‘তোমরা আসো কিন্তু আমার বাবা তো ফিরে আসে না’

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, যখন ইলিয়াস আলী গুম হয়ে যায় তখন আমি তার বাসায় গিয়েছিলাম, তার ছোট মেয়ের বয়স ছিল তখন ৬ বছরের মতো। সে শূন্য একটা দৃষ্টি নিয়ে আমাদের দিকে তাকিয়ে ছিল। প্রায় প্রত্যেক বছরই আমি তার স্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে তাদের বাসায় যাই। এখন দেখা করতে গেলে তার মেয়ে আমাদের সামনে আসে না, অনেক কষ্ট নিয়ে আসে না। বলে, ‘তোমরা আসো কিন্তু আমার বাবা তো ফিরে আসে না’। নিখোঁজ বিএনপির নেতা ইলিয়াস আলীর মেয়ে এখন আমাদের সামনে আসে না, অনেক কষ্ট নিয়ে আসে না। 

আজ (১৮ এপ্রিল) সোমবার দুপুরে রাজধানীর একটি হোটেলে বিএনপি আয়োজিত ‘ইলিয়াস আলীসহ সব গুমের শিকার ব্যক্তিদের ফিরিয়ে দাও’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।  ইলিয়াস আলীর নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার ১০ বছর পূর্ণ হয়েছে আজ। ২০১২ সালের ১৭ এপ্রিল রাজধানীর বনানী থেকে বিএনপির এই নেতা নিখোঁজ হন। আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আব্দুল মঈন খান, রেজা কিবরিয়া প্রমুখ।

মির্জা ফখরুল বলেন, গুম হয়ে যাওয়া প্রায় প্রত্যেকটি পরিবারের একই অবস্থা। আমার উত্তরার বাসার পাশেই দক্ষিণখান। সেখানে একজন মহিলা আছেন, তার ছেলে মুন্না গুম হয়ে গেছে। বাবা এক বছর বিভিন্ন জায়গায় ছেলেকে খুজঁতে-খুজঁতে মারা গেছেন। আর মা এখন অসহায় অবস্থায় আছেন। তার ঘর ভাড়াও থাকে না। আমরা চেষ্টা করি অত্যন্ত সীমিতভাবে তাদের পাশে থাকার জন্য। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান প্রতিটি পরিবারের খবর রাখেন। আমাদের মানবাধিকার সেল চেষ্টা করে গুমের বিষয়টিকে আন্তর্জাতিকভাবে কাজ করার জন্য। তারা সফলও হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, ‘গুম-খুনের সঙ্গে জড়িত আওয়ামী লীগের একটি মাত্র উদ্দেশ্য, চিরদিন ক্ষমতায় থাকা’। আমাদের বারবার মনে হয়েছে- এটা তাদের পুরানো অভিলাষ যে যতদিন বাংলাদেশ থাকবে ততদিন আমরা ক্ষমতায় থাকবো। ৭৫ সালেও তারা বাকশাল করে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে। কিন্তু টিকতে পারেনি। এখন কৌশলটা বদলে দিয়ে ভিন্ন আঙ্গিকে আবারও একদলীয় শাসন ব্যবস্থা করার চেষ্টা করছে। এখানে যারা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে তাদের তারা নিশ্চিহ্ন করে দিচ্ছে।