| |
               

মূল পাতা সারাদেশ যুবলীগ নেতার স্ত্রীর অত্যাচারে খাদ্য বিভাগের নারী কর্মীর আত্মহত্যা


যুবলীগ নেতার স্ত্রীর অত্যাচারে খাদ্য বিভাগের নারী কর্মীর আত্মহত্যা


রহমত ডেস্ক     07 March, 2022     05:27 PM    


মাদারীপুরে মুক্তা বেগম (৩০) নামে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয়ের এক নারী কর্মী আত্মহত্যা করেছেন। স্থানীয় যুবলীগ নেতা কামাল হোসেনের সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগ এনে ওই নেতার স্ত্রী নারগিস আক্তার সিমা তাকে চরিত্রহীন অপবাদ দেওয়ার কারণেই তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে দাবি করেছে মুক্তার পরিবারের। মুক্তা বেগম মাদারীপুর খাদ্য বিভাগে নিরাপত্তা প্রহরী হিসেবে দায়িত্বরত ছিলেন। গত শনিবার (৬ মার্চ) রাতে মাদারীপুর পৌর শহরের একটি ভাড়া বাসায় ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে তিনি আত্মহত্যা করেন।  এ ব্যাপারে মাদারীপুর সদর মডেল থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা করা হয়েছে।

ভুক্তভোগী পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মাদারীপুর জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণির একজন নারী কর্মী ছিলেন মুক্তা বেগম। তিনি শহরের একটি ভাড়া বাসায় তার পরিবার নিয়ে বসবাস করতেন। একই এলাকার যুবলীগ নেতা কামাল হোসেনের সঙ্গে মুক্তা বেগমের স্বামীর বন্ধুত্ব থাকায় তাদের বাড়িতে মাঝে মাঝে আশা-যাওয়া করতেন। এ বিষয়টি নিয়ে কামালের স্ত্রী নারগিস আক্তার সন্দেহ করেন তাদের মাঝে অনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে। অনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগ এনে মুক্তা বেগমকে মাদারীপুর থেকে বদলি কারানোর জন্য বিভাগীয় খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কাছে অভিযোগ দেন কামালের স্ত্রী। এ ছাড়া বিভিন্ন সময় তাকে মোবাইলে হুমকি-ধামকিসহ বিভিন্ন ধরনের বাজে মন্তব্য করে আসছিলেন নারগিস আক্তার। নারগিস আক্তার তাদের ভাড়া বাসা ত্যাগ করে অন্যত্র চলে যাওয়ার জন্যও চাপ প্রয়োগ করেছিলেন। গত শনিবার রাতে নারগিস আক্তার মুক্তার বাসায় গিয়ে তাকে চরিত্রহীন বলে গালিগালাজ করে। এরপর পর রাতেই মুক্তা বাসায় দরজা বন্ধ করে ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন। পরে পুলিশ গিয়ে তার মরদেহ উদ্ধার করে। ময়নাতদন্ত করে রোববার দুপুরে স্বজনদের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়।

মুক্তা আক্তারের পরিবার অভিযোগ করে জানান, কামাল হোসেনের স্ত্রী নারগিস আক্তার সীমা বিভাগীয় খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কাছে অভিযোগে দেওয়ার পরই জেলা খাদ্য বিভাগ থেকে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটি প্রদান করা হয় চরমুগরিয়া খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আল আমিনকে। অন্য সদস্যরা হলেন- মাদারীপুর জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয়ের প্রধান অফিস সহকারী আব্দুর রাজ্জাক, উপ খাদ্য পরিদর্শক শিপন মিয়া। পরে তদন্ত কমিটি তদন্ত ছাড়াই মুক্তার বিরুদ্ধে প্রতিবেদন প্রদান করে বলে অভিযোগ।

উপ খাদ্য পরিদর্শক শিপন মিয়া বলেন, শনিবার রাতে নারগিস আক্তার গিয়ে মুক্তাকে গালিগালাজ করে। এরপরই আত্মহত্যা করেছে। আমরা ধারণা করছি গালিগালাজ করার কারণেই আত্মহত্যা করেছেন তিনি।

নিহতের মেয়ে বলেন, নারগিস আক্তার সিমার মানসিক অত্যাচারের কারনেই আমার মা আত্মহত্যা করেছে। নারগিস মাঝে মাঝে আমাদের বাসায় এসে আমার আম্মুর সাথে খারাপ আচরণ করত। অত্যন্ত খারাপ মহিলা নারগিস। তিনি আমার আম্মুকে নারায়ণগঞ্জ বদলি করেছে। এটি একটি হত্যাকাণ্ড। পুলিশ যেন তদন্ত করে সঠিক বিচার করে।

মাদারীপুর সদর থানার ওসি কামরুল হাসান মিয়া বলেন, এই ঘটনায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে। আত্মহত্যার কারণ খুঁজে বের করতে পুলিশ কাজ শুরু করেছে।


এই এলাকার অন্যান্য সংবাদ দেখতে ক্লিক করুন: ঢাকা মাদারীপুর মাদারীপুর সদর