| |
               

মূল পাতা শিক্ষাঙ্গন ঢাবির ভর্তির আবেদন ফি ও হলে খাবারের দাম কমানোর দাবি


ঢাবির ভর্তির আবেদন ফি ও হলে খাবারের দাম কমানোর দাবি


রহমত ডেস্ক     08 April, 2022     09:18 PM    


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়-ঢাবির আবাসিক হলগুলোতে খাবারের দাম ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির আবেদন ফি কমানোসহ চার দফা দাবি জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনগুলো।

শুক্রবার (৮ এপ্রিল) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ দাবি জানান সংগঠনের নেতারা। তাদের অন্য দাবির মধ্যে রয়েছে, প্রশাসনিক উদ্যোগে হলে হলে ডাইনিং সিস্টেম চালু করা, খাবারের দাম ও মান নিয়ন্ত্রণে মনিটরিং সেল গঠন করা। সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি রাজিব কান্তি রায়, সাধারণ সম্পাদক সুহাইল আহমেদ শুভ, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের সভাপতি শিমুল কুম্ভকার, সাধারণ সম্পাদক আদনান আজিজ চৌধুরী, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সালমান সিদ্দিকী, সাধারণ সম্পাদক প্রগতি বর্মণ তমা, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার অর্থ সম্পাদক আরমানুল হক, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সদস্য জাবির আহমেদ জুবেল, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার যুগ্ম-আহবায়ক মাহফুজ আহাম্মেদ বিবৃতিতে সই করেন।

বিবৃতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোতে ক্যান্টিনের খাবারের দাম বৃদ্ধির ঘটনাকে অযৌক্তিক, অনভিপ্রেত, শিক্ষা ও শিক্ষার্থী স্বার্থবিরোধী হিসেবে উল্লেখ করা হয়। এতে আরও বলা হয়, হল ক্যান্টিনগুলোতে কয়েক মাসের ব্যবধানে দুই দফায় খাবারের দাম বাড়ানো হলো। অথচ প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। একদিকে বন্ধ হয়ে আছে হলের ডাইনিং সিস্টেম, ক্যান্টিনগুলোতে দেওয়া হচ্ছে না কোনো ভর্তুকি, অন্যদিকে এর সঙ্গে যুক্ত হয়ে আছে ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠন কর্তৃক ক্যান্টিন থেকে চাঁদাবাজি ও ফাও খাওয়ার রীতি। প্রশাসনের দায়হীনতা আর ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠনের ‘পাওয়ার প্র্যাকটিস’— এ দুইয়ে নিষ্পেষিত হচ্ছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

ভর্তি আবেদন ফি বৃদ্ধির ‘অযৌক্তিক’ দাবি করে বিবৃতিতে নেতারা বলেন, ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার আবেদন ফি ছিল ৩৫০ টাকা। তিন শিক্ষাবর্ষের মধ্যেই ধাপে ধাপে তা এক হাজার টাকায় গিয়ে ঠেকেছে। এ ফি বৃদ্ধির যৌক্তিক কোনো কারণ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন হাজির করতে পারেনি। উল্টো প্রতিবছরই ভর্তির আবেদন থেকে প্রাপ্ত টাকা ভর্তি পরীক্ষার সাথে সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের মধ্যে ভাগ-বাটোয়ারা, নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির খবর সামনে আসে। শিক্ষার্থীদের জিম্মি করে, অযৌক্তিক উপায়ে বর্ধিত ফি হাতিয়ে অনিয়ম দুর্নীতির মহোৎসব আয়োজনে লিপ্ত হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। শিক্ষা ও ছাত্র স্বার্থবিরোধী সিদ্ধান্ত থেকে প্রশাসনকে সরে আসার দাবি জানানোর পাশাপাশি ফি বৃদ্ধিসহ শিক্ষা বাণিজ্যিকীকরণ-শিক্ষা সংকোচনের যেকোনো সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে লড়াইয়ের আহবান জানান তারা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক (সম্মান) প্রথমবর্ষে ভর্তি পরীক্ষার ফি টানা তিন বছর বাড়ানো হয়েছে। এবার এক ধাপে ৩৫০ টাকা বাড়িয়ে এক হাজার টাকা করা হয়েছে। যদিও উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, বিভাগীয় শহরে ভর্তি পরীক্ষা হওয়ার কারণে শিক্ষার্থীপ্রতি আমাদের খরচ পড়ে প্রায় সাড়ে ১৩শ টাকা। এই টাকা হলে মোটামুটি সংকুলান হয় বলে জানিয়েছেন ভর্তি পরীক্ষার দায়িত্বে থাকা ডিনরা। ফলে এই ১০০০ টাকাও কম। যেটা সবচেয়ে ন্যূনতম সেটা আমরা রাখছি। এর মধ্যে একটা অংশ বিশ্ববিদ্যালয়ে চলে আসবে। যারা সমন্বয়কারী থাকবেন তাদের পরামর্শ দিয়েছি। যাতে তারা শিক্ষার্থীদের স্বার্থে সেক্রিফাইস করে। এমনিতেও আমাদের শিক্ষকরা সবসময় সেক্রিফাইস করেন। উনাদের পরামর্শ দিয়েছি যাতে এবার ২০০-৩০০ টাকা কম রাখেন, সামনে প্রয়োজন হলে আরও বাড়ানো হবে।

বৃহস্পতিবার (৭ এপ্রিল) বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ ভর্তি কমিটির সভায় ফি নির্ধারণ করা হয়। ১০০০ টাকার মধ্যে ভর্তি পরীক্ষার ফি ৯৫৬ টাকা ৫০ পয়সা, অনলাইন সার্ভিস চার্জ ৩০ টাকা ও ব্যাংক পেমেন্ট সার্ভিস চার্জ ১৩ টাকা ৫০ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে। চারটি রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকের (সোনালী, অগ্রণী, জনতা ও রূপালী) যেকোনো শাখায় ফি জমা দেওয়া যাবে। ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষ পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার আবেদন ফি ছিল ৩৫০ টাকা। ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে ১০০ টাকা বাড়িয়ে তা করা হয় ৪৫০ টাকা। এরপর ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে আরও ২০০ টাকা বাড়িয়ে করা হয় ৬৫০ টাকা। এবার ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে ফি আরও ৩৫০ টাকা বাড়িয়ে এক হাজার টাকা করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

ফি বাড়ানোর বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলছে, বিভাগীয় শহরে ভর্তি পরীক্ষা হওয়ার কারণে গত বছরের ফিতে খরচ সংকুলান হয়নি, বরং বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে ভর্তুকি দিতে হয়েছে। এছাড়া পরিবহনসহ সবকিছুর দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। সেকারণে ‘ন্যূনতম’ ফি বাড়ানো হয়েছে। বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আব্দুস সামাদ বলেন, বিভাগীয় শহরে ভর্তি পরীক্ষা নিতে গিয়ে খরচের পরিমাণটা অনেক বেশি হয়ে গেছে। পরে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভর্তুকি দিতে হয়েছে। তাই এবার ৬৫০ থেকে ১০০০ টাকা করা হয়েছে। এর মধ্যে আবার অনলাইন ফি আছে, ব্যাংকের চার্জ আছে। সবকিছু বিবেচনা করে মিনিমামটাই নির্ধারণ করা হয়েছে।