| |
               

মূল পাতা জাতীয় ‘এখনই মিয়ানমারের নাগরিকদের ফেরত পাঠানো প্রয়োজন’


‘এখনই মিয়ানমারের নাগরিকদের ফেরত পাঠানো প্রয়োজন’


রহমত ডেস্ক     28 May, 2022     10:39 PM    


রোহিঙ্গা শব্দটি ব্যবহার না করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, আঞ্চলিক সহযোগিতা বাড়াতে অনেকগুলো ক্ষেত্রে পরস্পরের হাত ধরার পাশাপাশি এই অঞ্চলের নিরাপত্তার স্বার্থে বাংলাদেশে আসা মিয়ানমারের নাগরিকদের এখনই ফেরত পাঠানো প্রয়োজন। মিয়ানমারের নাগরিকেরা বাংলাদেশে নির্দিষ্ট অঞ্চলে রয়েছেন। সেখানে অপরাধ ও উগ্রবাদ বাড়ছে, যা ভবিষ্যতে এ অঞ্চলের শান্তি ও স্থিতিশীলতা বিঘ্নিত করতে পারে।

শনিবার (২৮ মে) শুরু হওয়া দুই দিনের একটি সম্মেলনে আসামের রাজধানী গুয়াহাটিতে বাংলাদেশ ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা একত্র হয়েছেন। সরকারি পর্যায়ের না হলেও ভারতের একাধিক রাজ্যের সরকারি প্রতিনিধি, মন্ত্রী, কেন্দ্র সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারাও যোগ দিয়েছেন সম্মেলনে। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করসহ দক্ষিণ এশিয়া, মিয়ানমারসহ দক্ষিণ-পূর্ব ও দক্ষিণ এশিয়ার অন্তত ১২টি দেশের প্রতিনিধি, রাষ্ট্রদূত ও মন্ত্রীর উপস্থিতিতে তিনি এসব কথা বলেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী  বলেন, দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরে বাংলাদেশ মিয়ানমারের নাগরিকদের বাসস্থান ও খাদ্য দিয়ে চলেছে; তাঁদের আশ্রয় সুরক্ষিত করছে। কিন্তু এটা বরাবরের জন্য চলতে পারে না। এটা একটা ক্ষণস্থায়ী ব্যবস্থা। তাঁদের ফেরত পাঠানোর কাজ এখনো শুরু হয়নি। ইতিমধ্যে কিছু অঞ্চলে, যেখানে তাঁরা রয়েছেন, সেখানে অপরাধ ও উগ্রবাদ বাড়ছে। আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তাব্যবস্থাকে এ থেকে মুক্ত রাখতে হবে। মিয়ানমারের নাগরিকদের এখনই তাঁদের নিজেদের দেশে ফেরত পাঠানো প্রয়োজন। কারণ, তাঁরা নিজেদের দেশে ফেরার জন্য উদগ্রীব হয়ে রয়েছেন। এ লক্ষ্যে এ অঞ্চলের সব দেশের সহায়তা চান তিনি।

দুই দিনের এই সম্মেলনের মূল বিষয় নদী ও পানি। সেই সূত্রেই পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, স্থলপথের উন্নয়নের আগেই জলপথে সভ্যতার বিকাশ হয়েছে এবং এক দেশ আরেক দেশের বন্ধুরাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। জলপথের এ বিকাশ ভবিষ্যতে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সঙ্গে দক্ষিণ এশিয়ার যোগাযোগ স্থাপনে আরও বড় ভূমিকা পালন করবে। যার মধ্যে নদীতে পলি জমার সমস্যা উল্লেখযোগ্য। এই সমস্যা সবার এবং এর সমাধানে প্রযুক্তিগত ও অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। কারণ, কম খরচে এটা করা যায় না। এর জন্য এ অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে সহায়তা জরুরি। বন্যা মোকাবিলা, উষ্ণায়নের কারণে সমুদ্রের পানির উচ্চতা বৃদ্ধি, লবণাক্ত পানি চাষের জমিতে ঢুকে পড়ার মতো দক্ষিণ এশিয়ার দৈনন্দিন সমস্যার উল্লেখ করে এসব ক্ষেত্রে আঞ্চলিক সহযোগিতা প্রয়োজন।

অধিবেশনে বক্তা হিসেবে দিল্লিতে মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত কিয়ান অংয়ের নামও রয়েছে। সম্মেলনে অংশ নেবেন বেশ কয়েকটি দেশের নদী বিশেষজ্ঞ ও নীতিনির্ধারকেরাও। এই দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে জাপান, সিঙ্গাপুর, কম্বোডিয়া, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, ব্রুনেই, থাইল্যান্ড, নেপাল, ভুটান ও মিয়ানমার। সম্মেলনে বক্তব্য দেন, ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর, আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা, ভারতে বাংলাদেশের হাইকমিশনার মোহাম্মদ ইমরান এবং বাংলাদেশে ভারতের হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী। বক্তব্য দেবেন বাংলাদেশের নদী বিশেষজ্ঞ আইনুন নিশাতসহ এ অঞ্চলের একাধিক নদী বিশেষজ্ঞ। শেষ অধিবেশনের প্রধান বক্তা ভারতের অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ। ভারতে গঙ্গা অনেকগুলো রাজ্যের মধ্য দিয়ে গেছে। এর মধ্যে বিশাল রাজ্য উত্তর প্রদেশ, বিহার ও পশ্চিমবঙ্গও রয়েছে। রাজ্যগুলোর কোনো সরকারি প্রতিনিধির নাম বক্তাদের তালিকায় নেই। সম্মেলনের নাম ‘নদী’ (ন্যাচারাল অ্যালাইজ ইন ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড ইন্টারডিপেন্ডেনস)। এশিয়ান কনফ্লুয়েন্স এটির আয়োজক। বঙ্গোপসাগর ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বিভিন্ন স্তরে নদীকেন্দ্রিক সহযোগিতা গড়ে তোলাই এ সম্মেলনের লক্ষ্য বলে জানায় সংস্থাটি।