ইসলাম ডেস্ক 02 January, 2022 09:18 AM
যুগের ইমামতুল্য মনীষী, মুফতী সাঈদ আহমদ পালনপুরী রহ. জীবদ্দশায়ই লাউড স্পিকারে উচ্চস্বরে সম্মিলিত যিকিরকে বিদআত আখ্যায়িত করেছেন। এরপর বিশ্বের নানান জায়গা থেকে এ বিষয়ে দারুল উলূমের ফতোয়া বিভাগে প্রশ্ন আসতে থাকে।
ইংল্যান্ডের এক ভাই জানতে চান, আমাদের শাইখ প্রতি সপ্তাহে উচ্চস্বরে যিকির করান। যিকিরের সময় লাইট অফ করে দেয়া হয়। তিনি লাউড স্পিকারে উচ্চস্বরে যে শব্দ বলেন, সে শব্দেই সবাই যিকির করে। আমি মুফতী সাঈদ আহমদ পালনপুরীর আলোচনা শুনেছি। তিনি এটাকে বিদআত বলেছেন। অনুগ্রহপূর্বক আমাদের দিকনির্দেশনা দিন। আমারা কী যিকিরের ওই মজলিসে অংশগ্রহণ করব, না করব না?
দারুল উলূম দেওবন্দের জবাব:
যিকিরের যে পদ্ধতি আপনি উল্লেখ করেছেন, তা বিশুদ্ধ নয়। এমন পদ্ধতি বর্জনীয়। যদি আপনার শাইখ আপনাকে (১২ তাসবীহ) যিকিরের অনুমতি দিয়ে থাকেন, তাহলে আপনার ঘরে একাকী ফজরের পূর্বে বা পরে আদায় করে নিন। যিকির স্রেফ আল্লাহর জন্য করুন। লাউড স্পিকারের যিকির লৌকিকতা মাত্র। এসবের কোনো সওয়াব হবে না। যিকির শিখিয়ে দেয়ারও প্রয়োজন নেই। পীরের বলা শব্দে সম্মিলিতভাবে যিকির করা বিদআত। এমনটি পরিহারযোগ্য। (লিঙ্ক: https://darulifta-deoband.com/home/ur/tasawwuf/169983)
এক হিন্দুস্তানীর প্রশ্ন:
১. লাউড স্পিকারে হোক বা লাউড স্পিকার ছাড়া, উচ্চস্বরে যিকির করা যাবে কি?
২. শাইখুল হাদীস মুফতী সাঈদ আহমদ পালনপুরী সাহেব লাউড স্পিকারে উচ্চস্বরে যিকির করানোকে বিদআত বলেছেন। এটি কী সঠিক?
৩. মাওলানা কামরুজ্জামান এলাহাবাদী সাহেবের খলীফা মাওলানা এনায়েতুল্লাহ ওমর সাহেব আমাদের শহরে আসেন। তিনি বয়ান শেষে লাইট বন্ধ করে লাউড স্পিকারে যিকির করান। এটা কতটুকু সঠিক?
জবাব:
১. একাকী উচ্চস্বরের যিকির সীমাতিক্রমী না হলে এবং অন্য আমলে ব্যস্ত ব্যক্তি এর দ্বারা বিরক্ত বোধ না করলে জায়েয আছে।
২. লাউড স্পিকারে উচ্চস্বরের যিকির সীমাতিক্রমী। এমনভাবে সম্মিলিত যিকির বিদআত। যেমনটি মুফতী সাঈদ আহমদ পালনপুরী রহ. বলেছেন।
৩. আমি (এই ফতোয়ার লেখক) যাইনুল ইসলাম কাসেমী এলাহাবাদী (মুজাযে বাইআত মাওলানা কামরুজ্জামান এলাহাবাদী দা.বা.) আমার শাইখে তরীকত মাওলানা কামরুজ্জামান এলাহাবাদী সাহেবের কাছে জানতে চাইলাম, বয়ান শেষে অন্ধকারে লাউড স্পিকারে যিকির করা, প্রথমে শাইখ কিছু শব্দ বলে, পরে মুরীদানও সেসব শব্দ বলে। এ পদ্ধতিতে যিকির করাটা কেমন?
জবাবে মাওলানা কামরুজ্জামান সাহেব বলেছেন, আমি এ পদ্ধতিতে যিকির করাই না, এর শিক্ষাও দেই না। মাওলানা ওয়ালিউল্লাহ সাহেব রহ.ও এর শিক্ষা দিতেন না, মাওলানা আশরাফ আলী থানবী রহ.ও এভাবে যিকির শিখাতেন না। তিনি আরও বলেছেন, যারা এ পদ্ধতি অবলম্বন করে তাদের কয়েকজনকে শাসিয়েছি, বারণও করেছি...। (লিঙ্ক: https://darulifta-deoband.com/home/ur/tasawwuf/168293)
আরেকটি প্রশ্নের উত্তরে বলা হয়—
اجتماعی ذکر اس طور پر ہو کہ ایک مجلس میں لوگ اپنا اپنا انفرادی ذکر کریں یہ اسلاف سے ثابت ہے؛ لیکن یہ طریقہ کہ شیخ کے ادا کردہ کلمات کو مجمع دہرائے ثابت نہیں؛ اس لئے یہ طریقہ صحیح نہیں۔
“সম্মিলিত যিকির যদি এ পদ্ধতিতে হয় যে, কোনো সমাবেশে লোকেরা যার যার যিকির করবে, তাহলে এটি পূর্বসূরিদের থেকে প্রমাণিত। কিন্তু শাইখের বলা শব্দ মাজমার সবাই দোহরাবে, এর প্রমাণ পাওয়া যায় না। তাই এ পদ্ধতি বিশুদ্ধ নয়।” (লিঙ্ক: https://darulifta-deoband.com/home/ur/tasawwuf/169402)
-ভাষান্তর: কবির আহমাদ কাসেমী