| |
               

মূল পাতা ইসলাম কুরবানির ফযিলত ও প্রতিদান


কুরবানির ফযিলত ও প্রতিদান


মুফতী মোহাম্মদ এনামুল হাসান     07 July, 2022     10:25 PM    


আমল সমূহের মধ্যে এখলাস হলো সমস্ত আমলের রুহ বা আত্মা। এবং প্রত্যেক ঐ আমল যার মধ্যে এখলাস নেই তা ঐ দেহের ন্যায় যার মধ্যে রুহ নেই। এবাদতের মধ্যে প্রত্যেক মুসলমানদের একমাত্র এই উদ্দেশ্য থাকা অত্যাবশ্যক যে, সে আল্লাহতায়ালার এবাদত করে তার সন্তুষ্টি অর্জন করবে। এমনভাবে কুরবানির মধ্যে ও নিয়ত খালেস হওয়া জরুরি। কেননা, আল্লাহতায়ালার কাছে কুরবানিকৃত পশুর গোশত এবং তার রক্ত পৌছায়না কেবলমাত্র বান্দাহর তাকওয়া ই পৌছায়। এইজন্য সর্বদা প্রত্যেক নেক আমলের উদ্দেশ্য এই হওয়া চাই যে, আমার নামায, আমার কুরবানি, আমার জীবন আমার মৃত্যু সবকিছুই একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য। যখন এই খালেস নিয়তে কুরবানী করা হবে তখন সত্যিকার অর্থেই তাকওয়া অর্জিত হবে।

যখন খালেস নিয়তে একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আশায় কুরবানী করা হয় তার ফযিলত সম্পর্কে হযরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা হতে বর্নিত আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন যে, ঈদুল আজহার দিনে আল্লাহর কাছে সবচেয়ে বেশি প্রিয় আমল হলো কুরবানির জন্তুর রক্ত প্রবাহিত করা, অর্থাৎ কুরবানি করা। এবং কিয়ামতের দিন জবেহকৃত পশু তার শিং,পশম ও ক্ষুর নিয়ে উপস্থিত হবে। এবং জবেহকৃত পশুর রক্ত জমিনে প্রবাহিত হওয়ার আগেই তা আল্লাহর দরবারে কবুল হয়ে যায়। (আবুদাউদ, ইবনে মাজাহ, তিরমিজি শরিফ)।

হযরত ইমাম হাসান রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেছেন যে, যে ব্যক্তি আনন্দ চিত্তে সওয়াবের আশায় কুরবানি করবে তার জন্য ঐ কুরবানিকৃত জন্তু জাহান্নাম থেকে হেফাজতকারী ঢাল হবে। হযরত আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করে বলেন সামর্থ থাকার পরও যে ব্যক্তি কুরবানি করবেনা সে যেন আমার ঈদগাহে না আসে।

হজরত যায়েদ ইবনে আরকাম রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, সাহাবায়ে কেরাম রাদিয়াল্লাহু আনহুম হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জিজ্ঞেস করলেন হে আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! কুরবানী কি? উত্তরে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন কুরবানি তোমাদের পিতা ইব্রাহিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সুন্নত। পূনরায় সাহাবায়ে কেরাম রাদিয়াল্লাহু আনহুম জিজ্ঞেস করলেন হে আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বিনিময়ে আমরা কি পাবো? উত্তরে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন কুরবানির পশুর প্রতিটি পশমের বিনিময়ে নেকী দেওয়া হবে। (ইবনে মাজাহ)। হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেন, সবচেয়ে উত্তম কুরবানি হলো যা তুলনামূলক অধিক দামী ও দেখতে খুব সুন্দর। আমাদের যাদের উপর কুরবানি ওয়াজিব আল্লাহতায়ালা আমাদের সকলকেই এখলাসের নিয়তে একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে কুরবানি করার তাওফিক দান করুন, আমিন।

 লেখক : নাজিমে দারুল ইকামাহ, জামিয়া কোরআনিয়া সৈয়দা সৈযদুন্নেছা ও কারিগরি শিক্ষালয় কাজীপাড়া ব্রাক্ষণবাড়িয়া