| |
               

মূল পাতা স্বাস্থ্য ৪০ শতাংশ ডায়রিয়া রোগীই তীব্র পানিশূন্যতা নিয়ে আসছে


৪০ শতাংশ ডায়রিয়া রোগীই তীব্র পানিশূন্যতা নিয়ে আসছে


স্বাস্থ্য ডেস্ক     14 April, 2022     04:54 PM    


মধ্যরাত থেকে আজ বেলা ১১টা পর্যন্ত হাসপাতালে ৪৪৪ জন ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়েছেন। আজ বেলা সাড়ে এগারোটার দিকে রাজধানীর মহাখালীর আইসিডিডিআর’বি হাসপাতালে সরেজমিনে গিয়ে এসব তথ্য জানা গেছে। এর আগের দিন (১৩ এপ্রিল) মোট এক হাজার ২০ জন, ১২ এপ্রিল মোট এক হাজার ১০৩ জন, ১১ এপ্রিল মোট এক হাজার ১৫৪ জন ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী হাসপাতালটিতে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা সেবা নিয়েছেন। রাজধানীর পার্শ্ববর্তী জেলাগুলো থেকে আইসিডিডিআর’বিতে নিয়ে আসার সময় ২০ জন রোগী প্রাণ হারিয়েছেন, যদিও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, এই বছর ডায়রিয়া প্রকোপে চার জনের মৃত্যু হয়েছে। এ অবস্থায় ডায়রিয়া আক্রান্ত ঝুঁকিপূর্ণ কোনো রোগীকে দূরবর্তী স্থান থেকে আইসিডিডিআর’বিতে না আনার পরামর্শ দিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

আইসিডিডিআর’বির অ্যাসিস্ট্যান্ট সায়েন্টিস্ট ডা. শোয়েব বিন ইসলাম বলেন, এবারের ডায়রিয়া প্রকোপে লক্ষণীয় বিষয় হলো, রোগীদের ৩০-৪০ শতাংশই তীব্র পানিশূন্যতা নিয়ে আসছে। এই পানিশূন্যতাকে যদি আমরা বয়স অনুপাতে ভাগ করি, সেখানে প্রাপ্ত বয়স্কদের সংখ্যাটাই বেশি। তবে অনেক শিশু আসছে তীব্র পানিশূন্যতা নিয়ে। এখানে যে রোগীরা আসছেন, তাদের মধ্যে প্রাপ্তবয়স্কদের সংখ্যা বেশি। তবে শিশুদের সংখ্যাও কম নয়। শতকরা হিসাবে দেখা যাবে, ৬০ থেকে ৬৫ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক আর বাকি ৪০ থেকে ৩৫ শতাংশ শিশু। আমাদের হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা এখনো আগের মতোই আছে। যদিও দৈনিক রোগী ভর্তির সংখ্যা কিছুটা কমেছে। কিছুদিন আগেই দৈনিক রোগী ভর্তি ১৩শ থেকে ১৪শ হয়ে গিয়েছিল। এখন সেই তুলনায় এখন কিছুটা কমে এসেছে। হাজারের নিচে আসেনি।গত এক মাসে আইসিডিডিআর’বি হাসপাতালে ৪৫ হাজারের অধিক রোগী চিকিৎসা সেবা নিয়েছেন। যেখানে আমাদের হাসপাতালের ধারণক্ষমতা হলো সাড়ে তিনশ শয্যা, সেখানে এত রোগীর চাপ সামলানো আমাদের জন্য অনেকটাই কষ্টসাধ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। তারপরও রোগীদের স্বার্থে নির্ধারিত কর্মঘণ্টার বাইরে গিয়েও আমাদের অতিরিক্ত সময় কাজ করতে হচ্ছে। প্রথমত আমরা অতিরিক্ত একটি তাঁবু, পরে দ্বিতীয় তাঁবু স্থাপন করি। সর্বশেষ প্রথম তাঁবুটাকেও আমরা প্রায় আরও অর্ধেক বর্ধিত করি। এখন পর্যন্ত এভাবেই আমরা রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছি।

আইসিডিডিআর’বির মিডিয়া ম্যানেজার তারিফ হাসান বলেন, ডায়রিয়া আক্রান্ত সব রোগীকে এখানে না এনে প্রাথমিক অবস্থায় নিকটস্থ হাসপাতালে ভর্তি করার পরামর্শ দিচ্ছি। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকজন গুরুতর রোগী এ হাসপাতালে আসার পথেই মারা গেছেন। ঢাকায় যানজটের অবস্থা ভয়ানক। ফলে রোগীদের হাসপাতালে পৌঁছাতে অনেক দেরি হয়ে যায়। নারায়ণগঞ্জ বা যাত্রাবাড়ী থেকে একজন রোগীকে নিয়ে আসতে অনেক সময় লেগে যায়। এ সময় রোগীর অবস্থার অবনতি ঘটে, মৃত্যুঝুঁকি বেড়ে যায়। অথচ এ রোগীদের যদি প্রাথমিক অবস্থায় স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হতো, তাহলে তাদের ঝুঁকি অনেকাংশেই কমে যেত। একজন ব্যক্তির যখন ডায়রিয়া হয়, তখন তার শরীর থেকে প্রচুর পানি বের হয়ে যায়। আর যখন অনেক পানি চলে যায়, তখন দেহের বিভিন্ন অঙ্গে এর প্রভাব পড়ে। বিশেষ করে হার্ট অ্যাটাক থেকে শুরু করে কিডনি বিকল, ব্রেন স্ট্রোকসহ নানা ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এজন্য আমরা প্রত্যেককেই এ বার্তা পৌঁছে দিতে চাই যে, ডায়রিয়া আক্রান্ত হলে সর্বপ্রথম নিকটস্থ হাসপাতালে যেতে হবে। এতে রোগীর প্রাণহানির ঝুঁকি কমে আসতে পারে।