| |
               

মূল পাতা জাতীয় বাংলা ভাষা ও জয় বাংলা আমাদের সংস্কৃতি : পরিকল্পনামন্ত্রী


বাংলা ভাষা ও জয় বাংলা আমাদের সংস্কৃতি : পরিকল্পনামন্ত্রী


রহমত ডেস্ক     01 March, 2022     07:32 PM    


সর্বস্তরে বাংলা ব্যবহারে গুরুত্বারোপ করে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, কেন শুধু ইংরেজিকে প্রাধান্য দিতে হবে? ইংরেজি ভাষায় কথা না বলেও পাহাড়-সমুদ্রসহ পৃথিবীর সবকিছু জয় করছে চীন-রাশিয়া। কেউ আমাদের মাথায় ঢুকিয়ে দিয়েছে ইংরেজি ছাড়া চলে না। বাংলা ভাষা ও জয় বাংলা আমাদের সংস্কৃতি। জয় বাংলা ও জয় বঙ্গবন্ধু বলতে হবে।

আজ (১ মার্চ) মঙ্গলবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ, সেভ দ্য চিলড্রেন ইন বাংলাদেশ, অপরাজেয় বাংলাদেশ এবং ইয়েস বাংলাদেশ আয়োজিত ‘ডিজিটাল বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা ও শিশু সুরক্ষা’ শীর্ষক  ২০তম চাইল্ড পার্লামেন্ট অধিবেশন শেষে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। চাইল্ড পার্লামেন্ট-এনসিটিএফ স্পিকার মরিয়ম আক্তার জ্বীম সভাপতিত্ব করেন।

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, বাল্যবিয়ে রোধসহ শিশু অধিকার রক্ষায় সুনির্দিষ্ট আইন প্রয়োগের পাশাপাশি বেশি প্রয়োজন সকলের সচেতনতা ও সাহস। সাহস করে এসব কুপ্রথার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। দেশে মাথাপিছু আয় বাড়লে বাল্যবিয়ে কমবে। নানা কারণে বাল্যবিয়ে হয়। বাবা হয়তো মেয়েকে খেতে দিতে পারেন না। তার আয় কম। তখন বালিকা কন্যার বিয়ে দিয়ে তিনি দায়মুক্তি পেতে চান। তাই আমাদের আয় বাড়লে বাল্যবিয়ে কমবে। বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে আমাদের সোচ্চার হতে হবে। পৃথিবীর অনেক দেশেই বাল্যবিয়ে হয়েছে। অনেক দেশ এটা কমিয়ে এনেছে। এখনো আমাদের শহর ও গ্রামে চুপিসারে বাল্যবিয়ে হচ্ছে। এটার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে হবে। অনেক প্রতিবাদ দেখি, শিশু বিবাহ হলে শিশু নিজেই রুখে দাঁড়ায়। আমি তাদের স্যালুট জানাই। মাঠ প্রশাসনও শিশু বিবাহ রুখতে কাজ করছে।

শিশু সংসদ সদস্যদের প্রশ্ন-উত্তর পর্বে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, সাইবার অপরাধ সর্ম্পকে আইন আছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা ও শিশু সুরক্ষার বিষয়ে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। অধিবেশনে করোনা মহামারিতে অনলাইন শিক্ষা ব্যবস্থায় ক্ষতিগ্রস্ত কম আয়ের পরিবারের পিছিয়ে পড়া শিশুদের জন্য সহজলভ্য ও সুলভমূল্যে ইন্টারনেট এবং ডিজিটাল ডিভাইস নিশ্চিত করার আহ্বান জানায় শিশুরা।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকার এই সমস্যা সমাধানে নিম্নআয়ের মানুষের আয় বৃদ্ধিতে কাজ করে চলেছে। ডিজিটাল লিটারেসি বৃদ্ধিতেও কাজ করে যাচ্ছে বাংলাদেশ সরকার। আমাদের সমাজে অনেকে আছেন যাদের মাসিক গড় আয় ৫ হাজার টাকা। আবার অনেকে আছেন যাদের গড় আয় ৫ কোটি টাকা। আমরা ফাইভ-জি নিয়ে কাজ করছি। ইতোমধ্যেই এই বিষয়ে প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। তবে দেশে এখনো অনেকে টু-জি ইন্টারনেট ব্যবহার করেন। আমরা সকলকে নিয়েই সামনে এগিয়ে যাব।

সারা বাংলাদেশ থেকে ৬৪টি জেলার ১২৮ জন ”চাইল্ড পার্লামেন্ট” শিশু সংসদ সদস্যরা এ অধিবেশনে অংশগ্রহন করেন। অধিবেশনে চাইল্ড পার্লামেন্ট সদস্যরা “ডিজিটাল বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা এবং শিশু সুরক্ষা” বিষয়ের উপর মন্ত্রীর নিকট বিভিন্ন সুপারিশ তুলে ধরেন। অনুষ্ঠানে সাংসদীয় বক্তব্যে শিশুরা প্রান্তিক অঞ্চলে উচ্চ গতির ইন্টারনেট ব্যবস্থা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান। তাদের সুপারিশ, আইসিটিতে পড়াশোনার সুযোগ বৃদ্ধির পাশাপাশি শিশুবান্ধব অনলাইন প্ল্যাটফর্ম সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পাঠ্যপুস্তকে প্রয়োজনীয় সংযুক্তি ও গণসচেতনতা বৃদ্ধি জরুরি। এবারের ”চাইল্ড পার্লামেন্ট” অধিবেশনে মূল আলোচনার প্রতিপাদ্য বিষয় ছিলো ”ডিজিটাল বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা এবং শিশু সুরক্ষা। ন্যাশনাল চিলড্রেন’স টাস্কফোর্স (এনসিটিএফ) এর এডভোকেসি উইং-চাইল্ড পার্লামেন্ট এ পর্যন্ত মোট ১৯টি অধিবেশন সফলভাবে সম্পন্ন করেছে। ৮৬০ জন শিশুকে নিয়ে একটি জরিপ পরিচালনা করা হয় যার মাধ্যমে ডিজিটাল বাংলাদেশের অগ্রযাত্রায় বিশেষ অঞ্চলের শিশুদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন, শিশুদের মধ্যে ডিজিটাল মাধ্যমের প্রবণতা, শিশু সুরক্ষা এবং সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সরকারের কর্মসূচি এবং উদ্যোগের বিষয়গুলি তুলে ধরা হয়। এছাড়াও “চাইল্ড পার্লামেন্ট” অধিবেশনে ১৬টি বিশেষ অঞ্চল থেকে ৩২ (১৮ জন মেয়ে ও ১৩ জন ছেলে) অংশগ্রহণ করে।

তারা জানান, মিডিয়া মনিটরিং ও জাতীয় পত্রিকার শিশু বিষয়ক পরিস্থিতির রিপোর্ট অনুযায়ী করোনাকালীন সময়ে শিশুর প্রতি সহিসংতা আরো বেড়েছে। এ সময়ে সর্বমোট ৫৪৮ জন শিশু বিভিন্ন প্রকার নির্যাতনের শিকার হয়েছে। ২০২১ সালে জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত সাত মাসে শিশুর প্রতি নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে ১ হাজার ১৯৯টি।