কানাডায় মুসলিম পরিবারকে গাড়িচাপা সন্ত্রাসী হামলা : ইমরান খান

কানাডায় পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত মুসলিম পরিবারের চার সদস্যকে গাড়িচাপা দিয়ে হত্যার ঘটনাকে জঘন্য সন্ত্রাসী হামলা বলে আখ্যায়িত করেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান।

এক টুইটবার্তায় নিরপরাধ ওই মুসলিম পরিবারটির ওপর গাড়ি তুলে দেওয়ার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়ে এটিকে ইসলামবিদ্বেষী হামলা বলে মন্তব্য করেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী।

এ ঘটনায় ইতোমধ্যে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, এই জঘন্য ও নারকীয় ঘটনায় আমরা হতভম্ব, শোকস্তব্ধ। এ ধরনের জাতিবিদ্বেষ ও হিংসা এ দেশে কোনোভাবেই বরদাশত করা হবে না।

এর আগে,  গত রোববার (৬ জুন) কানাডায় মুসলিমবিদ্বেষের শিকার হয়ে ওই পরিবারের ৪ সদস্যকে গাড়িচাপা দিয়ে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে এক চালক। ওই হত্যাকারীর নাম নাথানিয়েল ভেল্টম্যান। তার বয়স ২০ বছর। তাকে ইতোমধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে।

জানা যায়, গত রোববার সন্ধ্যায় টরোন্টো থেকে ১২৪ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমের শহর লন্ডনে রাস্তা পারাপারের জন্য অপেক্ষা করার সময় তারা এই হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়। হামলাকারী চালক তার গাড়িটি অপেক্ষমাণ পরিবারটির ওপর উঠিয়ে দেয়।

পুলিশ জানায়, নিহতদের মধ্যে রয়েছেন ৭৭ ও ৪৪ বছর বয়স্কা দুই নারী, ৪৬ বছর বয়স্ক এক পুরুষ ও ১৫ বছর বয়স্কা এক কিশোরী। এছাড়া ৯ বছর বয়সী এক বালক মারাত্মকভাবে আহত হয়েছে। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। কর্তৃপক্ষ তাদের পরিচয় প্রকাশ করেনি।

এরপরই প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো টুইট করে জানান, ‘আমি লন্ডন এবং দেশের সব মুসলিমকে জানাচ্ছি, আমরা আপনাদের পাশে আছি। আমাদের দেশে ইসলামোফোবিয়ার কোনো স্থান নেই। এবং এই ধরনের ঘটনা অবিলম্বে বন্ধ হওয়া উচিত।’

শহরের পুলিশ প্রধান স্টিভ উইলিয়ামস জানিয়েছেন, ‘আমাদের বিশ্বাস, ২০ বছর বয়সী গাড়িচালক ইচ্ছে করেই এই কাজ করেছে। আমাদের বিশ্বাস, এই পরিবারকে সে টার্গেট করেছিল, কারণ তারা মুসলিম। এটা হেট ক্রাইম।’

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গাড়িটি রাস্তার অন্যদিক থেকে আসে এবং হাঁটার জন্য নির্ধারিত জায়গায় গিয়ে পরিবারের মানুষদের ধাক্কা মারে। চালককে কাছের একটি শপিং মলের পার্কিং থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তার বিরুদ্ধে হত্যা ও হত্যার চেষ্টার অভিযোগ আনা হয়েছে।

ওই পরিবারের বন্ধু জাহিদ খান সূত্রে জানা গেছে, পরিবারটি ১৪ বছর আগে পাকিস্তান থেকে এসেছিল। স্থানীয় মসজিদে নিয়মিত তাদের যাতায়াত ছিল। প্রতিদিনই তারা রাতে হাঁটতে যেতেন। রোববারেও গেছিলেন।

শহরের মেয়র জানিয়েছেন, মুসলিম-বিদ্বেষের কারণেই হত্যা করা হয়েছে। শহরের চার লাখ বাসিন্দার মধ্যে প্রায় ৪০ হাজার মুসলিম। এই ঘটনার জন্য শহরের পতাকা তিনদিনের জন্য নামিয়ে রাখা হবে।

/জেআর/