| |
               

মূল পাতা সম্পাদকীয় শতভাগ ইভিএম নির্ভর নির্বাচন : শুভদিনের স্বপ্ন দেখায়


শতভাগ ইভিএম নির্ভর নির্বাচন : শুভদিনের স্বপ্ন দেখায়


সৈয়দ শামছুল হুদা     18 January, 2022     12:58 PM    


১৬তারিখের নাসিক নির্বাচন, ১৭তারিখে মহামান্য রাষ্ট্রপতির সাথে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাত, নারায়ণগঞ্জের মতো আগামী সংসদ নির্বাচনেও নাসিকের মতো চমৎকার হবে বলে তথ্যমন্ত্রীর ঘোষণা, সবকিছু মিলে মনে হচ্ছে সুন্দর ও নিখুঁত ছক আকা সম্পন্ন। ইসলামীদলগুলোকে নিজেদের পায়ে দাঁড়ানোর জন্য সরকারী প্রেরণা, উৎসাহ, স্বতন্ত্র ধারায় কাজ করে যাওয়ার ক্ষেত্রে সব ধরনের সহযোগিতা দান ও  প্রতিবন্ধকতা সরিয়ে রাখার মধ্যে আছে সুগভীর কেরেশমা। ইসলামী দলগুলো খুব খুশি। তারা এবার নিজেদের জানান দিতে পেরেছে। আর দু‘’তিনটা নির্বাচন গেলেই ইনশাআল্লাহ ক্ষমতার কেন্দ্রে তারা চ্যালেঞ্জ ছুঁড়তে পারবে সে আশা গতকাল অনেকেই ব্যক্ত করেছেন। এগুলো আশার কথা। 

বর্তমান সরকারের প্রধান টার্গেট বিগত দিনের চারদলীয় জোট। এরা যেন কোন ভাবেই মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে, বাকী সব কিছুই করা যাবে এমনটাই পরিবেশ বলছে। কয়েকটি ইসলামী দলকে ইউপি নির্বাচনে সরকার সুযোগ দিয়েছে। তারাও এই সরকারের অধীনে এবং সুনিয়ন্ত্রনে নির্বাচনে আসলে কিছু সুবিধা তাদেরকেও দেওয়া হবে সেটা ইউপি নির্বাচনে প্রমাণিত হয়েছে। সরকারের প্রধান চাওয়া হলো, সবকিছু তাদের অধীনে, নিয়ন্ত্রনে হবে। থাকবে। তারপর খাজা-বাবারা তোমরা যা পারো করো, তাতে সরকারের কোন সমস্যা নেই। হাতপাখা, খেজুর গাছের দুতিন জন চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। আমরা মহাখুশি হয়েছি। বাহ! দারুন তো। এভাবে চলতে থাকলেতো আগামীতে আমরা ভালোই করবো। 

উদাহরণত: বিশেষ আলোচিত ইউপি নির্বাচন বগুড়ার দোপচাপিয়া থানার গুনাহার ইউপি নির্বাচনের কথা বলতে চাই। সোস্যাল মিডিয়ার খুব পরিচিত মুখ নূর মুহাম্মদ ভাই ঐ ইউপি থেকে প্রায় ১২হাজার ভোটের বেশি ব্যবধানে নির্বাচিত হয়েছেন। এখানে একটি বিষয় খুব গুরুত্ব সহকারে লক্ষ্যণীয়। প্রার্থী নিজেই বিজয়ের দিন বলেছেন, তার বিরুদ্ধে অত্র ইউনিয়নের প্রতিদ্বন্ধি নেতারা অসংখ্য মামলা রেডি করে রেখেছিলেন। তাকে প্রতি পদে পদে আটকাবার প্ল্যান তৈরি করে রাখা হয়েছিল। কিন্তু উপরের নির্দেশে সেসব মামলা সক্রিয় হয়নি। তাঁর নির্বাচনী প্রচার কার্যে সরকার বাধার সৃষ্টি করেনি। অনেকেই হয়তো বলবেন, সেটা প্রার্থীর চৌকসতাকে প্রমাণ করে। আমি মনে করি, সেটাও সরকারের গেইম ছিল। জামায়াতের প্রায় সকল প্রার্থীই এমন চৌকস। কিন্তু তাদেরকে সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না। আলোচিত প্রার্থীকে নির্বাচন করে বিজয়ী হতে  সুযোগ দেওয়া হয়েছে। কারণ, এর মাধ্যমে মূলত: সরকারের বিজয় হয়েছে, যেমনটা হযেছে নাসিক নির্বাচনে। 

আমার কাছে মনে হয়েছে, নাসিক নির্বাচনে সরকার শুধু একজন প্রার্থীকে বিজয়ী করেনি, তারা গোটা দলকে বিজয়ী করেছে। অনেক বিষয় তারা অর্জন করে নিয়েছে। বিশেষ করে শতভাগ ইভিএম নির্ভর নির্বাচনে আইভির এ বিজয়ে সরকারের কনফিডেন্স বেড়েছে। আগামি দিনে কী কৌশলে কাজ করলে তারা শতভাগ সফলতা পাবে সে ব্যাপারে নারায়ণগঞ্জকে পরীক্ষাগার হিসেবে নিয়েছে। প্রেসিডেন্টের সাথে সাক্ষাতের সময় তাদের সে বিষয়টি মাথায় ছিল বলে মনে হচ্ছে। ইভিএম পরীক্ষায় সফলতা এতটা হবে কেউ কল্পনা করেছে বলেও মনে হয় না। 

গতকাল একজন বিশিষ্ট আলোচক হাফেজ মাওলানা যুবায়ের আহমদ এক স্টেটাসে লিখেছেন, মাহফিল বন্ধ করার ইচ্ছে অনেকেরই আছে। কিন্তু এত সহজে বাংলাদেশে সব মাহফিল বন্ধ করা যাবে সেটা মনে হয় তাদের ভাবনাতেও ছিল না। দেশের সবকিছুই যখন চলমান, তখন শুধূ মাহফিলটাই বন্ধ। কোথাও থেকে কোন অনুমতি পাওয়া যায় না। এমনিভাবেই নাসিক নির্বাচনে ইভিএমে সফলতা আসবে, ধারনায় ছিল, কিন্তু এতটা সফলতা আসবে সেটা মনে হয় লীগ সরকারও ভাবেনি। ইভিএম জিন্দাবাদ। যত টাকাই লাগুক, সরকার আগামীতে  শতভাগ ইভিএম নির্ভর নির্বাচনে যাবে এবং এটাতে যেতে সবাইকে বাধ্য করবে। যেহেতু সরকার অনেক ইসলামী দলকে ইতিমধ্যেই তৈরি করে ফেলেছে, এবং আরো কিছু দল নিজেদের পায়ে দাঁড়াবার মিষ্টিমার্কা শর্তে মুক্তির প্রতীক্ষায় তারাও অচিরে মুক্তি পেয়ে সরকারের বিরুদ্ধে তুমুল ঝড় তুলে ইভিএম নির্ভর নির্বাচনে যাবে, আর কিছু আসন পেয়ে পরবর্তী দিনে বিপুল বিজয়ের স্বপ্ন দেখাবে বাংলাদেশের বোকা মুসলিম সমাজকে। 

বিএনপি এবং জামায়াতকে নির্বাচনে যতটুকু সম্ভব সুযোগ কম দিয়ে অন্য দলগুলোকে নির্বাচনে ফোকাস করার সুযোগ দেওয়া হবে। ফলে বিদেশিদের সামনে নির্বাচনে কারচুপির সকল অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণ করা যাবে। নির্বাচনে কোন প্রকার গন্ডগোল করারও আর প্রয়োজন থাকবে না। নারায়ণগঞ্জের মতো সুষ্ঠু ও ঝামেলামুক্ত নির্বাচন আগামি দিনে দেশবাসি দেখতে পাবে। আমরা গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ইভিএম নির্ভর নির্বাচনী জিহাদে বিজয় লাভের স্বপ্নে অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় থাকলাম। জয় ইভিএম, জয় নাসিক।