| |
               

মূল পাতা জাতীয় গণমাধ্যম ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট বাতিলের দাবি সম্পাদক পরিষদের


ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট বাতিলের দাবি সম্পাদক পরিষদের


রহমত নিউজ ডেস্ক     02 May, 2023     07:07 PM    


ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট বাতিলের দাবি জানিয়েছে সম্পাদক পরিষদ। এক্ষেত্রে সরকারের কোনো আপত্তি থাকলে আইনটি সংশোধন করে সেখানে যেন এটি সাংবাদিকদের ওপর প্রয়োগ করা হবে না, এমন বিধান যুক্ত করা হয়, সে দাবিও জানিয়েছে সম্পাদক পরিষদ। সম্পাদক পরিষদের পক্ষ থেকে বলা হয়, সাংবাদিকদের সুরক্ষায় পজেটিভ একটা আইন হতে পারে। সেটা আমাদের সংবিধানে ৩৯ অনুচ্ছেদে আছে।

আজ (২ মে) মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস ২০২৩, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা সকল প্রকার মানবাধিকারের চালিকাশক্তি’ শীর্ষক সভায় এ দাবি জানান সম্পাদক পরিষদের সভাপতি মাহফুজ আনাম। সম্পাদক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন নিউ এইজ পত্রিকার সম্পাদক নুরুল কবীর, প্রথম আলোর ব্যবস্থাপনা সম্পাদক আনিসুল হক, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন-বিএফইউজের সাবেক সভাপতি মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল, ইত্তেফাকের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক তাসমিমা হোসেন, দৈনিক দেশ রূপান্তরের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মোস্তফা মামুন। সভায় প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমানও উপস্থিত ছিলেন।

সভায় মাহফুজ আনাম বলেন, আমরা ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট বাতিলের দাবি জানাচ্ছি। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে যে, ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট সাইবার ক্রাইম বন্ধ করা জন্য করেছি। তাহলে সেখানে এটা যুক্ত করা হোক, এই আইন সাংবাদিকদের ওপর প্রয়োগ করা হবে না। সাইবার ক্রাইম বন্ধ করার জন্য যদি এই আইন ব্যবহার করা হয়, তাহলে তো অন্যকথা। কিন্তু এখন স্বাধীন সাংবাদিকতার ওপর ব্যবহার করা হচ্ছে, মতপ্রকাশের ওপর ব্যবহার করা হচ্ছে, তাই এটা বাতিল করা হোক। অথবা সেখানে একটা ধারা যুক্ত করা হোক ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট গণমাধ্যম ও স্বাধীন মতপ্রকাশের ওপর প্রয়োগ করা হবে না। এটা আমরা অফিসিয়ালি আপনাকে (সাবেক তথ্যমন্ত্রী ও বর্তমান সংসদীয় কমিটির সভাপতি হাসানুল হক ইনু) প্রস্তাব দিচ্ছি। ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের মাধ্যমে যেসব সাংবাদিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং মামলা করা হয়েছে তা যেন বাতিল করা হয়। এ আইনে গ্রেপ্তার সাংবাদিকদের মুক্তি দিতে হবে। আমাদের তৃতীয় দাবি হচ্ছে দেশে সাংবাদিকতায় যে ভয়ের পরিবেশ তৈরি হয়েছে, আমরা কিছু লিখতে দ্বিধাগ্রস্ত, সেলফ সেন্সরশিপের মধ্যে বাস করি; ভয়ের মধ্যে যে সাংবাদিকতা এটাতে আমরা থাকতে চাই না।

অনুষ্ঠানে সাবেক তথ্যমন্ত্রী ও বর্তমান সংসদীয় কমিটির সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেন, আমি মনে করি ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট বাতিল নয়, সংশোধন করা হোক। সাংবাদিকদের ওপর এই আইনের অপপ্রয়োগ বন্ধ করতে হবে। কাউকে গ্রেপ্তার করতে হলে তা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর অনুমতি নিয়ে করতে হবে। সরকারের আইনমন্ত্রী যেহেতু বলছেন-ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের কিছু-কিছু ধারা সরকারকে বিব্রত করছে, এটা সংশোধন করা দরকার। আমি সরকারকে বলব- আইন মন্ত্রালয়ের পরামর্শ নিয়ে এটি সংশোধন করুন, গণমাধ্যমবান্ধব করুন।

অনুষ্ঠানে সমকালের সম্পাদক মোজাম্মেল হোসেন বলেন, পেশাজীবী হিসেবে সাংবাদিকদের স্বাধীনতা ও ঐক্য দরকার। আজকে স্বাধীন সাংবাদিকতা বিপন্ন হয়েছে। এটা রক্ষা করতে হলে সাংবাদিকদের ঐক্য হওয়া দরকার।  ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট তৈরি করা হয়েছে ভয় দেখানোর জন্য বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

দ্যা ফিনান্সিয়াল এক্সপ্রেসের সম্পাদক শামসুল হক জাহিদ বলেন, সাংবাদিকদের অবস্থা এখন করুন। তাদের মধ্যে বিভাজন তৈরি করা হয়েছে; একটা আইন করে, আরেকটা সাংবাদিকদের মধ্যে বিভক্তি সৃষ্টি করে। আমাদের মধ্যে যে বিভাজন এটা দূর হবে কি না সন্দেহ আছে। আমরা দেখেছি, অনেক ইস্যুতে সাংবাদিকদের এক পক্ষ দাঁড়ায়, আরেক পক্ষ কিছুই বলে না। ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট সরকারের মধ্যেও একটা অস্বস্তি তৈরি করেছে, সেটা আইনমন্ত্রী বারবার বলছেন, কতগুলো ধারা আছে সেগুলো অস্বস্তি তৈরি করছে। এটা সংশোধন করা দরকার। এটা যদি সরকার ভেবে থাকে তাহলে তা সংশোধন করা দরকার।