মূল পাতা আন্তর্জাতিক আমি শুধু আমার পরিবারকেই বিশ্বাস করি : জেলেনস্কি
আন্তর্জাতিক ডেস্ক 10 March, 2022 06:06 PM
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির বলেছেন, আমি পরিবার ছাড়া কাউকে বিশ্বাস করি না। আমি শুধু আমার পরিবারকেই বিশ্বাস করি তিনি এখনো দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন, ঘটনাক্রমে পুতিন সহিংসতা থামাবেন এবং তাদের সঙ্গে সমঝোতা করতে বাধ্য হবেন। বুধবার (৯ মার্চ) কিয়েভে আমেরিকান-কানাডিয়ান সম্প্রচারমাধ্যম ভাইসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন।
জেলেনস্কিকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, রুশ প্রেসিডেন্ট সমঝোতা করবেন বলে মনে করেন কি না? জবাবে তিনি বলেন, আমার মনে হয়, করবেন। পুতিন দেখতে পাচ্ছেন যে, আমরা শক্তিশালী। তিনি সমঝোতা করবেনই। আমাদের শুধু কিছুটা সময় দরকার। একপর্যায়ে জেলেনস্কিকে প্রশ্ন করা হয়, তিনি কি পুতিনকে বিশ্বাস করেন? এতে তার সোজা-সাপটা জবাব, বিশ্বাস? না, না। আমি শুধু আমার পরিবারকেই বিশ্বাস করি। তবে এরপরও শুধু আলোচনার মাধ্যমেই এই যুদ্ধ শেষ করা সম্ভব বলে মনে করেন তিনি। তাই তো রুশ প্রেসিডেন্টের উদ্দেশে তার বার্তা, ‘যুদ্ধ বন্ধ করুন। আলোচনা শুরু করুন। এটাই সব।’
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ইউক্রেনে কথিত ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ শুরু করেছে রাশিয়া। এরপর থেকে ইউক্রেনে চার শতাধিক বেসামরিক মানুষ হতাহত ও রাশিয়ার কয়েক হাজার সৈন্য নিহত হয়েছে বলে দাবি করেছে ইউক্রেন। তবে এই লড়াইয়ে পশ্চিমা মিত্রদের সরাসরি পাশে পায়নি দেশটি। প্রবল পরাক্রমশালী রুশ বাহিনীর বিপক্ষে তাদের লড়তে হচ্ছে একাই। রাশিয়া আক্রমণ করলে যুক্তরাষ্ট্রসহ ন্যাটো দেশগুলো সৈন্য-সামন্ত নিয়ে এগিয়ে আসবে বলে ধারণা ছিল ইউক্রেনের। কিন্তু ন্যাটো পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছে, তারা ইউক্রেন যুদ্ধে সরাসরি হস্তক্ষেপ করবে না। এমনকি রুশ আগ্রাসন ঠেকাতে ইউক্রেনের আকাশে ‘নো ফ্লাই জোন’ ঘোষণা দিতেও আপত্তি জানিয়েছে পশ্চিমা এই সামরিক জোট।
এখন পর্যন্ত রুশ আগ্রাসন ঠেকাতে ইউক্রেনে অস্ত্র সরবরাহ আর মস্কোর ওপর বড় বড় নিষেধাজ্ঞা দিয়েই ক্ষান্ত পশ্চিমা দেশগুলো। কিন্তু লড়াই করার মতো সৈন্য না থাকলে শুধু অস্ত্র দিয়ে কী হবে, তা হাড়ে হাড়ে বুঝতে পারছেন ইউক্রেনীয়রা। এ অবস্থায় গত ৭ মার্চ রাতে এবিসি নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জেলেনস্কি জানিয়েছেন, ইউক্রেন ন্যাটোয় ঢোকার জন্য আর জোর দিচ্ছে না, তাদের এই জোটে ঢোকার আগ্রহ কমে গেছে। শুধু তা-ই নয়, ইউক্রেনের যে দুটি বিচ্ছিন্নতাবাদী অঞ্চলকে রাশিয়া স্বাধীনতার স্বীকৃতি দিয়েছে, কিয়েভ প্রশাসন তা নিয়েও আপস করতে প্রস্তুত বলে ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। জেলেনস্কির এই মন্তব্যে যুদ্ধ সমাপ্তির নতুন আশা দেখা যাচ্ছে। কারণ, রাশিয়া আক্রমণ করেছে মূলত ইউক্রেনের ন্যাটোয় যোগদান ঠেকানো ও রুশপন্থি বিচ্ছিন্নতাবাদীদের নিরাপত্তার ‘অজুহাতে’। এরই মধ্যে শান্তি আলোচনার জন্য বৃহস্পতিবার তুরস্কে পৌঁছেছেন রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ ও ইউক্রেনীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্র কুলেবা।