| |
               

মূল পাতা জাতীয় ‘পাকিস্তানের শাসকশ্রেণি স্বৈরাচার থাকলেও মানুষ ছিল অসাম্প্রদায়িক’


‘পাকিস্তানের শাসকশ্রেণি স্বৈরাচার থাকলেও মানুষ ছিল অসাম্প্রদায়িক’


রহমত নিউজ ডেস্ক     16 February, 2023     06:49 PM    


পাকিস্তান আমলে শাসকশ্রেণি স্বৈরাচার থাকলেও মানুষ ছিল অসাম্প্রদায়িক। কিন্তু বিগত ৫০ বছরে রাজনৈতিক দলগুলো নানা উপায়ে ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিকে পরিণত করেছেন। এক্ষেত্রে জিয়াউর রহমান  ও হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ এবং বর্তমান শাসক শ্রেণির সমালোচনা করেন তারা।

বৃহস্পতিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) রাজধানী ঢাকার তোপখানা রোডে অবস্থিত সিরডাপ মিলনায়তনে বাংলাদেশে সম্প্রীতির সুদীর্ঘ ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখতে নাগরিক সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাব্রতী সংস্থা দ্য হাঙ্গার প্রজেক্ট যুক্তরাজ্যভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থা ফ্রিডম অব রিলিজিওন অর বিলিফ লিডারশিপ নেটওয়ার্ক-ফোর্ব’র সঙ্গে যৌথভাবে একটি কার্যক্রম শুরু করেছে। সেই কার্যক্রমের অংশ হিসেবে সংগঠন দুটির উদ্যোগে আয়োজিত সামাজিক সম্প্রীতি সংলাপে এসব অভিযোগ করেন বিশিষ্টজনরা।

সংলাপে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত বলেন, পাকিস্তান আমলে শাসক ছিল স্বৈরাচারী, রাষ্ট্র ছিল সাম্প্রদায়িক। কিন্তু মানুষ ছিল অসাম্প্রদায়িক। ধর্ম ছিল যার যার ব্যক্তিগত বিশ্বাস। আমরা পরিচিত হতাম বাঙালি হিসেবে। কিন্তু স্বাধীন দেশে এর বিপরীত হচ্ছে। জেনারেল জিয়া ক্ষমতায় আসার পর সংবিধানের শুরুতে বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম যোগ করলেন। পাকিস্তান রাষ্ট্রের আদলে দেশ চালাতে লাগলেন। এরশাদ সাহেব এসে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম করলেন এবং এর মাধ্যমে  ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিকে পরিণত করলেন। এ সরকারের ১৩ বছরেও তাই হয়েছে, যা বিগত দিনগুলোতে হয়ে আসছে। আর এ জন্য দায়ী রাজনীতিবিদরা। বস্তুত নাগরিকদের নাগরিক না ভেবে ধর্ম দিয়ে বিবেচনা করলে সাম্প্রদায়িকতা গেঁড়ে বসবেই।

সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, উন্নয়নের অপর নাম হলো সম্প্রীতি। সম্প্রীতি যদি না থাকে তাহলে উন্নয়ন হয় না। উন্নয়ন হলেও টেকসই হবে না। মূলত তিনভাবে সামাজিক সম্প্রীতি বিনষ্ট হয়: বিভাজনের রাজনীতি, ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা এবং জাতিগত বিভেদ। মুক্তিযুদ্ধের সময় আমরা একে অপরকে রক্ষা করলেও এখন নিশ্চিহ্ন করতে ওঠে পড়ে লেগেছি। বস্তুত রাজনৈতিক, ধর্মীয় ও জাতিগত বিভেদের কারণে আমরা এক বারুদের স্তুপের ওপর দাড়িঁয়ে আছি। তাই আমাদের সকলের ঐকান্তিক প্রচেষ্টা হওয়া উচিত নিজেদের মধ্যে সম্প্রীতি বাড়ানো। এর বিকল্প নেই। এ থেকে পরিত্রাণ না পেলে আমাদের ভবিষ্যৎ অন্ধকার।

জাতীয় পার্টির অতিরিক্ত মহাসচিব ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী এমপি বলেন, ধর্মকে বাদ দিয়ে আমরা কিছু করতে পারি না। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আমরা পূজা মণ্ডপে আঘাত আসতে দেখেছি। ৩০টিরও বেশি স্থানে এটি হয়েছে। দুঃখজনক হলো সাধারণ মানুষের মধ্যে কেউ এগিয়ে আসলো না মণ্ডপ রক্ষার্থে। বর্তমানে দেশের সব জায়গায় আওয়ামী লীগের পক্ষের লোক পাওয়া যায়। কিন্তু আমরা দেখিনি আওয়ামী লীগের কোনও মেম্বার, কাউন্সিলর বা নেতা এক দুইশো অনুসারী নিয়ে মণ্ডপ রক্ষার্থে এগিয়ে আসতে। আগে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্রলীগ, ছাত্রদলসহ সব ছাত্র সংগঠন তাদের কার্যক্রম চালাতে পারতো। তাদের মধ্যে ঝগড়া, মারামারি যেমন হতো, আবার সংকটকালে একও হয়ে যেতো। কিন্তু এখন একদল। ভিন্নমত নেই। এটিও একটি বড় সংকট।’   

অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস বলেন, ‘সব মানুষের জন্য একটি বাংলাদেশ সৃষ্টির লক্ষ্য নিয়ে দেশ স্বাধীন হলেও এ দেশ সব মানুষের হয়নি। এ দেশ সংখ্যালঘুদের হয়নি, গরীবদের হয়নি, নিঃস্বদের হয়নি। উল্টো আমরা দেখছি এ দেশ হয়েছে কতিপয় লুটেরাদের। শক্তিশালী হয়েছে মৌলবাদী গোষ্ঠী। এর সবচেয়ে বড় ভিকটিম হচ্ছে নারী।’