবাইকে ইসলামের ছত্রছায়ায় আসার আহ্বান জানান।
নওগাঁর মহাদেবপুরে দাউল বারবাকপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে হিজাব পরে আসায় ১৮ ছাত্রীকে মারধর করার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ৯২ ভাগ মুসলমানের দেশে মুসলমানরা তাদের ধর্মীয় রীতিনীতি অনুযায়ী চলতে গেলেও সেখানে নানা ষড়যন্ত্র ও বাঁধা-বিপত্তির শিকার হচ্ছে। বিভিন্ন গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, জাতীয় সংগীত চলাকালীন বিদ্যালয়টির সহকারী প্রধান শিক্ষিকা হিজাব পরিধান করা ছাত্রীদের চরম অপমান ও মারধর, অশালীন ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং হিজাব না পরে স্কুলে আসতে বলেন। হিজাব পরে স্কুলে আসায় প্রায় ১৮ জন ছাত্রীকে মারধরও করেন। যা মুসলমানদের কলিজায় আঘাত করে। এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানান তিনি। নচেৎ সাম্প্রদায়িক সম্পৃতি বিনষ্টের জন্য সরকার ও প্রশাসন দায়ী থাকবে।
সভাপতির বক্তব্যে অধ্যক্ষ মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ বলেন, করোনা ভাইরাস সংক্রমণের হার কমে যাওয়ায় মানুষ স্বাভাবিক জীবনে ফেরার চেষ্টা করছে। এমন সময় প্রতিটি নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য দুই থেকে চারগুণ বেশি দামে কিনতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। পাশাপাশি জ্বালানি ও ভোজ্য তেল, গ্যাস ও পানির মূল্যকৃদ্ধি ‘মরার ওপর খাঁড়ার ঘা’।
তিনি বলেন, জনগণের দুঃখ-কষ্ট লাঘবের জন্য কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে না সরকার বরং কালোবাজারী, মজুতদার ও মুনাফাখোরদের দৌরাত্মকে প্রশ্রয় দিচ্ছে। সরকারের কর্তা ব্যক্তিরা দুর্নীতি করে অর্থ লোপাট করলে এর ভর্তুকি জনগণকে দিতে হয়। জনগণের ওপর করের বোঝা চাপিয়ে দেওয়া হয়। গ্যাস, পানি, বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি করা হয়। জন দুর্ভোগের প্রতি দৃষ্টি না দিয়ে নিজেদের ক্ষমতা কুক্ষিগত করতেই সরকার ব্যস্ত। কিন্তু দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া জনগণ সরকারের এই নিষ্ঠুর খেলা আর বরদাস্ত করবে না।