রহমত ডেস্ক 06 January, 2022 08:16 PM
নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে রাষ্ট্রপতির চলমান সংলাপকে ‘সময়ের অপচয়’ বলে উল্লেখ করে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেছেন, এ সংলাপ অপ্রয়োজনীয় ও প্রচারসর্বস্ব। রাষ্ট্রপতি ব্যক্তিগতভাবে যা–ই মনে করুন না কেন, প্রধানমন্ত্রীর মতামত ও পরামর্শের বাইরে সাংবিধানিকভাবে তাঁর কিছুই করার অবকাশ নেই। বিগত দুই নির্বাচন কমিশন এবং তার আগে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ ও সার্চ কমিটির অভিজ্ঞতাই এর বড় নজির। এ সংলাপে তাঁর দল অংশ নেবে না। সরকারি দলের পছন্দের বাইরে এবারের নির্বাচন কমিশন গঠিত হওয়ার কোনো সুযোগ নেই, নির্বাচন কমিশনসহ নির্বাচনী ব্যবস্থা ধসে পড়ার সংকটটি রাজনৈতিক। রাষ্ট্রপতির ওপর ভর দিয়ে এ সংকটের সমাধান করা যাবে না। প্রয়োজনীয় আইন প্রণয়ন করে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনে দ্রুত উদ্যোগ নিতে রাষ্ট্রপতি সরকারকে পরামর্শ দিতে পারেন। রাজনৈতিক সদিচ্ছা থাকলে সময় কোনো সমস্যা নয়।
আজ (৬ জানুয়ারি) বৃহস্পতিবার সকালে সেগুনবাগিচায় সংহতি মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা জানান। এর আগে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি) ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সংলাপের আমন্ত্রণ পেয়েও অংশ নেয়নি। এ ছাড়া বিএনপি আগেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে এ সংলাপে অংশ নেবে না। এর আগে, গত ২০ ডিসেম্বর চলমান সংলাপের প্রথম দিনে সংসদে প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সাথে আলোচনায় বসেন রাষ্ট্রপতি। এখন পর্যন্ত ১৫টি রাজনৈতিক দলের সাথে ১০ দিনে পৃথক পৃথকভাবে বৈঠক করেছেন রাষ্ট্রপতি।
৬ জানুয়ারি গণফ্রন্টের সাথে সন্ধ্যা ছয়টায় এবং লিবারেল ডেমোক্রেটিক পাটির্র (এলডিপি) সাথে সন্ধ্যা সাতটায় সংলাপের কথা রয়েছে। কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সাথে ৯ জানুয়ারি সন্ধ্যা ছয়টায় এবং বাংলাদেশ মুসলিম লীগ-বিএমএল’র সঙ্গে ওই দিন সন্ধ্যা সাতটায় আলোচনা হবে। ১০ জানুয়ারি সোমবার সংলাপ হবে জাতীয় পার্টি-জেপির সাথে সন্ধ্যা ছয়টায় এবং জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডির সাথে সন্ধ্যা সাতটায়। মঙ্গলবার ১১ জানুয়ারি সন্ধ্যা ছয়টায় সংলাপ হবে ইসলামী ফ্রন্ট বাংলাদেশের সাথে এবং ঐদিন সন্ধ্যা সাতটায় বৈঠক হবে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির সাথে। ১২ জানুয়ারি বিকেল চারটায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির সাথে সংলাপ হওয়ার কথা রয়েছে এবং ন্যাশনাল পিপলস্ পার্টির সাথে একই দিনে সন্ধ্যা ছটায় আলোচনা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলোচনার তারিখ এখনো নির্ধারিত হয়নি। এর আগে নবম, দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে রাজনৈতিক দলগুলোর অংশগ্রহণে সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছিল। রাষ্ট্রপতিকে সিইসি এবং অনধিক চারজন নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। গত কয়েকটি মেয়াদে রাষ্ট্রপতি 'সার্চ কমিটি'র সুপারিশের ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন গঠন করেছেন। বর্তমান ইসির পাঁচ বছরের মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি। এ সময়ের মধ্যেই রাষ্ট্রপতি নতুন কমিশন গঠন করবেন, যাদের অধীনে অনুষ্ঠিত হবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন।