রহমত ডেস্ক 30 March, 2022 10:24 AM
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব বলেছেন, জাতিরাষ্ট্র হিসেবে স্বাধীনতার ৫০ বছর পর আমাদের অর্জন, সফলতা ও ব্যর্থতার মূল্যায়ন করতে হবে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে প্রতিশ্রুত ‘সাম্য’, ‘মানবিক মর্যাদা’ ও ‘সামাজিক সুবিচার’র আলোকে। কিন্তু ঔপনিবেশিক শাসন কাঠামো বহাল থাকায় গত ৫০ বছরে স্বাধীনতার লক্ষ্য অর্জনে আমরা কাঙ্ক্ষিত সাফল্য অর্জন করতে পারিনি। এ স্বৈরাচারকে রুখতে হলে আবার হয়তো রক্ত দিতে হবে, জীবন দিতে হবে, আরেকটা লড়াইয়ে লড়তে হবে। আপসে ছাড়বে না। সংবিধান সংস্কার, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা, মানবাধিকারের নিশ্চয়তা, রাষ্ট্র মেরামত ও নিরপেক্ষ নির্বাচন- ক্ষমতার পরিবর্তন ও গণমুখী রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা প্রবর্তনে এ পাঁচটি মৌলিক প্রশ্নে জাতীয় ঐক্য গড়ার আহ্বান জানান তিনি।
মঙ্গলবার (২৯ মার্চ) বিকেলে জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি আয়োজিত ‘আকাঙ্ক্ষিত বাংলাদেশ: বাস্তবতা ও করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রবের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন গণফোরাম নেতা অধ্যাপক আবু সাইয়িদ, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, জেএসডি কার্যকরী সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. সিরাজ মিয়া, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ছানোয়ার হোসেন তালুকদার, ভাসানী অনুসারী পরিষদের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য নঈম জাহাঙ্গীর, রাষ্ট্রসংস্কার আন্দোলনের অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ুম ও জেএসডির স্থায়ী কমিটির সদস্য তানিয়া রব প্রমুখ।
লিখিত বক্তব্যে আবদুর রব বলেন, পাঁচটি মৌলিক প্রশ্নের ভিত্তিতে দফাওয়ারি ন্যূনতম কর্মসূচি প্রণয়ন করে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের ঘোষণা করাই এ মুহূর্তে আশু করণীয়। এ ‘ঐতিহাসিক অনিবার্যতা’কে কেন্দ্র করেই রাজনীতিতে বিস্ফোরণ ঘটবে এবং মৌলিক পরিবর্তনের সূচনা হবে। রাষ্ট্র পুনর্গঠনে ইতিহাস যে সুযোগ আমাদের দিয়েছে, তা যেন দলীয় সংকীর্ণতায় হাতছাড়া হয়ে না যায়। রাষ্ট্রের সব নাগরিক জবাবদিহি করতে বাধ্য, ন্যায়পালের অংশটা উনারা (সংবিধান প্রণেতারা) সংবিধানে রেখেছিলেন। কিন্তু গত ৫০ বছরে ন্যায়পাল নিয়োগ হয়নি। ন্যায়পাল নিয়োগ হলে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীকেও জবাবদিহি করতে হবে।উপর থেকে নিচ পর্যন্ত প্রত্যেককে জবাবদিহি করতে হবে। এ জবাবদিহি ব্যবস্থা না থাকার করণে সংসদীয় স্বৈরাচার কায়েম হয়েছে। এ স্বৈরাচারকে রুখতে হলে আবার হয়তো রক্ত দিতে হবে, জীবন দিতে হবে, আরেকটা লড়াইয়ে লড়তে হবে। আপসে ছাড়বে না।
তিনি আরো বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় অধিকাংশ জনগণ ছিল স্বাধীনতার পক্ষে। আজকে অধিকাংশ জনগণ এ স্বৈরাচারি সরকারের বিপক্ষে। জনগণের মনে দুঃখ, ক্ষোভ, ব্যথা-বেদনা ও যন্ত্রণা আছে। মানুষের আকাঙ্ক্ষা এ সরকারের পরিবর্তন। এজন্য জনগণই মাঠে নেমে যুদ্ধ করবে। আরেকটা গণযুদ্ধ ছাড়া এ সরকারের পতন ঘটানো যাবে না। জনগণের অধিকার ও ক্ষমতা প্রতিষ্ঠা করা যাবে না। কারণ, বাংলাদেশে কেউ আপসে যেতে চায় না। সরকার ভোটারবিহীন নির্বাচনের মধ্য দিয়ে ক্ষমতা ধরে রাখার স্বার্থে রাষ্ট্রের প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের সংস্থাকে সংবিধানবহির্ভূত কাজে সম্পৃক্ত করেছে। রাষ্ট্রের আভ্যন্তরীণ এবং ক্ষমতা বিভাজন বিনষ্ট করে ফেলেছে। সংবিধান এবং রাষ্ট্র এখন সরকারের ইচ্ছাধীন চলছে। কথা বলার অধিকার, ফৌজদারি মামলায় সুবিচার পাওয়ার অধিকারসহ জন্মগত নাগরিক অধিকার সবকিছুই সরকারের করুণার ওপর নির্ভরশীল।