মূল পাতা শিক্ষাঙ্গন হিজাব পরে স্কুলে আসায় ১৮ ছাত্রীকে পেটালেন শিক্ষিকা আমোদিনি পাল
রহমত ডেস্ক 07 April, 2022 02:39 AM
নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার দাউল বারবাকপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে হিজাব পরায় গাছের ডাল দিয়ে ১৮ জন ছাত্রীকে পেটানোর অভিযোগ উঠেছে এক শিক্ষিকার বিরুদ্ধে। বুধবার (৬ এপ্রিল) দুপুরে উপজেলার দাউল বারবারপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা আমোদিনি পালের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় এলাকায় ক্ষোভে ফেটে পড়েন অভিভাবকেরা।
ঘটনা জানাজানি হলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে চারদিকে। পরে কয়েকশ’ অভিভাবক বৃহস্পতিবার (৭ এপ্রিল) দুপুরে ওই স্কুলে গিয়ে এর প্রতিবাদ জানান। পরে অভিভাবকরা উপজেলা নির্বাহী অফিসার, শিক্ষা অফিসার ও থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বুধবার (০৬ এপ্রিল) দুপুরে স্কুলে হিজাব পরে যাওয়ার কারণে লাঠি দিয়ে পিটুনি শুরু করে ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা আমোদিনী পাল। তখন তিনি বলেন, ‘কাল থেকে যদি হিজাব ও মাস্ক পরে আসো তাহলে পিটিয়ে তোমাদের পিঠের চামড়া তুলে নেওয়া হবে।’ এরপরই বাড়িতে চলে যায় অষ্টম, নবম ও দশম শ্রেণিতে পড়ুয়া প্রায় ১৮ জন শিক্ষার্থী। পরে ঘটনা জানাজানি হলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে চারদিকে।
নির্যাতনের শিকার ওই স্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী সাদিয়া আফরিন অভিযোগ করে বলেন, বুধবার দুপুরে জাতীয় সঙ্গীতের পর লাইনে দাঁড়ানো অবস্থায় শিক্ষিকা আমোদিনী পাল কেন হিজাব পরে স্কুলে এসেছি জিজ্ঞাসা করেই ইউক্যালিপ্টাস গাছের ডাল দিয়ে পেটাতে থাকেন।
সাদিয়া বলেন, শিক্ষিকা তাদেরকে বলেন, ‘স্কুলে কোনো পর্দা চলবে না। ঢং করে আসছ। বাসায় গিয়ে কি বোরকা পরে থাক? যখন তোমরা মহাদেবপুর বাজারে যাবে তখন পর্দা করবে। স্কুলে এলে মাথার কাপড় ফেলে আসবে।’ তিনি ছাত্রীদের হিজাব খুলে ফেলার জন্য টানাটানি করেন। যারা হিজাব ছাড়া শুধু মাস্ক পরে এসেছিল তাদের মাস্কও খুলে দেন। তিনি হুমকি দেন যে, ‘কাল থেকে যদি হিজাব ও মাস্ক পরে আসো তাহলে পিটিয়ে তোমাদের পিঠের চামড়া তুলে নেওয়া হবে।’
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার হাবিবুর রহমান হিজাব পরায় স্কুলছাত্রীদের পেটানোর কথা স্বীকার করে বলেন, ‘আগে তাকে শোকজ করা হবে। তারপর তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
জেলা শিক্ষা অফিসার মো. লুৎফর রহমান জানান, এ বিষয়ে তিনি অবগত নন। তবে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত হয়ে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।