| |
               

মূল পাতা স্বাস্থ্য প্রতিবছর ৩ লাখেরও অধিক মানুষ যক্ষ্মায় আক্রান্ত হয় : স্বাস্থ্যমন্ত্রী


প্রতিবছর ৩ লাখেরও অধিক মানুষ যক্ষ্মায় আক্রান্ত হয় : স্বাস্থ্যমন্ত্রী


স্বাস্থ্য ডেস্ক     30 October, 2022     07:19 PM    


স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, দেশে প্রতিবছর যক্ষ্মায় ৩ লাখেরও অধিক মানুষ আক্রান্ত হয়। পৃথিবীর জন্মলগ্ন থেকে এ রোগের প্রাদুর্ভাব এখনো রয়ে গেছে। এতে আগে মৃতের হার বেশি থাকলেও সাম্প্রতিক সময়ে কমে এসেছে। এখন শতকরা ৮৫ থেকে ৯০ শতাংশ যক্ষ্মা রোগীই সুস্থ হয়ে যাচ্ছে। সমাজে প্রচলিত স্টিগমা দূর করে মৃতের হার আরও কমানো সম্ভব। ২০১৫ সালে যেখানে যক্ষ্মায় ৭০ হাজারের অধিক মৃত্যু ছিল এখন তা ৪০ হাজারে নেমে এসেছে। আমাদের মৃত্যু বেশি, কারণ আমাদের জনসংখ্যাও বেশি। আমরা চাই মানুষ চিকিৎসা নিতে আসুক। তাদের চিকিৎসা দেওয়ার সব ব্যবস্থা রয়েছে।

আজ (৩০ অক্টোবর) রবিবার রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে আয়োজিত টিবি বিষয়ক নবম জেএমএম প্রশিক্ষণ কর্মশালায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, টিবি পরিস্থিতির অগ্রগতি হচ্ছে। ব্যাপকভিত্তিতে টিবি স্ক্রিনিং কার্যক্রম চলছে। আমাদের সব হাসপাতালে যক্ষ্মা পরীক্ষার যন্ত্রপাতি রয়েছে। টিবির বিষয়ে আমাদের দেশে বেশ কিছু স্টিগমা আছে। তবে পরিবর্তন আসছে। মানুষ এখন কুসংস্কার এড়িয়ে চিকিৎসা কেন্দ্রে যাচ্ছে। দেশেই টিবির ওষুধ তৈরি হচ্ছে, আমাদের দেশে এখন টিবির ওষুধ তৈরি হচ্ছে। এগুলো দেশে ব্যবহারের পাশাপাশি বিদেশে রপ্তানি করবো। একই সঙ্গে দেশে ভালো মানের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। টিবিতে আমাদের যে বাজেট বরাদ্দ রয়েছে প্রয়োজনে তা বাড়ানো হবে।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ২০২১ সালে নতুনভাবে ফুসফুসের যক্ষ্মায় আক্রান্ত রোগীদের ৯৫ ভাগ শনাক্তকরণ এবং তাদের চিকিৎসা নিশ্চিতকরণ সম্ভব হয়েছে। ২০১৫ সালে প্রতি ১ লাখ জনসংখ্যায় যক্ষ্মা সংক্রমণের হার ২২৫ জন থেকে ২০২১ সালে এই সংক্রমণের হার ২১৮ জনের মধ্যে কমিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে। সব ধরনের যক্ষ্মা রোগীর সংখ্যা শনাক্তকরণ বেড়েছে যা ২০১৫ সালে ছিল প্রায় ২ লাখ ৬ হাজার ৮৬৬ এবং ২০২১ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৬ হাজার ৫৩১। বাংলাদেশ ২০১২ সালে জিন এক্সপার্ট নামে একটি উন্নত স্বয়ংক্রিয় যক্ষ্মা শনাক্তকারী পরীক্ষা চালু করেছিল। যা এখন ৫১০টি স্থানে স্থাপন করা হয়েছে এবং ২০২৫ সালে মধ্যে সমস্ত যক্ষ্মা অনুমানকারীর জন্য এ পরীক্ষাটি নিশ্চিত করার পরিকল্পনা করেছে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ সর্ব প্রথম স্বল্প মেয়াদি ওষুধ প্রতিরোধী যক্ষ্মার চিকিৎসা পদ্ধতি চালু করেছে। বেসরকারি স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে যক্ষ্মা সম্পর্কে সচেতনতা অর্জনের জন্য বাংলাদেশ সরকার লক্ষ্যকে একটি বাধ্যতামূলক লক্ষণীয় রোগ হিসেবে ঘোষণা করেছে। কাগজ ভিত্তিক রেকর্ডিং এর রিপোর্টিংয়ের পাশাপাশি বাংলাদেশ ইলেক্ট্রনিক রেকর্ডিং এবং রিপোর্টিং চালু করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির কার্যক্রম মূল্যায়নের জন্য প্রতি তিন বছর অন্তর বাংলাদেশে জেএমএম কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়। যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম বাংলাদেশ সরকার এবং বিভিন্ন দাতা সংস্থার অর্থায়নে পরিচালিত হয়। বাংলাদেশে বিদ্যমান জনস্বাস্থ্য সমস্যাগুলোর মধ্যে যক্ষ্মা যেহেতু একটি প্রধান সমস্যা, তাই বাংলাদেশ সরকার সব নাগরিকের জন্য বিনামূল্যে যক্ষ্মা রোগ নির্ণয় এবং চিকিৎসাসেবা প্রদানে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বাংলাদেশ যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণে দৃশ্যমান অগ্রগতি অর্জন করলেও বড় চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে। এখনও ধারণা করা হচ্ছে যক্ষ্মায় আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে ৩৬ শতাংশ শনাক্তকরণ সম্ভব হয়নি। এ লক্ষ্যে নবম জেএমএম-এ যক্ষ্মা কর্মসূচির অগ্রগতি পর্যালোচনা ও মূল্যায়ন প্রস্তাবিত হয়েছে। মূল চ্যালেঞ্জগুলো খুঁজে বের করে ২০১৮ সালের মধ্যে প্রোগ্রামের লক্ষ্যগুলো অর্জনের জন্য এবং ২০৩০ সালের মধ্যে টিবি মহামারির একটি টেকসই সমাপ্তির জন্য যক্ষ্মা কার্যক্রমকে আরও শক্তিশালী করার লক্ষ্যে অর্জনযোগ্য সমাধানগুলো চিহ্নিত করা।