| |
               

মূল পাতা জাতীয় অর্থনীতি চালুর প্রথম দিনেই ২৮ মিলিয়ন রুপির বাণিজ্য


চালুর প্রথম দিনেই ২৮ মিলিয়ন রুপির বাণিজ্য


রহমত নিউজ ডেস্ক     12 July, 2023     11:40 AM    


বৈদেশিক বাণিজ্যের মুদ্রা বহুমুখীকরণের নতুন যুগে প্রবেশ করেছে বাংলাদেশ। এর মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে রুপিতে বাণিজ্যিক লেনদেন। মঙ্গলবার (১১ জুলাই) প্রথম দিন ২৮ মিলিয়ন রুপির আমদানি-রফতানির ঋণপত্র (এলসি) খোলার মধ্য দিয়ে নতুন এ যাত্রার লেনদেন শুরু হয়েছে। আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধনের পর বাংলাদেশ থেকে প্রথম রুপিতে রফতানি চালান পাঠায় বগুড়ার তামিম ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড। রফতানি চালানের মূল্য ছিল ১৬ মিলিয়ন রুপি। এই আমদানির ঋণপত্র খুলে ভারতের আইসিআইসিআই ব্যাংক। আর রফতানিকারকের ব্যাংক ছিল স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার (এসবিআই) বাংলাদেশ শাখা। এদিকে রুপিতে দেশে প্রথম আমদানি করেছে নিটল-নিলয় গ্রুপ। আমদানি চালানের মূল্য ১২ মিলিয়ন রুপি। আমদানির ঋণপত্র খুলে এসবিআই এর ঢাকা অফিস। আমদানি ও রফতানির চালানগুলো হস্তান্তর করেছে বাংলাদেশের সোনালী ব্যাংক ও ইস্টার্ন ব্যাংক এবং ভারতের স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া ও আইসিআইসিআই ব্যাংক।

মঙ্গলবার (১১ জুলাই) বাংলাদেশ ব্যাংকের জাহাঙ্গীর আলম কনফারেন্স হলে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক রুপির বাণিজ্যিক কার্যক্রম নিয়ে কথা বলেন। এর আগে সকালে রাজধানীর একটি হোটেলে বাংলাদেশ ও ভারতের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যে বা আমদানি-রপ্তানিতে ভারতীয় রুপির লেনদেনের উদ্বোধন করা হয়। উদ্বোধনের সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার ও বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মাসহ দুই দেশের ব্যবসায়ীরা উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী মুখপাত্র সারোয়ার হোসেনসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারাও।

সংবাদ সম্মেলনে মেজবাউল হক জানান, এতদিন ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানির ক্ষেত্রে টাকাকে ডলার এবং ডলার থেকে রুপিতে ট্রান্সফার করে কার্যক্রম চালানো হতো। ভারতের সঙ্গে রুপিতে আমদানি-রপ্তানি উদ্বোধনের ফলে এখন থেকে টাকা থেকে সরাসরি রুপিতে ট্রান্সফার করে লেনদেন হবে। ফলে টাকা থেকে ডলার আবার ডলার থেকে রুপিতে ট্রান্সফারে যে ট্রানজেকশন ফি দিতে হতো তা থেকে অব্যাহতি পাবেন ব্যবসায়ীরা। ২০২২ সালের ১১ জুলাই ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আহ্বানে ২২টি দেশ তাদের সঙ্গে রুপিতে লেনদেনে সম্মত হয়। লেনদেন শুরু করে ১৮টি দেশ। আমরা ১৯ তম দেশ হিসেবে তাদের সঙ্গে রুপিতে লেনদেন শুরু করলাম। ভারতের সঙ্গে আমদানি ও রপ্তানিতে বিপুল অঙ্কের পার্থক্য রয়েছে। ফলে এই উদ্যোগের মাধ্যমে বাংলাদেশের লাভবান হওয়ার সম্ভবনা কম। তবে দুই দেশের মধ্যে যেহেতু রুপির মাধ্যমে পারস্পরিক লেনদেন শুরু হয়েছে, ধীরে ধীরে বাংলাদেশের রপ্তানিও বৃদ্ধি পাবে। তখন ভারতের মতো বাংলাদেশও লাভবান হতে পারবে। দুই দেশের ডলারের বিনিময় হারের গড়কে ভিত্তি ধরে রুপির বিনিময় হার নির্ধারণ করা হবে।

মেজবাউল হক জানান, ভারতের সঙ্গে আমাদের ১৬ বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য হয়। এর মধ্যে ২ বিলিয়ন ডলারের পণ্য বাংলাদেশ রপ্তানি করে এবং ১৪ বিলিয়ন ডলারের পণ্য বাংলাদেশ আমদানি করে। এখন থেকে রুপিতে ২ বিলিয়ন ডলারের মূল্য পরিশোধ করা যাবে। বাকি ১২ বিলিয়ন ডলারের পণ্যমূল্য মার্কিন ডলারেই পরিশোধ করতে হবে। রুপিতে লেনদেনের চাহিদা বাড়লে পর্যায়ক্রমে অন্য ব্যাংককেও অনুমতি দেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ভারতের সঙ্গে রুপিতে আমদানি-রপ্তানি করা শুরু হলে ট্রানজেকশন ফি বাবদ বাড়তি টাকা দিতে হবে না; বাড়তি সময় ব্যয়  হবে না। টাকা থেকে সরাসরি রুপিতে ট্রান্সফার হবে। এর ফলে পণ্য আমদানি-রপ্তানিতে খরচ কমবে ও সময় বাঁচবে। আগামী সেপ্টেম্বর মাস থেকে রুপি-টাকার ডেবিট কার্ড চালু হবে। ভারতে বাংলাদেশের বিপুল সংখ্যক মানুষ সফর করে থাকে। রুপিতে লেনদেন করার ফলে এসব সফরকারী মানুষ সুবিধা পাবেন। লেনদেনের জন্য টাকা থেকে ডলার, ডলার থেকে রুপিতে ট্রান্সফার করতে বাড়তি খরচ গুনতে হবে না। রুপির বিনিময় হার নির্ধারণে দুই দেশের ডলারের বিনিময় হারের গড়কে ভিত্তি হিসেবে নেয়া হবে। ভারত ও বাংলাদেশের দুটি করে চারটি ব্যাংকের মধ্যে রুপির মাধ্যমে বাণিজ্য সম্পাদন হবে। এর মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশের সোনালী ও ইস্টার্ন ব্যাংক এবং ভারতের স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া ও আইসিআইসিআই ব্যাংক।