মূল পাতা শিক্ষাঙ্গন নামাজ পড়তে ডাকা নিয়ে বিতর্ক, ছুরিকাঘাতে আহত রাবি শিক্ষার্থী
রহমত ডেস্ক 10 March, 2022 03:53 PM
নামাজ পড়তে ডাকলে না যাওয়া ও রুমের সামনে উচ্চস্বরে কথা বলা নিয়ে সংঘর্ষে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়-রাবির পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের এক শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়েছেন। আহত শিক্ষার্থী সাফায়ার নাইম নাফি রাবির পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের ১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের মতিহার হলের আবাসিক শিক্ষার্থী। তার গ্রামের বাড়ি টাঙ্গাইল জেলায়। আহত শিক্ষার্থী সাফায়ার নাইম নাফিকে প্রথমে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৪ নং ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য বৃহস্পতিবার (১০ মার্চ) সকাল ১০টার দিকে তাকে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে নেওয়ার উদ্দেশে পাঠায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বুধবার (৯ মার্চ) রাত সাড়ে ১০টার দিকে নগরীর ধরমপুর এলাকায় এন আর ছাত্রাবাসে এ ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিশ্চিত করে মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার আলী তুহিন বলেন,আমরা এখনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ না পাওয়া পর্যন্ত আমরা কিছু করতে পারব না।
পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের কয়েকজন শিক্ষার্থী ও ছাত্রাবাস সূত্রে জানা গেছে, এন আর ছাত্রাবাসে থাকতেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী শরিফুল ইসলাম। সেখানে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছেন এমন কয়েকজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে রুমের সামনে উচ্চস্বরে কথা বলা, নামাজে ডাকা নিয়ে আগে থেকে তর্কবিতর্ক হয়েছিল শরিফুলের। পরে বুধবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কর্মী ফরিদুল ইসলামের নেতৃত্বে পদার্থবিজ্ঞান ও অন্যান্য বিভাগের ১৩ থেকে ১৪ জন শিক্ষার্থী মীমাংসা করতে এন আর ছাত্রাবাসে যান। আলোচনার এক পর্যায়ে ছাত্রাবাসটির অন্যান্য বোর্ডার ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা সমাধানের পর্যায়ে আসেন। কিন্তু রুমের মধ্যে স্থান সংকুলান না হওয়ায় ভুক্তভোগী নাফিসহ কয়েকজন ছাত্রাবাসের ফটকে দাঁড়ান। এ সময় কিছু বুঝে ওঠার আগেই বহিরাগত ৫ থেকে ৭ জন এসে তাদের ওপর হামলা করে। তারা ছুরি দিয়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করতে থাকেন দাঁড়িয়ে থাকা নাফিসহ শিক্ষার্থীদের। এতে সংঘর্ষ বেধে যায় সবার। এদিকে আহত নাফিকে রাবি হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে পরবর্তী সময়ে রাজশাহী মেডিকেলে নিয়ে যান শিক্ষার্থীরা।
পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগকর্মী ফরিদুল ইসলাম বলেন, আমাদের মারামারি করার কোনো ইচ্ছেই ছিল না। শরীফের পরীক্ষা কিন্তু জুনিয়র ছেলেটা রুমের সামনে এসে উচ্চস্বরে কথা বলত। এটা নিয়ে আগে মেসের বড় ভাইদের বলে কোনো সমাধান না হওয়ায় সেখানে গিয়ে তাকে দিয়ে স্যরি বলাই। হঠাৎ কয়েকজন বাইরে থেকে এসে ‘এদের (রাবি শিক্ষার্থীদের) আটকা, বাইর হইতে দিস না’ বলেই আমাদের ওপর হামলা করে। এ সময় নাফিসহ কয়েকজন রুমের বাইরে ছিল। তবে হামলাকারীদের শিক্ষার্থী মনে হয়নি।
প্রক্টর অধ্যাপক ড. আসাবুল হক বলেন, আহত শিক্ষার্থীকে (নাফিকে) উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। চলাফেরা নিয়ে সিনিয়র-জুনিয়রদের মধ্যে কথা-কাটাকাটি থেকে ঘটনার সূত্রপাত। আমি আর ছাত্র উপদেষ্টা ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। পুলিশ প্রশাসন দুর্বৃত্তদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা করছে। আহত শিক্ষার্থীদের উন্নত চিকিৎসা দেওয়ার ব্যবস্থা করেছি।