| |
               

মূল পাতা জাতীয় রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন নিয়ে দোলাচলে সরকার : পররাষ্ট্রমন্ত্রী


রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন নিয়ে দোলাচলে সরকার : পররাষ্ট্রমন্ত্রী


রহমত নিউজ     03 August, 2023     11:11 AM    


সম্প্রতি চীনের এশিয়াবিষয়ক বিশেষ দূত দেং সিজুনের ঢাকা সফরে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবর্তনে অগ্রগতি নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, চীনের উদ্যোগে পাইলট প্রকল্পের আওতায় কিছু রোহিঙ্গাকে প্রত্যাবর্তন করতে চায় মিয়ানমার। এ প্রস্তাবে বাংলাদেশও রাজি। কিন্তু অনেক বিদেশি সরকারের পরামর্শ, এখনই রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন নয়। এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ সরকার প্রত্যাবাসন নিয়ে দোলাচলে রয়েছে। চীনের বিশেষ দূত চেষ্টা করছেন যেন রোহিঙ্গারা তাদের স্বদেশে ফেরত যায়। চীন এ ব্যাপারে যথেষ্ট সাহায্য করছে। কিন্তু দুঃখের বিষয় হচ্ছে অনেক লোক চায় না রোহিঙ্গারা ফেরত যাক। বিশেষ করে অনেক বিদেশি সরকার আমাদের পরামর্শ দেয়, রোহিঙ্গারা যেন এ মুহূর্তে দেশটিতে না যায়। তাদের বক্তব্য হলো-ওখানে গেলে ওরা মরে যাবে। ওদের হত্যা করবে। কারণ ওখানে মিলিটারি সরকার। তারা মনে করেন, ওখানে যদি ডেমোক্রেসি রিস্টোর না হয় তাহলে ওখানে ওদের পাঠানো ঠিক হবে না। তারা এই ওকালতি করে। কিন্তু আমাদের অগ্রাধিকার হচ্ছে, রোহিঙ্গারা তাদের দেশে যাবে। রোহিঙ্গারাও তাদের দেশে যেতে চায়। মিয়ানমার পশ্চিমাদের নিতে রাজি আছে। মিয়ানমার বলছে, তারা গেলে সেফটি অ্যান্ড সিকিউরিটি নিশ্চিত করবে। কিন্তু আমাদের বাকি মুরব্বিরা বলছেন, না; আপনারা কেমন করে মিলিটারি সরকারকে বিশ্বাস করেন। আমরা এ দোলাচলে আছি। আরো যারা জড়িত আছেন, বহু আন্তর্জাতিক এনজিও আছে। তারা ওখানে কাজকর্ম করে। ইউএনএইচসিআর আছে। ওখানে যারা কাজ করে তারা চান না ওরা মিয়ানমার যাক। এ মুহূর্তে ওখানে মিলিটারি গর্ভমেন্ট তাই। অনেকে ভালো ভালো কথা বলেন, কিন্তু কাজের নামে জিরো। যথেষ্ট স্লো ডাউন হয়েছে কয়েক দিনে। আমি সব সময় আশাবাদী। রোহিঙ্গারা নিজের দেশে গিয়ে সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়ে তুলবে। পাইলট প্রকল্পের আওতায় রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে এখনও তারিখ চূড়ান্ত হয়নি । চীনের বিশেষ দূতের ঢাকা সফরে বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন নিয়ে কোনো বার্তা ছিল কি না, জানতে চাইলে মোমেন বলেন, না। উনি শুধু রোহিঙ্গা নিয়ে আলাপ করতে এসেছেন। অন্য কোনো বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে আসেননি। 

বুধবার (২ আগস্ট) বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

ভারতে শিলংয়ে অবস্থানরত বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদের দেশে ফেরা না ফেরা তার সিদ্ধান্তের বিষয় বলে মন্তব্য করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশি নাগরিক বিদেশে গিয়ে যদি থাকে, সে যদি তার পাসপোর্ট হারিয়ে ফেলে বা লুকিয়ে ফেলে বা সে যদি স্বদেশে আসতে চায় আমরা সব সময় রুটিনলি ট্রাভেল পাস ইস্যু করি। এখানে তার রাজনৈতিক পরিচয় মুখ্য নয়। উনি চেয়েছেন, তাকেও ওভাবে দেওয়া হয়েছে (ট্রাভেল পাস)। আসা-না আসা তার দায়িত্ব, আমার দায়িত্ব না।

গত ১২ জুন গোহাটির বাংলাদেশ মিশন থেকে ট্রাভেল পাস সংগ্রহ করেন বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমেদ। ট্রাভেল পাসের শর্তে বলা আছে, ট্রাভেল পাস ইস্যুর তিন মাসের মধ্যে তাকে দেশে ফিরতে হবে। ২০১৫ সালের ১০ মার্চ ঢাকা থেকে নিখোঁজ হন বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন। ওই বছরের ১১ মে ভারতে অনুপ্রবেশের দায়ে সালাহউদ্দিনের বিরুদ্ধে মামলা করে শিলংয়ের পুলিশ। ২০১৮ সালের ২৬ অক্টোবর অবৈধ অনুপ্রবেশের মামলা থেকে সালাহউদ্দিনকে খালাস দেন ভারতের একটি আদালত। তবে আদালতের রায়ে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল করলে থেমে যায় সালাহউদ্দিনের দেশে ফেরা। প্রায় সাত বছর বিচার চলার পর গত ২৮ ফেব্রুয়ারি এ মামলার রায় ঘোষণা করা হয়। তিনি বেকসুর খালাস পান। কিন্তু পাসপোর্ট না থাকায় সালাউদ্দিন দেশে ফিরতে পারছিলেন না। পরে ট্রাভেল পারমিটের জন্য গোহাটিতে বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে আবেদন করেন। সালাউদ্দিন আহমদ ১৯৯১ সালে বিএনপির তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার এপিএস ছিলেন। ২০০১ সালে কক্সবাজার থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন সালাহউদ্দিন। তাকে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময়ে যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী করা হয়েছিল। মেঘালয়ে যখন আটক হন তখন তিনি বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ছিলেন। ভারতের জেলে থাকাকালে বিএনপি তাকে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য করে।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৯ বছর কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। তাকে দেশে ফেরানোর জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কোনো উদ্যোগ নেবে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাদের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় যদি অনুরোধ করে অবশ্যই আমরা দেখব। আমরা ইতোমধ্যে ব্রিটিশ সরকারকে বলেছি, যারা অবৈধ এ রকম-লোক আছে তাদের পাঠাতে। তারা এখনও পাঠায় নাই। এটা বরং আপনি আমাদের বিচার বিভাগকে জিজ্ঞেস করেন। তারা আমাদের দিকনির্দেশনা দেবে। নিশ্চয়ই তখন আমরা জোর তদবির চালাব। কিন্তু পাঠানোর দায়দায়িত্ব তো ওই দেশের সরকারের। এ মুহূর্তে আমি সেটা বলতে পারব না। আমি আপনাদের মতো সবজান্তা না। আপনার অসুবিধা হয় ওরা ডাক দিলে? জবাবে ওই সাংবাদিক বলেন, তারা নালিশ করে। নাশিল করে করুক। আমরা জনগণে বিশ্বাস করি। আমরা জনগণকে নিয়ে চলতে চাই। আমরা বিদেশি মুরব্বিদের অতো পছন্দ করি না। তারা যদি উন্নয়ন সহায়ক হয় ভালো, বাকিটুকু আমরা চাই না।

জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৯ বছর কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই মামলায় তার স্ত্রী জুবাইদা রহমানের ৩ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে আদালত তারেকের জ্ঞাত আয়বহির্ভূত ২ কোটি ৭৪ লাখ ৯৩ হাজার ৮৭ টাকার সম্পদ রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করার আদেশ দিয়েছেন। এছাড়া তারেককে তিন কোটি টাকা ও জুবাইদাকে ৩৫ লাখ টাকা অর্থদণ্ড করা হয়েছে। আজ বুধবার এই রায় দেন। ঢাকা মহানগরের বিশেষ জজ মো. আছাদুজ্জামান এ রায় দেয়।