| |
               

মূল পাতা জাতীয় নির্বাচন কমিশন ফের রসিক মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা


ফের রসিক মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা


রহমত নিউজ ডেস্ক     27 December, 2022     04:46 AM    


রংপুর সিটি করপোরেশনে দ্বিতীয়বারের মতো মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য, রংপুর ও মহানগর সভাপতি মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা। লাঙ্গল প্রতীকে মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা পেয়েছেন ১ লাখ ৪৬ হাজার ৭৯৮ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমিরুজ্জামান পিয়াল হাতপাখা প্রতীকে পেয়েছেন ৪৯ হাজার ৮৯২ ভোট। তিনি সরকারদলীয় প্রার্থী ও সাবেক সংসদ সদস্য হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়ার চেয়ে ১ লাখ ২৪ হাজার ৫৫৯ ভোট বেশি পেয়েছেন।

মঙ্গলবার (২৭ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৮টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত ইভিএমে ভোটগ্রহণ শেষে রংপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে রাত ১২টায় রিটার্নিং কর্মকর্তা আবদুল বাতেন নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করেন।  এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সচিব জাহাঙ্গীর আলম, আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা জি এম সাহতাব উদ্দিন প্রমুখ।

ঘোষিত ফলাফল অনুযায়ী,
লাঙ্গল প্রতীকে জাতীয় পার্টির মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা পেয়েছেন ১ লাখ ৪৬ হাজার ৭৯৮ ভোট।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমিরুজ্জামান পিয়াল হাতপাখা প্রতীকে পেয়েছেন ৪৯ হাজার ৮৯২ ভোট।
স্বতন্ত্র প্রার্থী লতিফুর রহমান মিলন হাতি প্রতীকে পেয়েছেন ৩৩ হাজার ৮৮৩ ভোট।
আওয়ামী লীগের প্রার্থী হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়া নৌকা প্রতীকে পেয়েছেন ২২ হাজার ৩০৬ ভোট।
বাংলাদেশ কংগ্রেস পার্টির প্রার্থী আবু রায়হান ডাব প্রতীকে ১০ হাজার ৫৪৯ ভোট।
জাকের পার্টির খোরশেদ আলম খোকন গোলাপ ফুল প্রতীকে ৫ হাজার ৮০৯ ভোট।
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ-ইনু) শফিয়ার রহমান মশাল প্রতীকে পেয়েছেন ৫ হাজার ১৫৬ ভোট।
খেলাফত মজলিসের তৌহিদুর রহমান মন্ডল রাজু দেওয়াল ঘড়ি প্রতীকে ২ হাজার ৮৬৪ ভোট।
স্বতন্ত্র প্রার্থী মেহেদী হাসান বনি হরিণ প্রতীকে ২ হাজার ৬৭৯ ভোট পেয়েছেন।

নির্বাচনকে ঘিরে ছিল ছয় স্তুরের নিরাপত্তা বেষ্টনি। কেন্দ্রে কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছিল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। প্রতি সাধারণ কেন্দ্রে ১৫ জনের এবং ঝুঁকিপূর্ণ ৮৬টি কেন্দ্রে ১৬ জনের ফোর্স মোতায়েন রাখা হয়।  এছাড়া নির্বাচনী আচরণ বিধি প্রতিপালন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নিয়োগ করা হয় ৩৩ জন নির্বাহী হাকিম। তারা ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। একই সঙ্গে বিভিন্ন অপরাধের সংক্ষিপ্ত বিচার কাজ সম্পন্ন করার লক্ষ্যে ১৬ জন বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করা হয়। র‍্যাব-বিজিবির একাধিক টিম মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে নির্বাচনী এলাকায় নিয়োজিত ছিল। তারা ভোটের আগে ও পরে মোট পাঁচদিনের জন্য নিয়োজিত থাকবেন। এই নির্বাচনে ২২৯ জন প্রিজাইডিং কর্মকর্তা এবং ১ হাজার ৩৪৯ জন সহকারী প্রিজাইডিং কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া পোলিং অফিসার ছিলেন দুই হাজার ৬৯৮ জন। মোট ৪ লাখ ২৬ হাজার ৪৭০ জন ভোটারের মধ্যে ভোট দিয়েছেন ২ লাখ ৭৯ হাজার ৯৬৩ জন। সর্বোপরি নির্বাচনে এবার ৬৫.৮৮ শতাংশ ভোট পড়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন ইসি সংশ্লিষ্টরা।

এবার রংপুর সিটিতে প্রথমবারের মতো ২২৯টি ভোট কেন্দ্রের ১ হাজার ৩৪৯টি ভোটকক্ষে ইভিএমে ভোট হয়েছে। প্রতিটি কেন্দ্র ও কক্ষ মিলে ১ হাজার ৮০৭ সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছিল। রংপুর সিটি করপোরেশনের ৩৩টি ওয়ার্ডের মোট জনসংখ্যা প্রায় ১০ লাখ। এরমধ্যে এবার তালিকায় ছিল ভোটার চার লাখ ২৬ হাজার ৪৭০ জন। এর মধ্যে নারী ভোটার দুই লাখ ১৪ হাজার ১৬৬ জন, পুরুষ ২ লাখ ১২ হাজার ৩০৩ জন এবং তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার একজন।সকাল সাড়ে নয়টা নগরীর আলমনগর কলেজ রোড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়া সকাল সাড়ে ৯টায় নগরীর লায়ন্স স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে ভোট দেন। আর ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী আমিরুজ্জামান পিয়াল বেলা দেড়টার দিকে লালকুঠি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও মহাবিদ্যালয় কেন্দ্রে তার ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন।

প্রসঙ্গত, ২০১২ সালের ২৮ জুন ৩৩টি ওয়ার্ড নিয়ে রংপুর সিটি করপোরেশন গঠনের পর ওই বছরের ২০ ডিসেম্বর প্রথমবারের মতো দলীয় প্রতীক ছাড়া নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সেবার এক লাখ ৬ হাজার ২৫৫ ভোট পেয়ে মেয়র নির্বাচিত হন সরফুদ্দিন আহমেদ ঝন্টু। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা পেয়েছিলেন ৭৭ হাজার ৮০৫ ভোট এবং বিএনপি নেতা কাওসার জামান বাবলা পেয়েছিলেন ২১ হাজার ২৩৫ ভোট। ২০১২ সালের সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মোট ভোটার ছিলেন তিন লাখ ৫৭ হাজার ৭৪২ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার এক লাখ ৭৯ হাজার ১২৮ জন এবং নারী ভোটার এক লাখ ৭৮ হাজার ৬১৪ জন। দ্বিতীয় মেয়াদে ২০১৭ সালের ২১ ডিসেম্বর দলীয় প্রতীকে অংশ নিয়ে জাতীয় পার্টির প্রার্থী মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা এক লাখ ৬০ হাজার ৪৮৯ ভোট পেয়ে মেয়র নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের সরফুদ্দিন আহমেদ ঝন্টু পেয়েছিলেন ৬২ হাজার ৪০০ ভোট এবং বিএনপির প্রার্থী কাওসার জামান বাবলা পেয়েছিলেন ৩৫ হাজার ১৩৬ ভোট। ওই বছর ভোটার সংখ্যা ছিল তিন লাখ ৯৩ হাজার ৯৯৪ জন। এর মধ্যে পুরুষ এক লাখ ৯৬ হাজার ৩৫৬ ও নারী এক লাখ ৯৭ হাজার ৬৩৮ জন।