| |
               

মূল পাতা জাতীয় দেশকে ২০৩০ সালের মধ্যে কুষ্ঠ রোগ নির্মূলের অঙ্গীকার প্রধানমন্ত্রীর


দেশকে ২০৩০ সালের মধ্যে কুষ্ঠ রোগ নির্মূলের অঙ্গীকার প্রধানমন্ত্রীর


রহমত নিউজ     12 November, 2023     02:35 PM    


২০৩০ সালের মধ্যে দেশ থেকে কুষ্ঠ রোগ নির্মূল করার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করে কুষ্ঠ রোগীদের চিকিৎসার জন্য স্থানীয় ওষুধ প্রস্তুতকারক কারখানাগুলোকে উন্নতমানের ওষুধ তৈরির আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে কুষ্ঠরোগ নির্মূলে আমরা দৃঢ় অঙ্গীকার করছি।অ্যাপ্রোচ টু জিরো লেপরোসি বাই ২০৩০ এর লক্ষ্য অর্জনের জন্য তহবিল বৃদ্ধি করাসহ আরো সবরকম সহযোগিতা বৃদ্ধি করতে সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আহ্বান জানান। দেশে উন্নতমানের যে ওষুধ কোম্পানী রয়েছে তাদেরকে কুষ্ঠরোগের ওষুধ উৎপাদনেরও আহ্বান জানান তিনি।

আজ (১২ নভেম্বর) রবিবার সকালে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয় আয়োজিত ‘দ্বিতীয় জাতীয়  লেপরোসি (কুষ্ঠ রোগ) সম্মেলন’ ২০২৩-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন। স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ বিষয়ক মন্ত্রী জাহিদ মালেক অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। কুষ্ঠ নির্মূলের জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার শুভেচ্ছা দূত এবং জাপানের নিপ্পন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ইয়োহেই সাসাকাওয়া অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন। স্বাস্থ্য বিভাগের সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম স্বাগত বক্তৃতা করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার কুষ্ঠ নির্মূল কার্যক্রমকে আরো শক্তিশারী করার উদ্যোগ নিয়েছে, প্রতিরোধ করাটাই সব থেকে বেশি দরকার। কি কারণে হচ্ছে এবং এটা যেন আর না হয় সেদিকেই আমাদের বিশেষভাবে দৃষ্টি দেওয়া দরকার। কুষ্ঠরোগ শূন্যে নামিয়ে আনার জন্য ন্যাশনাল স্ট্রাটেজিক প্লান ফর লেপরোসি ইন বাংলাদেশ ২০২২-২০৩০’ প্রণয়ন এবং যথাযথভাবে তা বাস্তবায়নের পদক্ষেপ নেয়া হেয়েছে। কুষ্ঠরোগীদের দূরে সরিয়ে রাখার জন্য ব্রিটিশ সরকার যে আইন করেছিল ‘দ্য লেপারস অ্যাক্ট ১৮৯৮’ তাঁর সরকার তা রোহিত করেছে, কাজেই এখন আর কেউ কুষ্ঠরোগীদের তাদের ন্যায্য অধিকার বঞ্চিত করতে পারবে না। পরিবার থেকে শুরু করে আশাপাশের আর কেউ তাদেরকে ঘৃণার চোখে দেখতে পারবে না।  কুষ্ঠরোগীদের সহানুভূতি ও সেবা যেমন দরকার তাদের পাশে থাকাও দরকার। তাদের মনবল সৃষ্টি করা দরকার এবং সকলে সেটাই করবেন। এটা ছোঁয়াছে রোগ বলে পুরনো ভ্রান্ত ধারণা এক সময় যেটা ছিল সেটা থেকে সকলকে বেরিয়ে আসতে হবে। এখন অনেকেই এর থেকে বেরিয়ে এসেছে এবং বের হতে হবে। আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলেছি এবং এবং এখন স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলছি কাজেই এখন আর সেই পুরণো ধ্যান ধারণায় থাকলে চলবে না। তাহলে আমরা স্মার্ট হতে পারব না।

তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করি, আজকের এই সম্মেলনের মাধ্যমে ২০৩০ সালের মধ্যে কুষ্ঠ মুক্ত বাংলাদেশ ঘোষণার বিদ্যমান সমস্যা ও চ্যালেঞ্জগুলো চিহ্নিত করা সম্ভব হবে এবং অভীষ্ট লক্ষ্য অর্জনে যথাযথ কর্মপরিকল্পনা ও পদক্ষেপ আমরা গ্রহণ করতে পারবো। সকল চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীসহ দেশের সকল নাগরিকদের কুষ্ঠরোগীদের অবহেলা না করে তাদের প্রতি সহানুভূতিশীল ও যত্নবান হওয়ার আহ্বান জানান। সরকার প্রতিবন্ধী, কুষ্ঠরোগী এবং তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠীর জন্য আবাসন ও জীবন-জীবিকার ব্যবস্থাসহ বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে, এদের চাকরিতে পুণর্বাসন করা হলে ব্যবসায়ীদের কর মুক্ত রেয়াত দেওয়ারও ব্যবস্থা করা হয়েছে।

আবারও মেডিকেল রিসার্চের ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের মেডিকেল রিসার্চ করা খুব বেশি দরকার। মেডিকেল সাইন্সের ওপর রিসার্চ দরকার, যেটা আপনারা একটু কমই করেন। আপনারা দয়া করে যদি মেডিকেল সাইন্সের ওপর রিসার্চ করুন, তাহলে দেখবেন আমাদের দেশে জলবায়ুর সাথে সম্পর্কিত যতরকম রোগ আছে তার ওপর একটি ভাল ধারণা এনে এর যথাযথ চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে পারবো এবং সে ধরনের ওষুধ বা যা যা দরকার আমরা তৈরী করতে পারবো। এই অনুরোধটা আমার থাকলো। যারা কুষ্ঠরোগের চিকিৎসা করে যাচ্ছেন তাদের ধন্যবাদ জানাই। এসব রোগীদের যেন দূর দূর করা বা তুচ্ছ তাচ্ছিল্য না করা না হয় সে অনুরোধও রইল। আসুন, আমরা সবাই অবহেলা দিয়ে নয়, ভালবাসা দিয়ে আন্তরিকতা দেখিয়ে তাদের  পাশে থেকে এই কুষ্ঠরোগীদের সেবা দিয়ে সুস্থ করে তুলি। তারা আমাদেরই আপনজন।